প্রাপ্তমনস্কদের পত্রিকা

মননশীল কলমকে উৎসাহ দিতে... পড়ুন, পড়ান, আপনার মূল্যবান মতামত দিন।

প্রথম ভালবাসা | অমল চ্যাটার্জী

বাতায়ন/ মাসিক / ছোটগল্প /২য় বর্ষ/২ ৮ তম সংখ্যা/ ২রা ফাল্গুন,   ১৪৩১ অমরেন্দ্র চক্রবর্তী সংখ্যা | ছোটগল্প অমল চ্যাটার্জী   প্রথম ভালবাসা ...

Friday, December 13, 2024

ক-বাবুর উপাখ্যান | অভীক মুখার্জী

বাতায়ন/মাসিক/গল্পাণু/২য় বর্ষ/২২তম সংখ্যা/২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১

মোহন রায়হান সংখ্যা | গল্পাণু

অভীক মুখার্জী

-বাবুর উপাখ্যান


"পরের ঘটনাগুলো ক-বাবু ঠিক ঠাওর করতে পারলেন না। এত মুখঝামটার পরেও স্ত্রীর মুখটা কেমন যেন হাসিহাসি লাগল। পাশে মেয়ের মুখটাও যেন দেখতে পেলেন একবার। মুখের তেতোভাবটা উধাওমনটাও কেমন যেন হালকা লাগল। বলতে চাইলেন"


সকাল থেকেই ক-বাবুর মেজাজটা খিঁচড়ে রয়েছে। কিন্তু ঠিক কী জন্য সেটাই উনি বুঝতে পারছিলেন না। এখন মাঝে মাঝেই এমনটা হয়, হয়তো বয়স হচ্ছে বলেই বোধহয়। কিন্তু উনি অবশ্য খুব একটা মাথা ঘামান না এই সব ব্যাপার নিয়ে।
 
আসল কথা বলার আগে তাই ওনার পরিচয়টা একটু দিয়ে রাখা ভাল। উনি একজন মধ্যবয়স্ক, ছাপোষা মধ্যবিত্ত নিরীহ ভদ্রলোক, সবরকমের ঝুটঝামেলা থেকে শত হস্ত দূরেই থাকতে ভালবাসেন। কিন্তু সংসারের তাগিদে কিছুটা তো... এক সদ্য যুবতীর পিতা হিসাবে ক বাবু নিজেকে যথেষ্ট দ্বায়িত্ববান মনে করলেও ওনার স্ত্রী অবশ্য ঠিক উল্টোটাই মনে করেন এবং প্রত্যেক মুহূর্তে মনে করান। আর ক-বাবু মনে করেন ভদ্রমহিলার সবকিছুতেই বাড়াবাড়ি।
 
যাই হোক, আসল কথায় আসি। একে তো সকাল থেকে মেজাজ খিঁচড়ে, তার ওপর ভরা আষাঢ়ে জ্যৈষ্ঠের গরম। মুখটা বাংলার পাঁচের মতো করে ক-বাবু বিছানায় আধবসা বা আধশোয়া হয়ে ঢুলছিলেন থুড়ি ভাবছিলেন কিছু একটা। ব্যস আর যায় কোথায়? স্ত্রীর নজরে পড়ামাত্র শুরু হয়ে গেল,
-এই তো ঘুম থেকে উঠলে, এরই মধ্যে আবার ঘুম পেয়ে গেল?
-আরে, অদ্ভুত তো, যা খুশি একটা বলে দিলেই হল নাকি!
তবু নিজেকে খুব সংযত করে নিরাসক্তভাবে উত্তর দিলেন,
-কই ঘুমোইনি তো!
-ও তাহলে আমি ভুল দেখছি!
ওনার স্ত্রীর গলা চড়ল আর এক ধাপ। নাহ্, আর ঠিক থাকতে পারলেন না ক-বাবু,
-হ্যাঁ, গরমে তোমার মাথার সঙ্গে চোখদুটোও গেছে। আজকেই পাওয়ার চেক করাও আর সঙ্গে মাথাটাও।
কথাটা পুরো শেষ করতেও পারলেন না, স্ত্রী যেন ঝাঁপিয়ে পড়লেন,
-কী! আমাকে পাগল বললে? নিজের মাথাটা দেখাও একবার, তাহলেই বোঝা যাবে পাগলটা আসলে কে? আমার সারাটাজীবন ঝরঝরে করে এখন পাগল বলছে!
 
পরের ঘটনাগুলো ক-বাবু ঠিক ঠাওর করতে পারলেন না। এত মুখঝামটার পরেও স্ত্রীর মুখটা কেমন যেন হাসিহাসি লাগল। পাশে মেয়ের মুখটাও যেন দেখতে পেলেন একবার। মুখের তেতোভাবটা উধাও, মনটাও কেমন যেন হালকা লাগল। বলতে চাইলেন,
-গরমে চোখটা একটু লেগে গেছিল আর কী
বললেনও বটে কিন্তু শুনতে পেল না কেউ।
তা যাকগে, -বাবু এখন দিব্যি আছেন। মুখে হাসি ঝুলিয়ে এখন সবসময় জেগেই থাকেন না ঢুলে। দেওয়ালের ছবি থেকে।
 

সমাপ্ত

1 comment:

মোহিনীমায়া


Popular Top 10 (Last 7 days)