বাতায়ন/রং/গদ্য/২য় বর্ষ/৩২তম সংখ্যা/২৯শে
ফাল্গুন, ১৪৩১
রং | গদ্য
শম্পা
সামন্ত
ফাগুন
হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান
"কীভাবে সূর্যের নাগাল পেলাম জানি না। কীভাবে লতাগুল্ম ছাড়িয়ে ছুটে গেলাম জানি না। সেদিনের মতো আজও লুব্ধক, কালপুরুষের অমোঘ টানে। অরণ্যের গম্বুজে, সপ্তর্ষিমণ্ডলের নীহারিকায়, মিল্কি গ্যালাক্সিতে।"
কাল এখানে যাব। রক্তে রক্তে
শিরায় শিরায় প্রবাহিত এক আরামের স্রোতের নাম শান্তিনিকেতন। বহুদূর থেকে যে বাঁশির
মন্দ্র আমাকে ডাকে। আয় চলে আয়। পাগল পারা মন আমার ভেসে যেতে ইচ্ছা করে ফাগুনের
হাওয়ায় হাওয়ায়। যেখানে আছে পূর্ণিমাসন্ধ্যা ফাগুনের রজনিগন্ধায় ডুব
দেব রূপ সাগরের অতল স্পর্শে।
রামধনু রং প্রজাপতির
পাখায় উন্মুখ বেদনা মিলিয়ে দেব। যতক্ষণ না নিজের অনুভূতিকে
মিলিয়ে দিচ্ছি সেই অজানার সুরে ততক্ষণ ক্ষান্ত হব না, ততক্ষণ শান্তি নেই আকাশে বাতাসে। যেন চেতনার সম্ভাবনায়
আছে কোন স্রোতস্বিনী বাতাস, যা আমাকে টানে, আমাকে কাঁদায়। জানি না, হয়তো এত আলোড়ন এত তোলপাড় আছে বাতাসের।
সরে যাই, আরো সরে যাই, সেই সুখের স্মৃতির
আঁচলে মাথা রাখি। আমাদের সকল লৌকিকতা সাবলীল এসে মুখ ঘষে গানপ্রিয় পাথরের কাছে।
কীভাবে সূর্যের নাগাল পেলাম
জানি না। কীভাবে লতাগুল্ম ছাড়িয়ে ছুটে গেলাম জানি না। সেদিনের মতো আজও লুব্ধক, কালপুরুষের অমোঘ টানে। অরণ্যের গম্বুজে, সপ্তর্ষিমণ্ডলের নীহারিকায়, মিল্কি গ্যালাক্সিতে। তারারা তাকিয়ে দেখে, পরিরা তাকিয়ে দেখে বিহ্বল নদীর জলে সোনালি চাঁদের
কুটিকুটি আখর। গা ভর্তি শিহরণ। চমকিত হয়ে,
মশগুল
হয়ে জেগে উঠি গ্রহণের
ক্ষতমুখে। ও আমার নিরাভরণ চাঁদের আলো! আমাকে নাও। সূর্যাস্তের তীরে, মায়ার শব্দের ঘোর। যজ্ঞের সাগ্নিক হোমানলে আমাকে নাও গো
ফাগুন। আমাকে নাও পলাশ। দান করো আরো দান করো বৃক্ষ শাখায়, পূর্ণিমায়, মোহিত সূর্যের দেশে।
সমাপ্ত
No comments:
Post a Comment