বাতায়ন/মাসিক/গল্পাণু/২য়
বর্ষ/১৮তম সংখ্যা/২৩শে কার্ত্তিক, ১৪৩১
চৈতালী চট্টোপাধ্যায় সংখ্যা | গল্পাণু
সঙ্ঘমিত্রা
দাস
শিক্ষার ভিত
"স্কুলে সবাই আমার বন্ধু হয়ে গেছে। আমি ওদের ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমির গল্প শুনিয়েছি যে। ওরা তো পোকেমন আর সিঞ্চন ছাড়া কিছু জানে না। আর শুধু মোবাইল গেমের গল্প করে।"
টিকলির বয়স
পাঁচ বছর। এবার স্কুলে না দিলেই নয়। আজকাল দুবছর
বয়সেই বাচ্চারা প্রিস্কুলে যাচ্ছে। অথচ শরীর ভেঙে যাবার বাহানায় টিকলির দিদা
চন্দ্রাদেবী ওকে স্কুলে ভর্তি হতে দেননি। বাড়িতে সব শিখিয়ে পড়িয়ে একেবারে
ক্লাস
ওয়ানে। মধুমিতা আর সুজয় টিকলির বাবা-মা দুজনই চাকরি করে, মায়ের ওপরই
ভরসা করতে হয় বাচ্চার ব্যাপারে তাই তার কথা মেনে নিতেই হয়েছে একরকম বাধ্য হয়ে। মধুমিতা বেশ চিন্তিত মেয়ের স্কুল নিয়ে। সকলের
সাথে মিশতে পারবে তো? ওর তো অন্য বাচ্চাদের মতো স্কুলের অভ্যেসটাই হয়নি। সারাদিন
দিদার কোলের কাছে শুয়ে দত্যিদানো আর রাজপুত্তুরের গল্প শোনে।
প্রথম দিন
স্কুল ছুটির সময় একমুখ টেনশন নিয়ে দাঁড়িয়ে মধুমিতা। মেয়ে হয়তো বেরিয়ে
কান্নাকাটি জুড়বে আর স্কুলে না আসার। কিন্তু ও তো একগাল হাসি নিয়ে বেরোলো।
গাড়িতে ফিরতে ফিরতে কত কথা "জানো মা, স্কুলে সবাই আমার বন্ধু হয়ে গেছে। আমি ওদের ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমির গল্প শুনিয়েছি যে। ওরা
তো পোকেমন আর সিঞ্চন ছাড়া কিছু জানে না। আর শুধু মোবাইল গেমের গল্প করে। লালকমল
নীলকমলকে চেনে না। রাবণের সীতাহরণ জানে না। কাল ওদের রাজকন্যা
মণিমালার গল্প বলব বলেছি। ওরা সবাই
আমার পাশে বসার জন্য কত হুড়োহুড়ি করছিল। আমার স্কুলে এসে খুব আনন্দ হয়েছে। এখন
তাড়াতাড়ি বাড়ি চলো,
দিম্মাকে সব গল্প করব তো"
মধুমিতা
স্বস্তির শ্বাস নিল। যাক সে মায়ের কথা মেনে কোন ভুল করেনি।
সমাপ্ত
অত্যন্ত সুন্দর একটি গল্প পড়তে পারলাম।
ReplyDeleteশিক্ষার আসল উদ্দেশ্য আনন্দ পাওয়া এ আনন্দের মাধ্যমেই শিশুর বিকাশ ঘটে।
গল্পটি পড়ে যারপরনাই উল্লশিত হলাম।