বাতায়ন/হলদে খাম/১ম
বর্ষ/৫ম সংখ্যা/১৫ই মে, ২০২৩
হলদে খাম
দেবারতি চন্দ রায়
ক্লাসরুম
প্রিয় বাতায়ন,
আজ ক্লাসরুম সম্পর্কে লিখতে গিয়ে মনে হল, জন্মের সাথে যাতে
প্রবেশ আর মৃত্যুর সাথে শেষ তার কোনোটাই বাদ দেওয়ার মতো নয়। দেখতে গেলে জন্মের
পর শিশুকে আঁতুড় ঘরে মায়ের প্রথম সু... সু… আওয়াজ দিয়ে বাহ্যি করতে শেখান হয়
তখন সেই ঘরটাই হয় শিশুর প্রথম ক্লাসরুম। তারপর ধীরে ধীরে হাঁটা-চলা-কথা বলা
শেখানোর পর ঢোকে সর্বজনবিদিত স্কুলের ক্লাসরুমে যা শেষ ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে।
ব্যক্তিগত জীবনে, শৈশব স্মৃতিতে ক্লাসরুমের নিত্যদিনের
কার্যকলাপ বিস্মৃত হলেও তার শিক্ষা যে প্রতিনিয়ত পথ দেখিয়ে চলেছে জীবন-আঁধারে
ধ্রুবতারার মতো সে ব্যপারে কোনো সন্দেহ নেই। সেখান থেকে পাওয়া শিক্ষায় স্বচ্ছ
মনোভাব, কর্মনিষ্ঠতা ও আত্মপ্রত্যয়ের সঙ্গে ধৈর্যের শিক্ষা, জাতি, ধর্ম, বর্ণ,
লিঙ্গ ভেদে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও উদারতার সঙ্গে মানুষে-মানুষে সুসম্পর্ক স্থাপন আর
ন্যায়-অন্যায় বোধ নিয়ে সর্বোপরি চরিত্র গঠনে, বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন মনীষী-মহিষীদের
বাণী যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য।
ভাবলে হাসি পায়, যে সংস্কৃত ক্লাস পালানোর অভিপ্রায়, শুধুমাত্র
সাহসের অভাবে সফল হত না বলে বাধ্যতামূলকভাবেই পড়তে হয়েছিল, শব্দরূপ, ধাতুরূপ—
তার মূল্য উপলব্ধি করেছিলাম বিভিন্ন রাজ্যে থাকাকালীন সেখানকার ভাষা শেখার
ক্ষেত্রে। তেমনই, “চক্রবৎ পরিবর্তন্তে দুখানি চ সুখানি চ”-এর মতো উক্তি শিখিয়েছিল
দৈনন্দিন জীবনের ঘাতপ্রতিঘাত-এর সঙ্গে উত্থানপতনের সম্পর্ক মেনে এগিয়ে যেতে।
এ তো রইল দৃশ্যমান ক্লাসরুমের কথা। এর বাইরেও অপেক্ষমাণ থাকে
অদৃশ্য এক ক্লাসরুম, যেখানে ভাল ফল লাভের আশায় সবাই দিতে থাকে একটার পর একটা
নিত্য নতুন পরীক্ষা, যার ফলাফলের উপর নির্ধারণ করে বর্তমান থেকে ভবিষ্যৎ জীবনের
যাপন পদ্ধতি।
সর্বোপরি দেখতে গেলে, বেঁচে থাকতে ক্লাসরুমের বাইরে বেশিক্ষণ
কাটানোর জো নেই কারোরই। প্রতিদিন প্রতিক্ষণ নানাভাবে কিছু না কিছু শিখিয়ে চলে যে
অদৃশ্য ক্লাসরুম, সেখানে সহপাঠী যদি হয় তৎকালীন পরিস্থিতি, তবে তার শিক্ষক অবশ্যই
সময়।
শুভেচ্ছান্তে—
দেবারতি চন্দ রায়
দেবারতি চন্দ রায়
অল্পকথায় জীবনের ক্লাশরুমের কথা ভালো লাগল।
ReplyDeleteঅসংখ্য ধন্যবাদ
Deleteঅত্যন্ত হৃদয়স্পর্শী ও স্মৃতিমধুর এক অনবদ্য পরিবেশনা....🙏🙏🙏🙏
ReplyDeleteLife is a classroom!
ReplyDeleteধন্যবাদ
Delete