চরিত্র
সুকান্তবাবু অবসরপ্রাপ্ত স্কুলমাষ্টার, বিপত্নীক। পেনশনের টাকায় সংসার চালান। একটি মাত্র ছেলে, কলেজে পড়ায়, তার টাকা তিনি নেন না। নিপাট ভদ্রলোক। অনেক গুণ। শিল্প-সাহিত্য বোঝেন, সংস্কৃতিবান, ভাল আবৃত্তি করেন, সুরসিক, অমায়িক মানুষ। দোষের মধ্যে তার একটি, সবার হাঁড়ির খবর রাখেন। পরনিন্দায় খুব আনন্দ পান।
হঠাৎ সেদিন সুকান্তবাবু এসে আমায় বললেন,
— জানেন! শুনেছেন কাণ্ড,
আপনার বন্ধু নির্মলবাবুর মেয়ে নীলা বিএ পাশ, সে কিনা তার চেয়ে কমবয়সি এক দর্জি
ছোকরাকে বিয়ে করতে যাচ্ছে! ছোকরার বয়স ওর চেয়ে অন্তত তিন বছর কম হবে। ছি! ছি!
লজ্জাও করল না একটু, কী কাল পড়ল রে বাবা! ভাবতে অবাক লাগে।
আমি বললাম,
— যাক গে, যে যা করেছে
করুক গে, ও নিয়ে মাথা না ঘামানোই ভাল।
শুনে সুকান্তবাবু অখুশি ও
আমার উপর বিরক্ত হয়ে চলে গেলেন। আমি বাঁচলাম।
বছরখানেক পরের ঘটনা। নীলা এসে একদিন বলল,
— শুনেছেন কাকাবাবু!
— কী?
— আপনার বন্ধু
সুকান্তবাবুর কাণ্ড?
— না তো!
— ছেলের বউ দেখতে গিয়ে,
এই বয়সে নিজে বিয়ে করে ফিরেছেন। ছি! ছি! একটু লজ্জাও হল না ওই লোকটার! বুড়ো ভাম একটা।
আমি বললাম,
— যাক গে বাদ দাও, যে যা
করছে করুক গে, ও নিয়ে আমাদের মাথা না ঘামানোই ভাল।
আমার কথা শুনে নীলা অখুশি
হয়ে ধুপধাপ করে পা ফেলে, আমার উপরে রাগ দেখিয়ে চলে গেল। আমিও হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম।
No comments:
Post a Comment