সে এক প্রেম...
প্রিয় সই,
অনেকদিন পর আবার কলম ধরলাম। সব কিছু কী আর ফোনে বলা যায় নাকি! জানি না যায় কিনা, আমি তো পারি না একদম। আজ বাইরে বেরুতে পারলাম না। ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়েই যাচ্ছে। তাই ভাবলাম লিখেই ফেলি। ভাল আছিস জানি। জানতে চেয়েছিলি আমার হঠাৎ বিয়ের কাহিনি। আজ লিখি...
আমায় দেখে স্বপ্নে ডুবেছিল যে রাজপুত্র সে ছিল ঠিক সেইখানে সেইক্ষণে। ট্রেনে উঠে দেখি বসে আছে রাঁচী মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র সন্দীপ কাপুর সহ আরো চার জন। আমরা বসার পর সন্দীপ উঠে গিয়ে ট্রেনের হলওয়েতে দাঁড়িয়ে হঠাৎ গাইতে লাগল, “পল পল দিল কে পাস / তুম রহতি হো...” ১৭ বছরের আমি... আর সে তখন ২১। কী বুঝেছিলাম, কে জানে। আমার নদীর বুকে স্বচ্ছ জলের রেখা হঠাৎ করে আলোয় ঝলোমলো হয়ে উঠল। ছলাৎ ছলাৎ শব্দ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মনের দুই পাড়ে। দুই পাড়ে? হ্যাঁ, চেতন আর অবচেতন পাড়ে। সে এক প্রেম... নিঃশব্দচরণে সেই প্রেম এসেছিল মনে ও মনের বাইরে যেখানে ছিল তরতাজা আলো, ছিল না কোন অন্ধকার। গন্তব্যস্থলে নামবার পর সে আমাদের পেছন পেছন আসছিল দেখে তার অন্য বন্ধুরা তাকে টানাটানি করেছিল। হ্যাঁ! আমিও এক ঝলক পিছন ফিরে দেখেছিলাম বৈকি। একেই কী বলে “লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট”? চেতন আর অবচেতন মন বলেছিল, ‘ইয়েস!’
“অবাক পৃথিবী অবাক করলে কেন!” শুভ দৃষ্টি! চোখে পানের পাতা সরিয়েই অবাক হলাম, “ইয়ে ক্যা হুয়া? ক্যায়সে হুয়া?” আমার এই প্রশ্ন মনেই ঘুরপাক খেয়ে জবাব দিল, “প্যার সে কভি কভি এয়সা হো যাতা হ্যায়।” পরে জেনেছিলাম আমার এক পিসতুতো দাদার ক্লাসমেট ছিল। পড়াশুনায় একেবারে চৌকশ ছেলে। শেষ বছরে ভাল রেজাল্ট করার জন্য আমেরিকায় স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে যাচ্ছে। তাই বিয়েটা সেরে নিয়েই যেতে চায়, আবদার ছিল দাদার কাছে।
জানিস? ফুলসজ্জার রাতে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘নদী কী ওড়ে না শিশিরের ঠোঁটে মাদল বাজায় ভোর?’ পরিষ্কার বাংলায় বলেছিল, ‘ছায়াকে দেখ না কেমন আকুল বিস্ময়ে চেয়ে দেখে, ফুল ফুলের দিকে চায় আর জল জলের দিকে…’ তার গভীর চোখ আমার চোখে তখন। ‘বাংলা এত ভাল জানো কীভাবে?’ ‘প্রথম দেখার পরেই ঠিক করে নিয়েছিলাম যেমন করেই হোক আমি এই মেয়েটাকেই আমার নিজের করে পেতে চাই। ঠাকুর ছিলেন সহায়। তোমার দাদা আমার রুমমেট ছিল। তার অ্যালবামেই একদিন দেখেছিলাম পুরীর সমুদ্রের কাছে স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে তুমি। ব্যস পেয়ে গেছিলাম আমার পাওনা। আমাদের প্রথম প্রেমের এই ভালবাসা নিয়ে লেখো, প্লিজ! কে বলতে পারে আচার বয়াম থেকে হঠাৎ করে সিন্ড্রেলার আবিষ্কার হয়ে যাবে, হয়তো?’ আমার চোখ আলমোড়া ভেঙে ওঠে... ‘অ্যাই, সন্দীপ! এ কী-ই?’ ‘শিমুল! কহনা হ্যায় -দিল কী বাত। কেউ জানবেও না কোনদিন... আকাশের বুকে কীভাবে এল লাল ওড়না! কীভাবে কামিনীর ছায়া আকুল বিস্ময়ে চেয়ে থাকে।’ সন্দীপের দীর্ঘশ্বাস তখন শিমুলের ঠোঁটে... এই পর্যন্ত... পরে আবার লিখব। জানিস তো এই ফাল্গুনী জীবনে কিছু আরামের বীজ উদ্বৃত্ত রচনা করে বার বার। আর তাতেই আমরা এক্কাদোক্কা খেলি। তুই তোর আলেক্সকে নিয়ে লিখিস। পড়ব। হ্যাঁ! হাতে লিখে পাঠাস। কোন যান্ত্রিকভাবে নয়। ভালবাসার রামধনু রং মেখে থাকিস সবসময়...
তোর সই
Bhalo laglo Seema di. Aro lekho
ReplyDeleteEta Srabani Roy Akilla likhlam..prothombar naam ta gelo na
Deleteআদর নিস ডিয়ার বোন।
Deleteআদর নিস ডিয়ার বোন।
ReplyDeleteখুব সুন্দর
ReplyDeleteখুব সুন্দর।
ReplyDelete