বাতায়ন/শিল্প-সংস্কৃতি/১ম বর্ষ/১২তম সংখ্যা/১৫ই আষাঢ়, ১৪৩০
শিল্প-সংস্কৃতি [কাব্যনাটিকা]
মৌসুমী সাহা
সঞ্চারণ
শাশুড়ি: শূন্যতা নেমে
আসা মনাকাশে হঠাৎই স্মৃতিবৃক্ষের স্মরণ।
বৈকুণ্ঠের নির্মল থানে নিজের সমাধি
গড়ি বরং।
শেষের কবিতার শেষ খণ্ডে লেখা থাকবে-
আমার সংক্ষিপ্ত আত্মজীবনী।
পেয়ে হারানো, হারিয়ে পাওয়ার হিসেব রাখে মনই।
ভাল ছিলাম, ভাল আছি, থাকবও তাই।
কষ্টটা রেখে গেলাম, খুশি নিয়েই যাই।
ভাল যারা বেসেছিল, বাসে এখনও,
হৃদয়ের কোণে আমি থাকব জেনো।
অপমান, অপবাদ, সঞ্চিত ধন-
আপণ সাজিয়ে আমি করেছি আপন।
বৌমা: মা— যদিও আমি
তোমার বৌমা, অধিকার হয়তো নাই,
মেয়ের মতো করে তবু, জানতে কিছু চাই।
তোমার লেখা খোলা খাতায়, পেলাম নতুন ঘ্রাণ,
কলম সৃষ্ট নবজাতকের সদ্য পাওয়া প্রাণ।
প্রশ্ন কিছু দেয় যে উঁকি আমার অবুঝ মনে,
‘বৈকুণ্ঠ’র অর্থ কী মা? জানাও বিশ্লেষণে।
শাশুড়ি: যেখানে কুণ্ঠা
নেই, বৈকুণ্ঠ সেটাই।
ঐশ্বরিক, অবিনশ্বর, স্বর্গীয় সে' ঠাঁই।
অর্থাৎ ঐশ্বর্য-দারিদ্র, শিক্ষা-অশিক্ষা, সৌন্দর্য-অসৌন্দর্য,
ইত্যাদি সব ধরনের কুণ্ঠা যখন মানুষের হৃদয় থেকে দূরীভূত হয়-
তখন তিনি বৈকুণ্ঠে বাস করেন।
"অব্যক্তোঽক্ষর ইত্যুক্তস্তমাহুঃ পরমাং গতিম্।
যং প্রাপ্য ন নিবর্তংতে তদ্ধাম পরমং মম।।"
অর্থাৎ, সেই অব্যক্তকে অক্ষর বলে।
তাই সমস্ত জীবের পরমা গতি।
কেউ যখন সেখানে যায়,
তখন আর তাঁকে এই জগতে ফিরে আসতে হয় না।
সেটিই হচ্ছে আমার পরম ধাম।
আর কিছু জানার আছে? বলো এই বেলা,
নয়তো ছাড়ো মা, কাজ আছে মেলা।
বৌমা: সমাধি গড়লে
কেন, এমন করে?
আমরা কি কেউ না? যাবে যে সরে!
আত্মজীবনী লেখো মা গো, ভাল কথা তা।
শেষের কবিতায় থাক শুরুর কথা।
নবজন্মে নব রূপে করো মা প্রকাশ,
আগামীর বাড়ে যেন আত্মবিশ্বাস।
শেষ থেকে শুরু হলে, আগে আসে সেই শেষটাই।
তোমাকে বেঝেনি যারা, ফিরে এসে জড়াবে তারাই।
শাশুড়ি: হয়তো-বা ঠিক তুই, আমি মিছে কষ্টটা পাই,
যুগে যুগে তবু জানিস, সততার মূল্যটা নাই।
বন্ধু নামটা বেশ, গাল ভরা ভালবাসাবাসি,
পিঠ পিছে ছুরি মেরে, সুযোগ দিয়ে দেয় ফাঁসি।
মানীরা মান দেয়, যত্নে তা রাখি সিন্দুকে,
পরোয়া করি না শুধু, বলে যাহা নিন্দুকে।
বৌমা: এই তো চাই মা
গো, তুমি লিখে চলো।
"শেষ হয়েও হল না"-র গল্পটা বলো।
হাতটাকে ধরে আছি, আমিও তো নারী!
ভেঙে যাওয়া মনকে পুনরায় জুড়তেও পারি।
শূন্যতা পূরণের চেষ্টাতে, আছি আমি তোমারই পাশে।
জীর্ণ স্মৃতির সাথে নব্য আশারাও মিলেমিশে থাক সহবাসে।
শেষের কবিতার শেষ খণ্ডে লেখা থাকবে-
আমার সংক্ষিপ্ত আত্মজীবনী।
পেয়ে হারানো, হারিয়ে পাওয়ার হিসেব রাখে মনই।
কষ্টটা রেখে গেলাম, খুশি নিয়েই যাই।
ভাল যারা বেসেছিল, বাসে এখনও,
হৃদয়ের কোণে আমি থাকব জেনো।
অপমান, অপবাদ, সঞ্চিত ধন-
আপণ সাজিয়ে আমি করেছি আপন।
মেয়ের মতো করে তবু, জানতে কিছু চাই।
তোমার লেখা খোলা খাতায়, পেলাম নতুন ঘ্রাণ,
কলম সৃষ্ট নবজাতকের সদ্য পাওয়া প্রাণ।
প্রশ্ন কিছু দেয় যে উঁকি আমার অবুঝ মনে,
‘বৈকুণ্ঠ’র অর্থ কী মা? জানাও বিশ্লেষণে।
ঐশ্বরিক, অবিনশ্বর, স্বর্গীয় সে' ঠাঁই।
অর্থাৎ ঐশ্বর্য-দারিদ্র, শিক্ষা-অশিক্ষা, সৌন্দর্য-অসৌন্দর্য,
ইত্যাদি সব ধরনের কুণ্ঠা যখন মানুষের হৃদয় থেকে দূরীভূত হয়-
তখন তিনি বৈকুণ্ঠে বাস করেন।
"অব্যক্তোঽক্ষর ইত্যুক্তস্তমাহুঃ পরমাং গতিম্।
যং প্রাপ্য ন নিবর্তংতে তদ্ধাম পরমং মম।।"
তাই সমস্ত জীবের পরমা গতি।
কেউ যখন সেখানে যায়,
তখন আর তাঁকে এই জগতে ফিরে আসতে হয় না।
সেটিই হচ্ছে আমার পরম ধাম।
নয়তো ছাড়ো মা, কাজ আছে মেলা।
আমরা কি কেউ না? যাবে যে সরে!
আত্মজীবনী লেখো মা গো, ভাল কথা তা।
শেষের কবিতায় থাক শুরুর কথা।
নবজন্মে নব রূপে করো মা প্রকাশ,
আগামীর বাড়ে যেন আত্মবিশ্বাস।
শেষ থেকে শুরু হলে, আগে আসে সেই শেষটাই।
তোমাকে বেঝেনি যারা, ফিরে এসে জড়াবে তারাই।
যুগে যুগে তবু জানিস, সততার মূল্যটা নাই।
বন্ধু নামটা বেশ, গাল ভরা ভালবাসাবাসি,
পিঠ পিছে ছুরি মেরে, সুযোগ দিয়ে দেয় ফাঁসি।
মানীরা মান দেয়, যত্নে তা রাখি সিন্দুকে,
পরোয়া করি না শুধু, বলে যাহা নিন্দুকে।
"শেষ হয়েও হল না"-র গল্পটা বলো।
হাতটাকে ধরে আছি, আমিও তো নারী!
ভেঙে যাওয়া মনকে পুনরায় জুড়তেও পারি।
শূন্যতা পূরণের চেষ্টাতে, আছি আমি তোমারই পাশে।
জীর্ণ স্মৃতির সাথে নব্য আশারাও মিলেমিশে থাক সহবাসে।
সমাপ্ত
No comments:
Post a Comment