বাতায়ন/গদ্য/১ম বর্ষ/১২তম সংখ্যা/১৫ই আষাঢ়, ১৪৩০
গদ্য
মধুপর্ণা বসু
আষাঢ়ে মেয়ে
সেদিন গোয়ালন্দের মাঠে কালো করে এলো মেঘের জটা, শনশন
হাওয়ায় দুলে দুলে উঠল তালতমালের রসবতী শরীর, একা বসে জানলার নীল পর্দা সরিয়ে ধোঁয়াটে
দৃষ্টিতে দেখি, আবছা এক ছায়া সত্তা…
নিজের হৃদয়ের আসন জুড়ে ভাসে এক মেঘ ভাঙা জলছবি। প্রবল বৃষ্টিতে কৈশোর
পেরোনো 'দুর্গা', দীঘল চোখে শূন্যতা, স্বপ্ন দেখার সাহস নেই, শরীর আছে, তাতে আপদের
ডাক শোনা বাতুলতা অথচ নিয়ম করে ঋতু আসে, যায়।
ভরে ওঠে গুপ্ত তোষাখানা! পোড়ারমুখি দুর্ভাগ্যের অসুখ গায়ে জড়িয়ে লকলক করে বেড়ে ওঠে, যেন বর্ষায় ফলন্ত পুঁই শাকম্ভরী—
ফুটিফাটা মাঠ, ভেঙে পড়া খড়ের চালে ঘুঘুর মৌরসিপাট্টা,
বেড়ে ওঠা সংসার, বছর বছর বিয়োয় মাদি ঘুঘুটা, অভাগিনী মেয়েটা নিজের হুহু বুকের কথা বোঝে
না, শুকনো অপুষ্টি কুঁড়িতে গুরুগুরু মেঘের উথালপাতাল শোনে কই? চোখে ঠোঁটের আতর গলে
গেছে হুঁশের আগেই, শরীরের জোয়ার যেন অপেক্ষা করে করে কখন এক থালা পান্তার স্বপ্ন নিয়ে
ঘুমিয়ে পড়েছে।
সমাপ্ত
No comments:
Post a Comment