বাতায়ন/সম্পাদকীয়/১ম
বর্ষ/১৩তম সংখ্যা/৫ই শ্রাবণ, ১৪৩০
সম্পাদকীয়
মান, বিত্ত এবং কষ্টিপাথর
“বিদ্বত্ত্বঞ্চ
নৃপত্বঞ্চ নৈব তুল্যং কদাচন।
স্বদেশে পূজ্যতে রাজা বিদ্বান্ সর্বত্র পূজ্যতে।।”
একদা এই-ই ছিল সরল সত্য।
সময় বদলেছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবই বদলেছে। যা-কিছু বদল হওয়া জরুরি ছিল এবং যা-কিছু
বদল হওয়া জরুরি ছিল না।
আজকের শিল্প-সংস্কৃতি-সাহিত্য
রাজাবাদশা-জমিদার-বাবুদের (এমনকি কিছু কিছু বিখ্যাত মন্দিরের) পৃষ্ঠপোষকতার ফসল। যেহেতু
কর্তার ইচ্ছাতেই কর্ম, সেই সব পৃষ্ঠপোষণ-কর্তাদের গুণকীর্তনও তারই ফল।
বর্তমানে পৃষ্ঠপোষণে
নির্লজ্জতার রং লেগেছে। সমাজের সব ক্ষেত্রেই। সব কিছুই আশ্চর্য নির্লজ্জ রঙে চুবিয়ে
রঙিন করে পরিবেশিত। অথচ এমনটা কি সত্যিই কাম্য ছিল? সমাজে যারা শুধু মাত্র বিদ্বান
নন, সত্যিই শিক্ষিত শ্রেণী, শুধুমাত্র পুঁথিগত শিক্ষাই নয় যারা জীবনের থেকেও শিক্ষার
নির্যাস গ্রহণ করেছেন, তারাও কি এই-ই চেয়েছিলেন? তবুও এমনটাই হল।
কষ্টিপাথরের সংজ্ঞা
বদলে গেছে কী তবে! আজ সম্মান বিত্তের সমান্তরাল, তা যে পথেই উপার্জিত হোক-না কেন! অতীতেও
ধনীক শ্রেণী আলাদা মর্যাদা পেতেন, কিন্তু তা কতটা সম্মানের আর কতটা ভয় জনিত সমীহের,
প্রশ্নের অবকাশ থেকেই যায়। শঙ্কা হয় বিত্তের জোয়ারে শিল্প-সংস্কৃতি-সাহিত্যের আঙিনা
ভেসে যেতে দেখলে। এর ভবিষ্যৎ কী? কী অবশিষ্ট থাকবে উত্তর-পুরুষের জন্য?
মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ
এখনও ব্যতিক্রম, কিন্তু তারাই কি সব? বাকি মানুষ, তারা শেষপর্যন্ত কষ্টিপাথরের ভূমিকায়
অবতীর্ণ হবেন? নাকি এই গড্ডলিকা স্রোত নির্বিঘ্নে ধাবিত হবে?
স্বদেশে পূজ্যতে রাজা বিদ্বান্ সর্বত্র পূজ্যতে।।”
খুবই প্রাসঙ্গিক কথা। এখন শিল্প, সংস্কৃতি, বিদ্যা ও নানা ক্ষেত্রে এই প্রভাব দেখা যায় তবে প্রকৃত বিদ্বান এখনও সর্বত্র সমাদৃত
ReplyDeleteধন্যবাদ, তবে নিজের নাম উল্লেখ থাকলে ভাল হত।
Deleteকষ্টি পাথরে আর সোনা পরখ করতে হয় না। আমরা জেনে গেছি, যা চকচক করে সেটাই সোনা - বিত্ত ও ক্ষমতার বৃত্তে ঘোরাঘুরি করেন যে মধুলোভী বিদ্বজ্জনেরা, তাঁরাও এখন খাঁটি সোনা। কষ্টিপাথরের কষ্টে যাবার প্রয়োজন কি?
ReplyDelete