বাতায়ন/সম্পাদকীয়/১ম
বর্ষ/২০তম সংখ্যা/৫ই আশ্বিন, ১৪৩০
সম্পাদকীয়
সবাই রাজা
সম্প্রতি বিশ্বকর্মা
ও গণেশ পুজো হয়ে গেল বেশ আড়ম্বর করে। প্রথম পুজোটা বাংলার শিল্প-ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন
করে, আর দ্বিতীয় পুজোটা মোক্ষ তথা সিদ্ধিলাভের আরাধনা। অধুনা পশ্চিমবঙ্গের শিল্প-নদীতে
চড়া পড়লেও দুই-তিনদিন ব্যাপী যন্ত্রদেবতার সমগ্র উপাসকগণের উন্মাদনা আর কিছু না হোক
আবগারি বিভাগের ভাণ্ডার কানায় কানায় পূর্ণ করেছে এ কথা উপলব্ধি করতে বিশেষ মননের প্রয়োজন
পড়ে না। জনতার সুবিধা-অসুবিধা, পরিবেশের তোয়াক্কা, সর্বোপরি ভয়ঙ্কর অসুস্থ, মরণাপন্ন
রোগীর অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার কথা কে আর মাথায় রাখে!
গণেশ পুজো ঘরে ঘরে,
আপামর মানুষের অন্তরের আরাধ্য হলেও বারোয়ারি রূপধারণ নতুন সংযোজন। বাঙালি চিরকাল নিজের
অস্তিত্বের চিন্তা না করে বুক পেতে গ্রহণ করতেই অভ্যস্ত। তাতে যদি উপরওয়ালার অনুগ্রহ
থাকে তবে তো কথাই নেই। অসংখ্য চাকুরিপ্রার্থী বেকার যুবসমাজ একটা কিছু কাজ তো পেল!
সংস্কৃতিচর্চা, সাধনা এসব পুরনো বস্তাপচা মামুলি ধ্যানধারণা বাতিল হওয়াই হয়তো ভাল!
যুবসমাজের মনন, মেধা, চিন্তাশক্তিকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে গড্ডলিকা প্রবাহে চালিত করার মহান
ব্রত যাঁদের কাঁধে তাঁরা অবশ্যই জোর কদমে সাফল্যের সিঁড়িতে অতি দ্রুত ধাবমান!
সিদ্ধিলাভ, লক্ষ্মীর কৃপা যে কোন উপায়ে এলে সাধনা-সংযমের প্রয়োজন কী! কিন্তু একটা কথা মাথায় রাখা ভাল, লক্ষ্মী বড় চঞ্চলা। তিনি থেকেও না থাকতে খুব বেশি সময় নেন না। তাছাড়াও যে সকল সাধক তথা উপাসক এ রাস্তার পথিক, তাদের পরবর্তী প্রজন্ম কী শিখছে, তারা বড় হয়ে তাদের বাবা-মা, গুরুজনদের মানবে তো? নিজের নিজের স্বার্থেই ভালমন্দের বিভাজিকা, উচিত-অনুচিতের বিচার এখনই না করলে পরে পস্তানো ছাড়া গতি থাকবে না।
No comments:
Post a Comment