বাতায়ন/অন্য চোখে/১ম
বর্ষ/২৭তম সংখ্যা/১৩ই পৌষ, ১৪৩০
অন্য চোখে
সোশ্যাল মিডিয়ায় সুন্দর মুখ/ছবি, সাহিত্যে তার প্রভাব
সুমিতা চৌধুরী
সাহিত্য হোক মননশীল
সুন্দর মুখের জয়
সর্বত্র। এ কথাটি সর্বজনবিদিত। তবে, বহিরাবরণের থেকে অভ্যন্তরীণ গুণমান বড়ই
প্রয়োজনীয়, এ কথাটিও ভুললে চলে না। যদিও সেই আবহমান কাল থেকে এই প্রবাদ বাক্যটিই
প্রতিষ্ঠিত সত্য হয়ে আসছে, "আগে দর্শনধারী, পরে গুণ বিচারী।"
আসলে সাহিত্য এমন একটি
জগৎ, যেখানে মননশীলতা এবং প্রকৃত শিক্ষার আলোয় আলোকিত হওয়া, সবিশেষ প্রয়োজন।
এখানে, পুঁথিগত বিদ্যার সাথে সাথেই মনের শিক্ষায় শিক্ষিত এক সৃজনশীল মনন-চেতনের
মেলবন্ধন অত্যাবশ্যকীয়। সাহিত্য অবশ্যই সমাজের এক দর্পণসম। যেখানে কলমের দ্বারা
প্রতিফলিত হয় সামাজিক চিত্রপট। যা সভ্যতার ইতিহাস রচনার সহায়ক এবং বর্তমানের
পরিচায়ক। তাই সেক্ষেত্রে চিন্তনের পরিধি, মননশীলতা খুবই মূল্যবান। সেখানেই যদি
ঘাটতি থাকে, তবে বহিরঙ্গের সৌন্দর্য দিয়ে তাকে ঢাকা যায় না। তখন সাহিত্য তার মান
হারায়।
তবু আজকাল সোশ্যাল
মিডিয়ার দৌলতে দেখা যায়, এই সাহিত্যজগতেও বেশ কিছু অনভিপ্রেত ঘটনা আকছার ঘটে
চলেছে। যেখানে এই রূপ-লাস্যের মহিমায়, অহরহ গুণ হচ্ছে খর্বতার। বহু গুণীজন তাঁদের
গুণের কদর পাচ্ছেন না, কিছু সুন্দর মুখ আধুনিক মুন্সিয়ানায় ঠাঁই করে নিচ্ছে
সাহিত্যের দরবারে। পরবর্তীতে সেইসব নিম্ন গুণমানের কলমের বদান্যতায়, সাহিত্য আপন
মান হারাচ্ছে, সামাজিক ভূমিকা পালন করতে হচ্ছে অসমর্থ। সভ্যতার ইতিহাসের দলিলে
সময়ের ব্যবধান বেড়েই চলেছে, রচিত হচ্ছে না কালজয়ী কোনো সৃষ্টি।
তাই মনের সৌন্দর্য,
সৃজনশীল মনন, শিক্ষিত পরিশীলিত চেতন প্রাধান্য পাক, বিশেষত এই সাহিত্যজগতে। দৃষ্টি
আকর্ষক মুখাবয়ব বা বহিরঙ্গের আধুনিকতা নয়। মন-মনন হোক নব্য শিক্ষায় আধুনিক, সকল
জীর্ণ, সংকুচিত চিন্তনকে পিছনে ফেলে। মনের শিক্ষার আধুনিকতার হোক জয় সর্ব স্তরে।
তবেই আবারও সাহিত্য জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন পাবে, স্বমহিমায়।
সমাপ্ত
No comments:
Post a Comment