প্রাপ্তমনস্কদের পত্রিকা

মননশীল কলমকে উৎসাহ দিতে... পড়ুন, পড়ান, আপনার মূল্যবান মতামত দিন।

রং | প্রতিজ্ঞা

  বাতায়ন/ রং /সম্পাদকীয়/২য় বর্ষ/ ৩ ২তম সংখ্যা/ ২৯শে ফাল্গুন ,   ১৪৩১ রং | সম্পাদকীয়   প্রতিজ্ঞা "নির্ভীক একটি ফুলের মতো মেয়েকে চরম লাল...

Saturday, July 6, 2024

ভাষা-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য | শংকর ব্রহ্ম

বাতায়ন/ত্রৈসাপ্তাহিক/অন্য চোখে/২য় বর্ষ/৬ষ্ঠ/যশোধরা রায়চৌধুরী সংখ্যা/২১শে আষাঢ়, ১৪৩১

যশোধরা রায়চৌধুরী সংখ্যা | অন্য চোখে

শংকর ব্রহ্ম

ভাষা-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য

 

"বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র, মধুসূদন ইংরেজি ভাষা জানা সত্ত্বেও বাংলা ভাষাকে মর্যাদার এবং গৌরবের যে উচ্চ-শিখরে তুলে ধরেছিলেন, তার অভাব বড় অনুভূত হয় আজকের দিনে উচ্চ শিক্ষিতদের দেখে।"


শিল্প-সাহিত্য-সঙ্গীত-নাটক প্রভৃতি সংস্কৃতির ধারক বাহক। ভাষা ও সংস্কৃতির মতো ইতিহাসও ঐতিহ্যের বাহক। আমরা যে ভাষায় লিখছি, পড়ছি, মনের আনন্দে গলা ছেড়ে গান গাইছি, সেই ভাষার জন্য সংগ্রামের শুরুটা হয়েছিল ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি। আর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপর আঘাত এলে কী হতে পারে, তা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, ১৯৭১ সালে, নতুন বাংলাদেশের জন্মের ভিতর দিয়ে।

বাংলা ভাষা ভীষণ সমৃদ্ধ একটি ভাষা হলে কী হবে, যথাযথ প্রয়োগের অভাব ও অবহেলার দরুন বাংলা ভাষার চিত্র আজ রুগ্ন। তার কারণ, বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে তরুণ প্রজন্ম। যার ফলাফল মাতৃভাষার বিকৃতি ঘটছে। বাংলা ভাষার শুদ্ধ চর্চা করা ভীষণ প্রয়োজন।

উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এবং চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলা ভাষায় দক্ষতার মূল্যায়ন করা হয় না বলেই, নতুন প্রজন্ম বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে। পাশাপাশি অভিভাবকরাও বাংলা ভাষা শেখার ব্যাপারে তেমন কোন গুরুত্ব দিতে চায় না। যা বাংলা ভাষা বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ বলে মনে হয়।

ভবানী প্রসাদ মজুমদারের তির্যক ছড়াটা মনে পড়ে যাচ্ছে -
"আমার ছেলে খুব 'পজেটিভ' অলীক স্বপ্নে ভাসে না
জানেন দাদা, আমার ছেলের, বাংলাটা ঠিক আসে না।"

নিজের মাতৃভাষাকে এভাবে গুরুত্ব না দেওয়ার ফলে, যা ঘটার তাই ঘটেছে। ইংরেজি ভাষার প্রয়োজন হয় শুধুমাত্র দেশের বাইরে ব্যবহারের জন্য। তরুণ প্রজন্ম যদি তার ইতিহাসের ঐতিহ্যকে ভুলে যায়, তবে সে তার শিকড়কে ভুলে গেল। শিকড় নড়বড়ে হয়ে গেলে সে বৃক্ষ কখনও ছায়া দিতে পারে না। আমাদের দেশের উচ্চ শিক্ষিতদের অবস্থা দেখতে পাই ঠিক সেইরকমই। শিকড় বিহীন ঐতিহ্য বিহীন এক ফাঁপা মানুষ।

বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র, মধুসূদন ইংরেজি ভাষা জানা সত্ত্বেও বাংলা ভাষাকে মর্যাদার এবং গৌরবের যে উচ্চ-শিখরে তুলে ধরেছিলেন, তার অভাব বড় অনুভূত হয় আজকের দিনে উচ্চ শিক্ষিতদের দেখে। বাংলা সাহিত্যের জন্য রবীন্দ্রনাথের পরে আর একটাও নোবেল প্রাইজ এলো না, এ কী কম আক্ষেপের বিষয় আমাদের কাছে। এসব দেখে কারও মনে সন্দেহ করার কোনও অবকাশ থাকা উচিৎ নয় যে বাঙালি তার ভাষা-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য ভুলতে বসেছে।
 

সমাপ্ত

No comments:

Post a Comment

মোহিনীমায়া


Popular Top 10 (Last 7 days)