বাতায়ন/মাসিক/যুগলবন্দি/২য় বর্ষ/২৮তম
সংখ্যা/২রা ফাল্গুন, ১৪৩১
অমরেন্দ্র
চক্রবর্তী সংখ্যা | যুগলবন্দি | দেবশ্রী রায় দে সরকার ও অজয় দেবনাথ
দেবশ্রী রায় দে সরকার
স্পর্শকাতর
দেবশ্রী রায় দে সরকার
"তোমাকে হয়তো পাইনি বা পাব না। এটা একটা স্বতঃসিদ্ধ সত্য। তবুও কোথায় যেন একটা অধিকারবোধ জন্মে গেছে আমার... হয়তো সেটা তোমার স্পর্শ থেকে।"
"বসন্ত বাতাস তার পাগল করা আবেদনে প্রকৃতিকে রঙিন করে দিয়েছে। পুরুষ কোকিল তার আকুল করা সুরে সঙ্গিনীকে সমানে ডেকেই চলেছে। সেইসঙ্গে পাগল হচ্ছে মানুষ, সঠিক দিশা না পেয়ে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে মাতালের মতো আনচান করছে।"
আদৃত,
ফেসবুক ইনস্টাগ্রামের যুগে চিঠি সত্যিই অচল, ঠিক অচল আমার মতোই, কিন্তু এ তো
শুধু চিঠি নয়... এ আমার একক কথোপকথন, কথোপকথনে দুটি মানুষের প্রয়োজন হয়, কিন্তু
দীর্ঘদিন ধরে আমি শুধু কথা বলে গেছি একা তোমার সঙ্গে, আর তোমার
সংলাপগুলো নিজের মনের মতো করে সাজিয়ে নিয়েছি।
জানি এই
চিঠি কোনদিনও তুমি পাবে না তাই নির্দ্বিধায় অনেক কিছু লিখে যাচ্ছি, আর যদি তুমি
পেতে খুব হাসতে আমার নির্বুদ্ধিতা দেখে।
তোমাকে হয়তো পাইনি বা পাব না। এটা একটা স্বতঃসিদ্ধ সত্য। তবুও
কোথায় যেন একটা অধিকারবোধ জন্মে গেছে আমার... হয়তো সেটা তোমার স্পর্শ থেকে। না
আমাকে স্পর্শ নয়,
তুমি যে সকল জিনিসে স্পর্শ করতে সেই সকল জিনিসগুলিকে আমি খুব নিবিড়ভাবে
স্পর্শ করতাম, তোমার
ছোঁয়া লাইব্রেরির বই,
তোমার ছোঁয়া চেয়ার টেবিল, তোমার স্পর্শের বাসের হ্যান্ডেল, তোমার
স্পর্শের ক্যান্টিনের চায়ের কাপ... যেন আমার একান্ত নিজের... তোমার চোখের
দূরত্বের গহিন স্পর্শ যেন আমাকে বলে যেত, বাইরে না
থাকলেও অতলস্পর্শী হৃদয়ে আছি।
থেকো, অন্তত শুধু
এই ভাবেই থেকো, কারণ
আমি যে খুবই স্পর্শকাতর...
ইতি—
তোমার
উপেক্ষিত
শ্রাবস্তী
অমরেন্দ্র
চক্রবর্তী সংখ্যা | যুগলবন্দি | অজয় দেবনাথ ও দেবশ্রী রায় দে সরকার
অজয় দেবনাথ
শ্রাবস্তী,
তুমি কি পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য! কী
করে এত বড় ভুল করলে! তাও এত দিন পরে। আরও আশ্চর্য হলাম, আমার ঠিকানা রেখে দিয়েছ জেনে।
ভাগ্যিস, নইলে তোমার চিঠি… তোমার মনের এত কথা জানতেও পারতাম না! শুধু… ট্রেনের টাইমটেবিলটা
জেনে রাখার প্রয়োজন ছিল, তাহলে ট্রেন চলে যাবার আগেই প্যাসেঞ্জার প্ল্যাটফর্মে পৌঁছতে
পারত।
যাইহোক, বলো কেমন আছ? কোথায় আছ? কী
করছ এখন? আগের বাড়িতেই আছ না বাড়ি বদল করেছ? মানে পদবি আগেরই আছে তো? এখনও তেমনই আছ,
নাকি সুন্দর হয়েছ আরও? থুড়ি সুন্দরী। আর রুচিশীলা তো তুমি চিরদিনই, কাজেই সে কথা জানতে
চাইছি না।
ভাল লাগল তোমার মধুমাখা চিঠি পেয়ে,
ভাবিনি কোনদিন আমি তোমারও মনে অনায়াসে বিচরণ করছি। নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। বিশ্বাস
করো আর না-ই করো, আমার যতই অন্য জগৎ থাক-না-কেন, তোমাকে দেখার পর থেকে আমি মুগ্ধ হয়েছি
তোমাতে। কোন রমণী যে এত সুন্দরী হতে পারে তোমাকে না দেখলে বিশ্বাসই হোতো না। এ সৌন্দর্য
যেন স্বপ্নের মতো, যেন স্বর্গের কোন অপ্সরা। শুধু কবির কল্পনায়, কাব্যেই তোমাকে মানায়।
আমি এখন কী করব জানি না।
যখন ভুল করে চিঠিটা দিয়েই ফেলেছ, তখন
পাব না বা পাইনি বলছ কেন! বসন্ত বাতাস তার পাগল করা আবেদনে প্রকৃতিকে রঙিন করে দিয়েছে।
পুরুষ কোকিল তার আকুল করা
সুরে সঙ্গিনীকে সমানে ডেকেই চলেছে। সেইসঙ্গে পাগল হচ্ছে মানুষ, সঠিক দিশা না পেয়ে দিগ্বিদিক
জ্ঞানশূন্য হয়ে মাতালের মতো আনচান করছে। আর ঠিক সেইসময়ে তোমার আহ্বান অকূল দরিয়ায় ভেসে যাওয়া দিগ্ভ্রান্ত নাবিকের
কাছে যেন মসনদ এনে হাজির করল। স্থান-কাল ঠিক করে ফেলো, দেখা হোক, কথা হোক শুধু দুজনে।
মুছে যাক আর যা কিছু আছে
দুনিয়ায়।
অপেক্ষায় রইলাম।
তোমারই প্রতীক্ষায় আদৃত।
কী বলে
সম্বোধন করব তোমায় জানি না, কারণ তোমার নামই জেনেছিলাম অনেকদিন পর... তখন যেন সম্বোধন আর নাম দুটোই পরিপূরক হয়ে উঠেছিল, তাই প্রিয় আদৃত না বলে... শুধু আদৃত
নামটাই মনে… মনের আনাচেকানাচে ঘোরাফেরা করছিল।
শ্রাবস্তী
অজয় দেবনাথ
সুন্দর যুগলবন্দি
ReplyDeleteআন্তরিক ধন্যবাদ হে অজ্ঞাতজন।
Deleteমন ছুঁয়ে গেল
ReplyDeleteধন্যবাদ প্রদীপ-দা, শুভেচ্ছা জানাই।
Deleteমন ছুঁয়ে গেল
ReplyDelete