প্রাপ্তমনস্কদের পত্রিকা

মননশীল কলমকে উৎসাহ দিতে... পড়ুন, পড়ান, আপনার মূল্যবান মতামত দিন।

রং | প্রতিজ্ঞা

  বাতায়ন/ রং /সম্পাদকীয়/২য় বর্ষ/ ৩ ২তম সংখ্যা/ ২৯শে ফাল্গুন ,   ১৪৩১ রং | সম্পাদকীয়   প্রতিজ্ঞা "নির্ভীক একটি ফুলের মতো মেয়েকে চরম লাল...

Friday, March 14, 2025

রঙের উৎস | সুশীল বসাক

বাতায়ন/রং/প্রবন্ধ/২য় বর্ষ/৩২তম সংখ্যা/২৯শে ফাল্গুন, ১৪৩১
রং | প্রবন্ধ
সুশীল বসাক
 
রঙের উৎস

"লাল গোলাপে লাল রং নেই। শুনতেও কেমন অবাক লাগে। লাল গোলাপে যখন সাদা আলো পড়ে তখন গোলাপের পৃষ্ঠটি লাল ব্যতীত অন্যান্য সকল তরঙ্গকে শোষণ করে নেয় এবং লাল রঙের তরঙ্গগুলিকে প্রতিফলিত করে।"
 
মনে পড়ে কি সাদাকালো পৃথিবীটাকে? আমরা আশির দশকে এই সাদাকালো পৃথিবীটাই দেখতাম টিভিতে। তার পাশাপাশি আজকের এলইডি টিভির রঙিন বর্ণচ্ছটা কল্পনারও অতীত। দেখার আনন্দই আলাদা। সত্যি, রং ছাড়া জীবন যেন অনেকটাই ফিকে। প্রকৃতির নানা রংবাহারের রোজকার সাক্ষী আমরা। সবুজ বনানী থেকে শুরু করে পাহাড়, নদী, ঝরনা
 স্রোতধারা কিংবা উত্তাল সমুদ্রের জলরাশি, প্রকৃতির সর্বত্র জুড়ে চলেছে রঙের বৈচিত্র্যময় খেলা। বিজ্ঞানীদের কাছে রং শুধু তরঙ্গের খেলা। বিভিন্ন রং হচ্ছে বিভিন্ন তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের শক্তি যা সূর্য থেকে বিকীর্ণ হয়ে পৃথিবীতে বিচ্ছুরিত হয়ে পড়ছে যাকে বলি আলো। রং বা বর্ণ হচ্ছে কোনো বস্তুর উপরে সাদা আলো পড়লে যদি বস্তুটি সাদা আলোর মধ্যে উপস্থিত সব তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো শোষণ করে নিয়ে শুধুমাত্র কোনো একটি নির্দিষ্ট তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো প্রতিফলিত করে তাহলে বস্তুটিকে ওই নির্দিষ্ট তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট আলোকে আলোকিত হতে দেখি। এই সবকিছুর প্রথম বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা দেন স্যার আইজ্যাক নিউটন
 
অতি সাধারণভাবে বলতে গেলে আলো আসলে তড়িৎ চৌম্বকীয় কিছু তরঙ্গের মিশ্রণ। ভিন্ন ভিন্ন দৈর্ঘ্যের তরঙ্গের রংও আলাদা। সাধারণভাবে বলা যায় যে, লাল গোলাপে লাল রং নেই। শুনতেও কেমন অবাক লাগে। লাল গোলাপে যখন সাদা আলো পড়ে তখন গোলাপের পৃষ্ঠটি লাল ব্যতীত অন্যান্য সকল তরঙ্গকে শোষণ করে নেয় এবং লাল রঙের তরঙ্গগুলিকে প্রতিফলিত করে। তাই আমরা লাল গোলাপকে লাল দেখি। কিন্তু লাল গোলাপে সবুজ আলো ফেললে গোলাপটি তখন কালো দেখাবে। আসলে, সবুজ রংটি শোষণ করে নেওয়ায় লাল গোলাপ কালো দেখায়। তেমনি, সবুজ পাতা সবুজ রঙের তরঙ্গকে প্রতিফলিত করে। তাই সবুজ দেখায়। এইভাবেই বলা যায়, কালো বা সাদা কোনো রংই নয়
 
আমাদের চোখ আলোর সাতটি রংকেই দেখতে পায়। এই রংগুলি মিলেমিশে যখন আমাদের চোখে ধরা পড়ে তখন তাকে বলি সাদা আলো। আর ঠিক এই কারণেই অন্ধকারে আমরা কোনো বস্তুকে দেখতে পাই না বা কোনো রংও বুঝে উঠতে পারি না। আরো মজার ব্যাপার হলো, আমাদের সবার পরিচিত রামধনু আদতে কোনো ধনুক নয় বা স্বর্গীয় কোনো বস্তুও নয়। সাদা আলোর মধ্যে যে সাতটি রং থাকে সেগুলিই আমরা বর্ষাকালে রামধনুতে দেখি- বেগুনি, নীল, আকাশি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল। বৃষ্টির বা মেঘের সাথে ভেসে চলা জলের কণায় সূর্যের সাদা আলোর প্রতিফলনে বিভিন্ন তরঙ্গের রংগুলি বিচ্ছুরিত হতে থাকে। আর আমাদের চোখে বর্ণিল রামধনু ধরা দেয়।
 
সমাপ্ত

No comments:

Post a Comment

মোহিনীমায়া


Popular Top 10 (Last 7 days)