বাতায়ন/শারদ/কবিতাগুচ্ছ/৩য় বর্ষ/২২তম সংখ্যা/১লা আশ্বিন, ১৪৩২
শারদ | কবিতাগুচ্ছ | শামসুর রাহমান | প্রত্যাশার বাইরেই ছিল
কবি-পরিচিতিসহ
কবিতাগুচ্ছ
শামসুর
রাহমান
প্রত্যাশার বাইরেই ছিল
ব্যাপারটি। রোজকার
মতোই টেবিল ঘেঁষে পুরোনো চেয়ারে
আরামে ছিলাম বসে, ঘড়িতে তখন
আমি কি না-লেখা কোনও কবিতার পঙ্ক্তি মনে-মনে
সৃজনে ছিলাম মগ্ন? একটি কি দুটি শব্দ হয়তো-বা ভেসে
উঠছিল আমার মানস-হ্রদে। আচমকা
চোখে পড়ে ঘরে একটি প্রজাপতির চঞ্চলতা।
বেশ কিছুকাল থেকে কৃষ্ণপক্ষ দিব্যি গিলে রেখেছে আমার,
আমাদের বসতিকে। আলো জ্বালাবার
প্রয়াস নিমেষে ব্যর্থ হয় জাহাঁবাজ
তিমিরবিলাসী ক্রূর হাওয়ার সন্ত্রাসে নিত্যদিন। তবুও তো
একজন রঙিন অতিথি ঘরটিকে দান করে অকৃপণ
সোন্দর্যের আভা, মুগ্ধ চোখে দেখি তাকে। মনে হয়,
একটি কবিতা যেন ওড়াউড়ি করছে
এ-ঘরে,
অথচ দিচ্ছে না ধরা আমার
একান্ত করতলে, যার ধ্যানে
দীর্ঘকাল মগ্ন ছিল কবিচিত্ত সম্ভবত অবচেতনায়
আধো জাগরণে কিংবা ঘুমের আংশিক এলাকায়।
(ভাঙাচোরা চাঁদ মুখ কালো করে ধুঁকছে কাব্যগ্রন্থ)
সংক্ষিপ্ত
কবি-পরিচিতি
শামসুর রহমান
শামসুর রাহমান (১৯২৯-২০০৬)
ছিলেন বাংলাদেশ ও আধুনিক বাংলা সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান কবি, যিনি জীবদ্দশাতেই 'প্রধান কবি' হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি 'নাগরিক কবি' হিসেবেও বিখ্যাত, যিনি তাঁর কবিতায় শহুরে জীবন ও আধুনিক বাস্তবতাকে তুলে
ধরেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে 'প্রথম গান, দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে', 'বন্দী শিবির থেকে',
'রৌদ্রকরোটিতে' ইত্যাদি। তিনি কেবল কবিই ছিলেন না, বরং লেখক ও সাংবাদিক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন এবং তাঁর লেখায়
উদার মানবতাবাদ ও ধর্মীয় মৌলবাদের বিরোধিতার বিষয়গুলো প্রধান ছিল।
[সংগৃহীত]
শারদ | কবিতাগুচ্ছ | শামসুর রাহমান | প্রত্যাশার বাইরেই ছিল
কবি-পরিচিতিসহ
কবিতাগুচ্ছ
"আধুনিক বাংলা সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান কবি, যিনি জীবদ্দশাতেই 'প্রধান কবি' হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি 'নাগরিক কবি' হিসেবেও বিখ্যাত।"
প্রত্যাশার বাইরেই ছিল
মতোই টেবিল ঘেঁষে পুরোনো চেয়ারে
আরামে ছিলাম বসে, ঘড়িতে তখন
আমি কি না-লেখা কোনও কবিতার পঙ্ক্তি মনে-মনে
সৃজনে ছিলাম মগ্ন? একটি কি দুটি শব্দ হয়তো-বা ভেসে
উঠছিল আমার মানস-হ্রদে। আচমকা
চোখে পড়ে ঘরে একটি প্রজাপতির চঞ্চলতা।
বেশ কিছুকাল থেকে কৃষ্ণপক্ষ দিব্যি গিলে রেখেছে আমার,
প্রয়াস নিমেষে ব্যর্থ হয় জাহাঁবাজ
তিমিরবিলাসী ক্রূর হাওয়ার সন্ত্রাসে নিত্যদিন। তবুও তো
একজন রঙিন অতিথি ঘরটিকে দান করে অকৃপণ
সোন্দর্যের আভা, মুগ্ধ চোখে দেখি তাকে। মনে হয়,
দীর্ঘকাল মগ্ন ছিল কবিচিত্ত সম্ভবত অবচেতনায়
আধো জাগরণে কিংবা ঘুমের আংশিক এলাকায়।
(ভাঙাচোরা চাঁদ মুখ কালো করে ধুঁকছে কাব্যগ্রন্থ)
শামসুর রহমান
No comments:
Post a Comment