বাতায়ন/শারদ/গল্পাণু/৩য় বর্ষ/২২তম সংখ্যা/১লা আশ্বিন, ১৪৩২
শারদ | গল্পাণু
বিপ্লব নসিপুরী
তিতিক্ষা
"বড় রাস্তার পাশে প্যাণ্ডেলে শোভিত বড় চোখের দুর্গাপ্রতিমার মুখখানি ঝাপসা লাগে। সেখানে স্পষ্ট হয় মলিন শাড়ি পরিহিতা তার মায়ের আদল। না সে চোখে কোনও হিংসার চিহ্ন নেই।"
পঁচাত্তর বছরের শীর্ণকায়া কুঞ্চিত চর্মের আল্পনাদেবী আজ অনেকদিন পরে উনুনের দ্বারে এসেছেন। রান্নার ঠাকুর দেখছে কীভাবে অভ্যস্ত হাত অব্যবহারে অনভ্যস্ত হয়ে গেছে।
একমাত্র নাতির মুখে কাঁপা
কাঁপা হস্তে তুলে দিচ্ছেন পরমান্ন। আর দুঃখক্লিষ্ট মনখানি পরম আদরে কামনা করছেন
নাতির পরমায়ুর। পাশে দাঁড়িয়ে বিষণ্ণ হৃদয়ে অনিকবাবু। বারবার ঘড়ি দেখছেন। চিড়িয়াখানা
দেখার নামে ছেলেকে নিয়ে এসেছেন তার ঠাকুমার কাছে। সন্ধেবেলা জন্মদিনের বড় পার্টি
হবে। গিন্নির ধৈর্যঘড়ি একবার সর্তক করেছে ফোনের নিস্তব্ধতা ভেঙে।
খুদেটি পায়েস মুখে বললে,
-দুর্গামা তো
প্রতিবছর নিয়ম করে আসে। ঠাম্মি তুমি যাবে না? বাবা, তুমি ঠাম্মিকে নিয়ে চলো-না।
অনিকবাবুর চোখ ছলছল করে ওঠে। বৃদ্ধাশ্রমের
বোর্ডের লেখাগুলো ক্রমশ ঘোলাটে হয়ে আসে। বড় রাস্তার পাশে প্যাণ্ডেলে শোভিত বড়
চোখের দুর্গাপ্রতিমার মুখখানি ঝাপসা লাগে। সেখানে স্পষ্ট হয় মলিন শাড়ি পরিহিতা তার
মায়ের আদল। না সে চোখে কোনও হিংসার চিহ্ন নেই।
সমাপ্ত
No comments:
Post a Comment