প্রথম বর্ষ/দ্বিতীয়
সংখ্যা/১লা মে, ২০২৩
ছোটগল্প
কল্যানী মন্ডল
গোপনে
এক সপ্তাহ কাজে আসতে পারবনি মাসিমা, আমার মেয়েটা পোয়াতি দু’দিনের মধ্যেই বাচ্চা হবে৷ মাসিমা বলে জানিস তো আমি পা নিয়ে কোন কাজ করতে পারি না হাঁটুতে-কোমরে ব্যথা৷ কাজের মেয়ে মিনা বলে
আমি কোনদিনও কামাই করি না যত অসুবিধা থাক, তুমি পারো না বলেই তো৷ কিন্ত মেয়েটাকে কার ভরসায় রেখে আসি জামাই রেখে গেল। ওরা ভালবেসে বিয়ে করে, শ্বশুরবাড়ি মেনে নেয়নি ঘর ভাড়া করে রেখেছে, সেই জন্য বাচ্চা চাইছিল না৷ আমি দায়িত্ব নিয়েছি, বললাম এসেছে যখন আমি সব সামলে নেব৷ এই আমার কথা ভাবো, আমার মা নাকি আমাকে ফেলে দিয়েছিল জীবনানন্দপুরের আস্তাকুঁড়ে সেখান থেকে মনিমা কুড়িয়ে এনে আমায় মানুষ করে পড়াশুনা শেখায় কিন্ত কপাল যাবে কোথায়? ভালবেসে এমন একজনকে বিয়ে করলাম চালচুলোহীন পাড়ার রাকেশদাকে ব্যস চিকিৎসার অভাবে একদিন টেঁসে গেল, শ্বশুরবাড়িতেই বা মানবে কেন আর মনিমা গালাগাল দিতে লাগল, আমিও খুব জেদি, বললাম আমার সন্তানকে আমি একাই মানুষ করব৷ কাজে লেগে পড়লাম প্রথমে দুটো রান্নার বাড়ি সাত-আট মাসের পেট নিয়েই৷এখন কিছুর অভাব নেই বাড়ি বানিয়েছি৷ গতরে খেটে ওর বাচ্চা মানুষ করে দেব, তবে জামাই আমার শিক্ষিত ভাল ছেলে জানি একদিন চাকরি পাবে, ঠকাবে না মেয়েকে। মাসিমা বলল, ঠিক আছে ঠিক আছে তোর কাহিনি আর শুনব না৷ মিষ্টি নিয়ে কাজে আসিস। বেরিয়ে যেতেই ভাবছে হয়তো তারই সন্তান মিনা, সালটা জানা হয়নি, আর জানলেই বা কী হত ও সব কেচ্ছা ঘাঁটতে যাব এই বয়সে! এখন সে রেলের অফিসারের গিন্নি, তার সন্তানরাও প্রতিষ্ঠিত যা আছে গোপনে তা গোপনে থাক।
👍👍
ReplyDelete