বাতায়ন/গদ্য/বর্ষা/১ম বর্ষ/১৫তম সংখ্যা/১৯শে শ্রাবণ, ১৪৩০
গদ্য / বর্ষা
শ্রীমতী জ্যোৎস্না মন্ডল
বর্ষার দিনে
বর্ষায় মেঘলা আকাশ আবার কখনো কালো মেঘে ঢাকা আকাশ স্বাভাবিক ভাবে মনের চালে বিরহ এনে দেয়, কেমন যেন একঘেয়ে আলসে মনের ক্যানভাসে ছবি আঁকতে আঁকতে সময় বয়ে যায়। আমার কাছে বর্ষা একটু অন্য স্বাদের। বৃষ্টির রিমঝিম শব্দে প্রেম নামক বস্তুটি হৃদ-মাঝারে এক রাসায়নিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রতিফলন ঘটায়।
মনে পড়ে আগের বছর ঘন বর্ষার মধ্যে উত্তরবঙ্গ বেড়াতে গিয়েছিলাম চার বাল্যবন্ধুর সঙ্গে। বিজনবাড়িতে রঙ্গিত নদীর পাড়ে একটি নিস্তব্ধ রিসর্টে আমরা ছিলাম। বাইরে প্রচণ্ড বৃষ্টি পড়ছে আর রঙ্গিত নদীর জলস্রোতের শব্দে আমাদের বর্ষণমুখর দিনটা ব্যতিক্রমী হয়ে উঠেছিল সেদিন। মনের খেয়ালে ডুবে যাই প্রেম সায়রে, বৃষ্টি আমার মনকে চঞ্চল করে তোলে। বৃষ্টির সৌন্দর্যের রসাস্বাদন করতে করতে রসিক মন হারিয়ে যায় কোন সুদূরে। বৃষ্টির জলে প্রেমানুভূতির অনল নেভাতে মন নারাজ, কবি মন হয়ে ওঠে উদ্বেল। মনের পরতে পরতে মিয়া মল্লার রাগে সেতার ও সন্তুর বেজে ওঠে নিমেষে। মনের মানুষটিকে কাছে পাবার জন্য বেপরোয়া হতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কোথায় পাব তারে, সে যে বহু দূরে। কত শত শব্দ কবিতা হয়ে ওঠে শিরা-উপশিরা-ধমনীতে। অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকি সামনের ঘন অরণ্যের দিকে, ভাল লাগার রেশ মিশে যায় রঙ্গিত নদীর ফেনিল জলে আর গাছের পাতায় টুপ টুপ জল পড়ার শব্দে জলতরঙ্গ বেজে ওঠে মনে।
সমাপ্ত
No comments:
Post a Comment