প্রাপ্তমনস্কদের পত্রিকা ~ ~ ~ নাম নয় মানই বিবেচ্য

তৈমুর খান সংখ্যা | মগজ ও অঙ্গ

বাতায়ন/ তৈমুর খান সংখ্যা/ সম্পাদকীয় /৩য় বর্ষ/ ৩২তম সংখ্যা/১১ই অগ্রহায়ণ , ১৪৩২ তৈমুর খান সংখ্যা | সম্পাদকীয়   মগজ ও অঙ্গ "অপরিসীম মেধ...

Tuesday, November 25, 2025

মা-বাবার বিয়ের তারিখে | ইন্দ্রজিৎ রায়

বাতায়ন/তৈমুর খান সংখ্যা/ছোটগল্প/৩য় বর্ষ/৩তম সংখ্যা/১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২
তৈমুর খান সংখ্যা | ছোটগল্প
ইন্দ্রজিৎ রায়
 
মা-বাবার বিয়ের তারিখে

"স্মরণই শ্রেষ্ঠ এমন মনে করেভাবি বাবা-মা এখন এই সমস্ত নিরাপত্তাকর্মীদের ভেতরেই বাস করছেনযাঁরা দিন নেই রাত নেইঅন্যদের সিকুরিটি দিচ্ছেননিজেদের সিকুরিটি থাক-বা-নাই-থাক।"

 
সকালে উঠে মনে পড়ল, আজ মা-বাবার বিয়ের তারিখ, ওরা দুজনেই নেই যদিও। তাহলে? একবার ভাবলাম দুটো সাদা মালা, দুজনের ছবিতে দিই, তারপর মনে হোলো, যে স্মরণই শ্রেষ্ঠ, মালা বাদ, একটু মাছ কিনে, ভাজলাম, মা-র রান্নাঘরে, সব মশলাপাতি ও পাতা, পুনরায় দেখলাম, এর মধ্যে কি কোনও কবিতা ছিল?
 
বাইরে বেরিয়ে দাঁড়ালাম একটু, বাবা এখানটাতে রোদ পোহাতেন দাঁড়িয়ে, শীতকালে, মা চলে যাবার পরেও, সেটা বহাল ছিল অনেকবছর, যেমন দেশের দিকে বলত বাদ আর বোহাল ধানখেত। একটা রাস্তার সমান বা উঁচু, অন্যটি রাস্তা থেকে অনেকটা নীচে। বাড়ির উলটোদিকে সিকুরিটি এজেন্সির অফি, বেশ সিনিয়ার কিছু মানুষ আজকাল এই কর্ম করেন, মেয়েরাও, উর্দি পরে, তাঁরা বিরাট সমস্ত বিলডিং-এর সামনে ডিউটি করেন, আসা-যাওয়ার হিসেব, কখনও উচ্চপদের ফাইফরমাএইসব, এই প্রবীণ সিকুরিটি মানুষদের দেখে মনটা ভারী লাগে, খুবই, বাবার কথা মনে আসে, বাবাও তো এরকম হতে পারতেন, আমি না থাকলে, বা মিলিটারির সামান্য পেনশনটা না থাকলে, হয়তো বাবাও নিরাপত্তা দিতেন অন্যদের, নিজের সেটা থাক-বা-নাই-থাক। বাবা-মার বিয়ের তারিখে, ওরা নেই, কিন্তু আজকাল ওদের মতো মানুষদের খুঁজি রাস্তায়, এও বা কম কী? নিরাপত্তা এজেন্সি, বাজারে সবজি নিয়ে বসা মাতাজি, কিংবা কষ্ট করে রাস্তা পেরোনো সাদা চুলের মাথা, বিবাহবার্ষিকীতে এগুলো দেখি, আর মনে হয় মা-বাবা কুমিরডাঙা খেলছে, জলে নামছে, উঠে যাচ্ছে কখনও, এখানেও কী কবিতা ছিল।
হালকা রোদে, প্রবীণ এক সিকুরিটি ম্যান, দাঁড়িয়ে আছেন, অফিস খোলার জন্য অপেক্ষায়, লটোদিকে আমি, ফুলমালা না কিনে, স্মরণই শ্রেষ্ঠ এমন মনে করে, ভাবি বাবা-মা এখন এই সমস্ত নিরাপত্তাকর্মীদের ভেতরেই বাস করছেন, যাঁরা দিন নেই রাত নেই, অন্যদের সিকুরিটি দিচ্ছেন, নিজেদের সিকুরিটি থাক-বা-নাই-থাক।
 
সমাপ্ত

6 comments:

  1. অসাধারণ লিখেছেন, স্যার 🌺
    খুব ভালো লাগলো 🙏
    Om Shanti 🕉

    ReplyDelete
  2. অনন্তের পথে খুঁজতে থাকা মানুষকে সত্যিই কি আর মেলে! সত্যি কি সে অগ্রন্থিত কবিতা রাতের জানলায় ঠাঁই পায়! বোধহয় না। অত্যন্ত অনুভূতি আছে এই লেখার প্রতি লাইনে।

    ReplyDelete
  3. ভাল লাগা ❤️

    ReplyDelete

'ও মন তরে কে-বা পার করে...'


Popular Top 8 (Last 7 days)