আমি আমাদের হাউজিং-এর ফিজিসিয়ানকে কল করলাম। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ডাক্তার এলেন। চেকআপ করে কপালে ড্রেসিং করে কিছু ওষুধ লিখে দিলেন। বললেন ভয়ের কিছু নেই। ঠিক হয়ে যাবে। আমি নিশ্চিন্ত হলাম। দরজার কাছে এসে আমি ফিজ দিতে যেতেই ডক্টর ঘুরে দাঁড়িয়ে বললেন, "মধুজা কোনও কারণে খুব টেনশড্ হয়ে আছে। অতিরিক্ত নার্ভাস টেনশনে এমনটি হয়েছে। ওষুধ দিয়েছি নিয়মিত খাওয়ালে সব ঠিক হয়ে যাবে। তবে কিছু রুটিন ব্লাড টেস্ট লিখে দিলাম, করিয়ে নেওয়া ভাল। এখন বেডরেস্ট।" আমি দরজা বন্ধ করে এসে মধুকে গরম দুধ খাইয়ে দিলাম। বললাম, "শুয়ে থাক, আমি ওষুধ আনতে যাচ্ছি।" ওষুধের মধ্যে দেখি ঘুমের ওষুধও দিয়েছেন ডক্টর।
২
ঘড়িতে রাত এগারোটা চৌত্রিশ। ব্যালকনির টবের গাছগুলোতে সকালে জল দেওয়া হয়নি, কেমন নেতিয়ে পড়েছে। বৃষ্টি হলে ওরা জল পেয়ে সতেজ থাকত। ঠিক মধুর মতো লাগছে। জল দিয়ে রুমে এসে দেখি মধু ঘুমিয়ে পড়েছে। মধুকে দেখে আমার ভীষণ মায়া হচ্ছে। মুখটা নিস্পাপ। মেয়েটা খুব নরম প্রকৃতির, খুব সহজ সরল। তবে আবেগে ভাসে বেশি। বাস্তব বুদ্ধিটা বড্ড কম। ও নিজের মতো সবাইকে সৎ ভাবে। আমরা জমজ। ও আমার থেকে এক মিনিটের বড়, তবু যেন ও আমার থেকে ছোটই। ক্যারাটেতে ‘ব্লাক বেল্ট’ পেয়ে আমার আত্মবিশ্বাস এতটাই বেড়ে গেছে যে নিজেকে মধুর অভিভাবক হিসাবে ভাবি। আমাদের দু’জনের চরিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। ছোট থেকেই আমি আত্মনির্ভরশীল। মধুর সব কিছুতেই আমার সাহায্য লাগে। আমি ছোট চুল পছন্দ করি, মধু লম্বা চুল। আমি জিন্স টি সার্ট, মধু সালোয়ার ঘাগড়া শাড়ি।
মধুর মোবাইলটা হাতে তুলে নিলাম। কারো ব্যক্তিগত কিছু দেখার অভিরুচি আমার নেই, কিন্তু মধুর ব্যাপারটা আলাদা। মধুর মোবাইলটা লক করা। অসুবিধা নেই আমি ওর আঙুলের নড়াচড়া আগেই দেখে লক কোড বুঝে নিয়েছি। মোবাইল খুলে আমি সরাসরি হোয়াটসঅ্যাপে ঢুকলাম। বাদল নামে একটা ছেলের সঙ্গে নিয়মিত চ্যাট করে দেখলাম। স্ক্রল করে চ্যাট পড়তে থাকলাম। মিস্টি মিস্টি প্রেম দিয়ে শুরু। তারপরই সাংঘাতিক চমকে উঠলাম। এ কী করেছে মধু! দরদর করে ঘামছি এসিতেও। মধু কবে কী করে এসব ঘটাল মাথায় এল না।
মধুর ছবিগুলো দেখে আমার ব্লাডপ্রেসার হাই হয়ে গেল। এই তাহলে আসল ব্যাপার! এসব ছবি আর ভিডিও দেখিয়েই ব্ল্যাকমেল করছে বাদল নামের ছেলেটা! বিরাট ভুল হয়ে গেছে, মধুকে আগে থেকে সাবধান করা উচিত ছিল আমার। ও যে এত বোকা ভাবতেই পারছি না। দশ লাখ টাকা চাইছে স্কাউন্ড্রেলটা। তবেই নাকি সব ছবি ভিডিও ডিলিট করবে। এই সব টেনশনেই তাহলে মধুর নার্ভাস ব্রেকডাউন!
মাথার ভেতর দপদপ করছে। আজ এই সব কিছুর জন্য পাপা-মাম্মা দায়ী। অভিভাবকের স্নেহ পেলে মধু বাইরে ভালবাসা খু্ঁজতে যেত না। পাপা-মাম্মা কারোরই কোনো দায় নেই আমাদের জন্য। দু’জনেই ডিভোর্সের পর নিজেদের জীবন নিয়ে ব্যস্ত। পাপা এখন জার্মানিতে, মাম্মা বোস্টনে, দু’জনেই সাইন্টিস্ট। বালিগঞ্জে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, দেশের বাড়ি আর ব্যাংকে কয়েক কোটি টাকা রেখে দিয়েই যে যার নিজের দায়িত্ব ধুয়ে ফেলেছে। পারিবারিক ভাঙন মধুর ভেতরটা নড়বড়ে করে দিয়েছে। কিন্তু হাল ছাড়লে হবে না। আমাকেই দেখতে হবে পুরো ব্যাপারটা। কিছু একটা স্টেপ নিতেই হবে। তবে মধুর ওপর একটুও আঁচ আসতে দেওয়া চলবে না। পুলিশের কাছে গেলে ব্যাপারটা পাঁচকান হবেই। যা করার নিজেকেই করতে হবে।
এখন বেশ কিছু দিন বাদলের সঙ্গে মধুর যোগাযোগ বন্ধ করতে হবে। সিমটা বার করে মোবাইলটা বালতির জলে ফেলে দিলাম। কিছুক্ষণ পরে মোবাইলটা জল থেকে তুলে মুছে আবার মধুর ব্যাগে ভরে রাখলাম। নিজের মোবাইলের সিমটা খুলে মধুর সিমটা লাগালাম। মধুর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বাদলের অ্যাকাউন্টে গেলাম। ছেলেটার প্রোফাইল সার্চ করে বুঝলাম ছেলেটার শিক্ষাগত যোগ্যতা তেমন না থাকলেও দেখতে হিরো সুলভ। খড়কুটো আঁকড়ে ধরার মতো কোনও একটা পরিত্রাণের পথ খোঁজার আপ্রাণ চেষ্টা করছি। হঠাৎই বিদ্যুৎ খেলে গেল মাথায়। বাকি রাতটা জেগেই কেটে গেল। কিছুতেই দু’চোখের পাতা এক হল না।
৩
মধুর ঘুম ভাঙল বেলা করে। উঠেই নিজের মোবাইলটা হাতে তুলে নিল। আমি আড় চোখে দেখছি মোবাইলটা নিয়ে টেপাটিপি করছে কিছুতেই অন করতে পারছে না। বলল, "দেখ তো কী হল, অন হচ্ছে না।" আমি হাতে নিয়ে অন করার চেষ্টা করে বললাম, “বুঝতে পারছি না ঠিক। সেটটা সার্ভিস সেন্টারে দেখাতে হবে।” মধু মোবাইলটা আমার হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখল। “না থাক, পরে ঠিক করব।” আমি ঠিক এটাই চাইছিলাম। এখন ওর সঙ্গে কোনও ভাবেই বাদলের যোগাযোগ ঘটানো চলবে না। বললাম, “চল কিছুদিন দেশের বাড়ি ঘুরে আসি। এখন এমনিতেও কলেজে ক্লাস হচ্ছে না।” মধু চুপ করে থাকল। ওর নীরবতায় সম্মতির আশ্বাস পেয়ে আমি স্বস্তি পেলাম। চুপচাপ উঠে গেলাম ব্যালকনিতে। দেশের বাড়ি ফোন করলাম। তিনবার রিং হবার পর ষষ্ঠীদাদু ফোন ধরল।
৪
বিকেলে ট্রেন থেকে নেমে স্টেশনের বাইরে এসে সুশীলকাকুকে পেলাম। আমাদের পুরনো হুড খোলা জিপ নিয়ে দাঁড়িয়ে। আকাশে আজও কালো মেঘ ছেয়ে, বৃষ্টি নেই। এখন না হওয়াই ভাল। আগে বাড়ি পৌঁছোই, তারপর যত খুশি হোক। দু’পাশে ধান জমি রেখে এবড়োখেবড়ো রাস্তায় নাচতে নাচতে জিপ আমাদের গ্রামের বাড়ি পৌঁছে দিল।
ষষ্ঠীদাদু ব্যস্ত হয়ে পড়ল আমাদের দেখে। মধু ক্লান্ত পায়ে দোতলায় উঠে গেল। আমাদের পোষা ডোবারম্যান জগাই মাধাই এসে ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার ওপর। কী তাদের খুশি! দু’ পা তুলে দিল কাঁধে। লেজ নেড়ে লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে চেটেচুটে একসা। যতই গলা চুলকে দিই আদর করি ছাড়ানো গেল না কিছুতেই। দাদু ফোকলা হেসে বলল, "তোমাকে বড় ভালবাসে গো ছোটদিদি। তুমি যেদিন ফিরে যাও সেদিন ওরা মুখে কুটোটি তোলে না।" আমি গম্ভীর হয়ে বললাম, “তোমার সঙ্গে কথা আছে দাদু।” গলার স্বর শুনে দাদু মুখের দিকে তাকাল। “হ্যাঁ বলো ছোটদিদি।” “দূরে নয়, কাছে এসো।” দাদু যেন একটু সতর্ক হয়ে কাছে এসে দাঁড়াল। আমার কথা শোনার পর দাদুর চোয়াল শক্ত হল। "পারবে তো দাদু?” দাদু দৃঢ় গলায় বলল, “বাবা মশাইয়ের সময় থেকে এ বাড়ির নুন খাচ্ছি। পারব না মানে? তুমি চিন্তা করোনি ছোটদিদি আমার ওপর ভরসা রেখো।”
৫
পর দিন ভোর ভোর ঘুম ভেঙে গেল। উঠে ছাদে গেলাম। আজও আকাশে মেঘ ছেয়ে আছে। অথচ বৃষ্টি নেই। বাতাসে জলীয় বাষ্পের জন্য খুব অস্বস্তি লাগছে। ছাদ থেকেই দেখা যায় এ বাড়ির পেছনেই প্রবল জলরাশি নিয়ে গঙ্গা নদী বয়ে চলেছে। দোতলা গাড়িবারান্দা সহ লাল ইটের পুরনো আমলের জমিদার বাড়ি আমাদের, সামনে পেছনে অনেকটা জায়গা জুড়ে বাগান উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। পাঁচিলের ধার বরাবর বড় বড় আম কাঁঠাল বকুল দেবদারু গাছগুলো গ্রামের লোকের থেকে এ বাড়িকে আড়াল করে রেখেছে।
এ বাড়িতে ঠাকুরদার আমলের বিশ্বস্ত ভৃত্য ষষ্ঠীচরণ ছাড়া আর থাকে জগাই মাধাই, আমাদের পোষা ডোবারম্যান। এরাই বাড়িটা রক্ষা করে চোর-ডাকাতের হাত থেকে। পাপা এনেছিল ওদের ছোট্ট অবস্থায়। সারাদিন চেন দিয়ে বাঁধা থাকলেও রাতে ছাড়া থাকে। বাঁধা না থাকলে অচেনা লোক দেখলেই হিংস্র ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ যাবৎ তাই এ বাড়ির ত্রিসীমানায় চোর-ডাকাত ঘেঁসতে সাহস পায় না।
সুশীলকাকু থাকে গ্রামে। ডাক পড়লেই ছুটে আসে। নীচের তলায় একটা ঘরে ষষ্ঠীদাদু একা থাকে। বিশাল রান্নাঘর আর বাথরুম ছাড়া প্রায় সব ঘরেই তালা দেওয়া। দোতলাটা আমরা এলে ব্যবহার করি, বাকি সময় তালা বন্দি থাকে। কলকাতায় থাকলেও আমরা কলেজ ছুটি পেলেই এখানে চলে আসি। এই নিরিবিলি প্রকৃতি আমাদের দু’বোনকেই টানে। এই একটা বিষয়েই আমরা দু’বোন একদম এক।
৬
দিনগুলো কোথা দিয়ে যেন কেটে গেল। মধুর শরীরটা আরো শুকিয়ে গেছে। সারাদিনই প্রায় ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেয়। আয়নায় মুখ দেখে না, চুল বাঁধে না, বাইরে বেরোয় না, এমনকি আমার সঙ্গেও কথা হয় না তেমন। আমি জানি একমাত্র সময়ই ওষুধ। একমাত্র সময়ই পারে ওকে স্বাভাবিক করে দিতে।
এখানে আসার ঠিক সাত দিন পর আমি আমার মোবাইল থেকে সিম খুলে মধুর সিম লাগিয়ে বাদলের সঙ্গে কথা বললাম। বললাম টাকা রেডি, সঙ্গে ফোনও আনতে বললাম। আমার চোখের সামনে সব যেন ডিলিট করা হয়। হোয়াটসঅ্যাপে পথনির্দেশ দিয়ে দিলাম। বললাম আর আমাকে ফোন করার দরকার নেই।
বাদল ফোন রাখতেই আমার মোবাইল থেকে মধুর সিম খুলে আমার নিজের সিম লাগিয়ে নিলাম। পথনির্দেশ দেখে বাদল এল দুপুর শেষে বিকেল হয় হয়। আমার নির্দেশ মতো দাদু তাকে নিয়ে এল এক তলার সবচেয়ে বড় আর সুন্দর বৈঠকখানার ঘরে।
আগে থেকে ফিট করা গোপন ক্যামেরা আমার ল্যাপটপে দেখাল বাদলের চোখে বিস্ময় আর লোভ ফেটে পড়ছে। গদি আটা বিশাল চেয়ার দেখিয়ে দাদু বলল, “ছোট দিদিকে খবর দিচ্ছি, বসেন বাবু।” বাদল বসল না। ঘুরে ঘুরে দেখছে ঘরটা। এ ঘর প্রাচীন কাল থেকেই দুস্প্রাপ্য অ্যান্টিক আসবাবপত্রে সাজানো। মাথার উপর বিশাল ঝাড়লন্ঠন। দেওয়ালে পূর্বপুরুষদের প্রাচীন তৈলচিত্র শোভা পাচ্ছে। বাদলের লোভী চোখ ঘুরে বেড়াচ্ছে ঘরের এদিক থেকে সেদিক। ও যেন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না, না জেনে এমন শাঁসালো শিকার ধরেছে।
আমাদের ব্রিটিশ আমলের অট্টালিকা। এ ঘরে কোনও জানালা নেই। দেওয়ালও বিশাল চওড়া। মোটা শাল কাঠের দরজা বন্ধ থাকলে ঘরের ভেতরের শব্দ বাইরে যায় না। দাদু যেতে গিয়েও ফিরে এল, “বাবু ঈশান কোণের দরজাটা খবরদার যেন খোলা না হয়।” বাদল সচকিত হয়ে উঠল, “কেন কেন?” “আসলে ভেতরে সব দামি দামি জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে তো, দেখভাল করার কেউ নেই। বুঝতেই তো পারছেন জমিদার বাড়ি বলে কথা। আমি বুড়ো মানুষ কত আর সব হিসেব রাখতে পারি। তাই আর কী...” বাদল তড়িঘড়ি বলল, “না না তুমি নিশ্চিন্তে যেতে পার।”
কিন্তু আমার বিশ্বাসকে রূপ দিতেই দাদু যাবার পরেই বাদল পায়ে পায়ে উঠে গেল ঈশান কোণে। এটা একটা অসাধারণ দরজা। দরজার পাল্লায় তামা-রূপোর অপরূপ লতাপাতা ফুলের কারুকাজ। বাদল দ্রুত দরজার সামনে এসে দাঁড়াল। দেখতে পাচ্ছি চোখটা লোভে চকচক করছে। এতক্ষণে যা দেখেছে তাতে ওর মনে হওয়াটা স্বাভাবিক দরজার ওপারে বিশাল খাজানা আছে। দেখলাম চট করে হাতের মোবাইলে দরজার একটা ছবি তুলল। এবার মোবাইলটা পকেটে রেখে হ্যাসবল্ট খুলছে। খুলে ফেলল দরজা। ভেতরটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। কিন্তু দেখতে পেয়েছে কি দু’জোড়া জ্বলন্ত চোখ? নিশ্চয়ই পেয়েছে। ওই তো এক পা দু’ পা করে পেছনে হাঁটছে। ওই তো ভয়ে চোখ বিস্ফারিত। ওই তো পেছন ঘুরেছে, দরজা খুলতে চায়। কিন্তু বাইরে যাবার দরজা যে বাইরে থেকে ষষ্ঠীদাদু বন্ধ করে রেখেছে। বাদল দরজা খোলার মরিয়া চেষ্টা করছে, পারছে না। ভয়ে ওর মুখ সাদা। দু’টো লোমশ জন্তু টলতে টলতে কাছে এগিয়ে আসছে ক্রমশ। জিভ ঝুলে পড়েছে জগাই মাধাই-এর। মুখে তাদের গরর গরর আওয়াজ, চোখে লোভাতুর খিদে। বাদল ভয়ে চলচ্ছক্তিহীন। ঝাঁপিয়ে পড়ল দীর্ঘ সাত দিনের অভুক্ত জগাই মাধাই। বাদল মর্মভেদী চিৎকার করছে। বীভৎস চিৎকারে ঘরটা গমগম করছে। আমি ল্যাপটপ বন্ধ করে দিলাম। আর দেখা সম্ভব নয়। মিশন সাকসেস। আমার চোখে জল, এ জল জেতার আনন্দে। এখন বাদল যতই চিৎকার করুক মোটা দেওয়াল ভেদ করে ওর আওয়াজ বাইরে যাবে না।
দোতলায় তীব্র জোরে ওয়েস্টার্ন মিউজিক চালিয়ে দিলাম। মিউজিক ততক্ষণ চালাব যতক্ষণ না জগাই মাধাইয়ের পেট ভরে। তারপর অনেক কাজ বাকি। প্রথমে নীচে নেমে বাদলের মোবাইলের সিম নষ্ট করতে হবে। তারপর অবশিষ্ট দেহাংশ, ওর মোবাইল আর জামাকাপড় বস্তায় পুরে গভীর রাতে গঙ্গার গভীর জলে ফেলে দিয়ে আসতে হবে। অবশ্য ষষ্ঠীদাদুই এসব করবে বলেছে।
আমি ভলিউমটা আরো জোরে বাড়িয়ে দিয়ে মধুর ঘরে গেলাম। মধু নেই। বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল। কোথাও ওকে খুঁজে না পেয়ে ছাদে গেলাম। দেখি মধু খোলা চুলে দু’হাত প্রসারিত মুখ উঁচু চোখ বন্ধ করে বৃষ্টিতে ভিজছে। ভিজুক মেয়েটা। আসলে এখন ঝমঝম করে বৃষ্টি নেমেছে।
সমাপ্ত
টানটান গল্প। - জয়িতা
ReplyDelete