বাতায়ন/গদ্য/১ম বর্ষ/২৩তম
সংখ্যা/১০ই কার্তিক, ১৪৩০
গদ্য
শম্পা সামন্ত
প্যাশন ফ্লাওয়ার
লোকে যে যাই বলুক
পুরুষেরা তোমায় ঝুমকোলতা বলেই ডাকে। পথেঘাটে যখন তোমার মেখলা উড়ে চলে সবুজ গানের
ভিতর। আর নিঃসীম পথরেখা অতিক্রম করে আমার ছাদের কার্নিশে এসে দোল খেলে তোমায় অনেক
আদর সেরে নিই। অনেক অপরূপ গন্ধগুলোও। বিকেলের অস্ত রবির লাল আভায় তুমি ডাগরটি। স্নিগ্ধতা
ছড়িয়ে জ্যোৎস্নার সাগরে অবগাহন করে ওঠো পত্রপুটে রেখে দাও অগ্রন্থিত প্রেম।
যেন তোমার ক্লান্ত শরীর
বেয়ে উঠে যাবে ললিত রাগ আর তুমি গলায় গুঞ্জফলের মালায় সেজে উঠেছ নির্ভার। চূর্ণ
দোপাটির নোলক দুলিয়ে সূর্যের সঙ্গে যে ক্ষণটিতে তোমার বিতণ্ডা শুরু, ক্লান্ত
সন্ধ্যা নেমে এসে জড়িয়ে নিল তোমায়, আদরের পূর্ণতায় ভরিয়ে দিল। আমার নিষ্কলুষ স্পর্শে
তুমি দিগন্ত জোড়া ব্যালকনি হেঁটে যাও, কোনো পুলক বেদনা বুকে নিয়ে। সমস্ত
প্রলুব্ধকর দৃষ্টি মেলে যারা লকলকে জিভ দিয়ে তোমার কৌমার্য চেটে নিচ্ছিল, তাদেরও
হাতে দিয়েছি এক গোছা বেল ফুলের মালা। আর তোমার লতাপাতা দিয়ে বেঁধে রেখেছি কোমর ও
নিতম্ব। বেশ জড়িয়ে রেখেছি শান্ত যৌবন আর আমাদের যৌন বাসভূমি। যে যে বৃক্ষ বেয়ে
তুমি শীৎকারে মুহ্যমান হলে আমি তুলে নেব নিস্তব্ধ অবয়ব, ছড়িয়ে দেব আচমন। আর চোখ
মেললে রজনিগন্ধার সুবাসে ভরিয়ে দেব শ্বাস। যে হিলিয়াম তেজ তোমায় দিচ্ছিল অসহনীয়
ব্যথা, আমি তার তেজ খর্ব করে তোমায় নিয়ে যাব ইন্দ্রের সভায়। তোমার সিংহজিনি কটি
দুলে উঠলে স্বর্গের বালকেরা গান ভুলে যাবে। তাল যাবে কেটে। তবু আমি উড়ন্ত প্রজাপতি
হয়ে কানে কানে পড়ে দেব শাপভ্রষ্ট রক্ষাকবচ।
আর হিম ঝর্নার
স্রোতধারায় ধুয়ে দেব আবিলতা। তুমি সেই স্রোতধারার মতো মুক্তো চন্দনের হাসি হেসে
নিলে আমি তোমার প্রস্ফুটিত প্রশস্ত বুকে রাখি বিশ্বাস। কোনো এক নির্ভরতায় মাথা রেখে
শুই তোমার অঙ্গুলি নখরের আদরে। আমি ছিন্ন খঞ্জনার মতো নদীর বালুরাশির উপর। যেন
আদরগুলি নিয়ে নিলে আমার প্রত্যাহত দুঃখ ও যন্ত্রণা। আমি সুখ মেখে, আলো মেখে, আদর
মেখে চুমো খাই।
সমাপ্ত
No comments:
Post a Comment