ধারাবাহিক
গল্প
সঙ্ঘমিত্রা
দাস
কলঙ্কিনী
[২য় পর্ব]
"এই প্রথম কাউকে দেখে সুনয়নার এত উতলা লাগছে মনের মধ্যে। প্রথম দেখাতেই শরীরে কী ভীষণ আন্দোলন। ছটফট করছে যেন ওর প্রতিটি শিরা উপশিরা। বহুদিনের শরীরের খিদে যেন ছুটে গিয়ে জাপটে ধরতে চাইছে অচেনা ছেলেটিকে।"
পূর্বানুবৃত্তি বছর
ছত্রিশ-সাঁইত্রিশের তরতাজা তরুণ সৌমেন খুন হয়েছে। বাড়ির বৌ সুনয়না প্রেমিকের সঙ্গে মিলে খুন করেছে।
মুখরোচক বিষয়, কাজেই পাড়ার লোকের জটলা, ফিশফাশ লেগেই রয়েছে। পুলিশ সুনয়নাকে অ্যারেস্ট
করেছে। তারপর…
এভাবেই চলতে থাকে পনেরো দিন। মাঝে দ্বিরাগমনে বাপের বাড়ি ঘুরে এসেছে সুনয়না। মা মেয়েকে বুঝিয়েছে কীভাবে সংসার গুছিয়ে নিতে হয়, মানিয়ে নিতে হয় কত। এখন ওটাই ওর আসল বাড়ি, এ বাড়িতে সুনয়না এখন অতিথি। ও মাকে আর বলতে পারেনি ওর কষ্টের কথা। ভালবাসার নামে বিভীষিকাময় রাত কাটতে থাকে ওর। হানিমুন তো দূরের কথা নিদেন পক্ষে ভিক্টোরিয়া পর্যন্ত ঘুরতে যায়নি বিয়ের পরে। রাতে বিছানায় সৌমেনের বলপ্রয়োগ ভালবাসাকে ধীরে ধীরে সহ্য করার চেষ্টা করতে থাকে।
সৌমেনের ব্যবসার কাজে সিঙ্গাপুর যেতে হয় মাসখানেকের জন্য। বুড়ি শাশুড়ি-মায়ের দেখভালের জন্য রেখে যায় সুনয়নাকে। এরপর এদেশ-ওদেশ ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়ে সৌমেন। স্ত্রীকে নিয়ে যাবার কোন কথাই ওঠে না। মাঝে মাঝে ফেরে বাড়িতে আর তখন ওই একইরকম অত্যাচার। শারীরিক, মানসিক বলপ্রয়োগ। ভালবাসার নামে শুধু কামনা চরিতার্থ করা। এর মধ্যে দু-দুবার অ্যাবরশন হয়ে গেছে ওর। ডাক্তার বলেছেন শরীর খুব দুর্বল, অপুষ্টিতে ভুগছে। এই অবস্থায় বাচ্চা হবার ধকল ও নিতে পারবে না। তাছাড়া বাচ্চার জন্য ওদের আরো কিছু বেশি সময় একসাথে থাকা প্রয়োজন। সৌমেন মাকে একলা রেখে বৌ নিয়ে যাবে না। সে মায়ের সঙ্গেই থাকবে। ও তো আসছে যখনই সুযোগ পাচ্ছে ব্যবসার ফাঁকে। এই রাতগুলোর ভয়ে সুনয়নাও আর ওর সাথে যাবার কথা বলে না। শাশুড়ি-মা মানুষটি খারাপ নয়, ওকে কোন কাজেই বাধা দেন না। তাকে নিয়েই ওর জীবন বেশ কেটে যেতে থাকে।
এভাবে কেটে যাচ্ছিল দিন-মাস-বছর একটা একটা করে। এরমধ্যে বাবাও হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলেন। মা আর বুড়ি শাশুড়ি-মা এদের দায়িত্ব এখন ওর ঘাড়ে, দুজনকে নিয়ে নিজের মতো করে ভাল থাকার চেষ্টা করছিল। আজকাল সৌমেনের বাড়ি আসা আরো অনেক কমে গেছে। ব্যবসা বড় হয়েছে। আজ গুজরাট, কাল মহারাষ্ট্র ছুটছে। কোলকাতায় ব্যবসার বাজার একদম ভাল না। তাই কোলকাতায় আসার সময়ও বের করতে চায় না। সুনয়নাও বিশেষ আমল দেয় না। যন্ত্রণা ছাড়া ভালবাসার অনুভূতি তো কোনদিন পেল না। শারীরিক চাহিদার ওই বীভৎস রূপ ওর কাছে দুঃস্বপ্ন ছাড়া আর কিছু নয়। তবুও কেমন একটা মায়া পড়ে গেছে লোকটার ওপরে, তার মায়ের ওপরে। ছেড়ে যেতে পারেনি এই সংসারটাকে। আর যেতই বা কোথায়? এই সমাজে একা মেয়েমানুষ তাতে রোজগার নেই। মেনে নেওয়া আর মানিয়ে নেওয়াই তো তার ভবিতব্য।
সুনয়নার শ্বশুরবাড়িতে বহুদিন ধরে দুধ দিতেন গোপীকাকা। আদতে বিহারের মজঃফরপুরের বাসিন্দা হলেও দীর্ঘকাল কোলকাতায় থেকে এখানকার লোক হয়ে গেছেন। সুন্দর বাংলা বলেন। শুনলে বোঝাই যায় না এটা তার মাতৃভাষা নয়। মানুষটা বড় ভাল মনের। ওদের পরিবারের একেবার কাছের লোকের মতো হয়ে গেছিলেন। বহুদিনের সম্পর্ক। আপদে বিপদে সবসময় পাশে থাকতেন। নিত্যদিনের ছোট ছোট প্রয়োজনে উনি ছিলেন ভরসা। যে কোন অসুবিধায় সুনয়না ওনার দ্বারস্থ হতো।
কয়েকদিন গোপীকাকার কোন খোঁজ নেই। বারবার ফোন করেও, শুধু রিং হয়ে যাচ্ছে। সুনয়না বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ল। এমন তো হবার কথা নয়। কেমন যেন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে সে। দিনপাঁচেক এভাবেই কাটল। তারপর একদিন গোপীকাকার ফোন। তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এখন বাড়িতে সম্পূর্ণ বেডরেষ্ট। কাল থেকে তার ছেলে বিলাস দুধ পৌঁছে দেবে ওদের বাড়ি। তবে দুপুরে না, এবার থেকে সন্ধের সময় ও দুধ দিতে যাবে। আর সুবিধা-অসুবিধা কোন প্রয়োজনে ওকে বলতে যেন দ্বিধা না করে, সে তার বাপের মতো সবটাই সামলে নেবে। একটু ক'দিন চালিয়ে নিতে হবে গোপীকাকা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে না ওঠা পর্যন্ত।
পরের দিন এক সুদর্শন নব্যযুবক বাড়ির সামনে বাইক নিয়ে এসে দাঁড়াল। তারপর ডিকি থেকে একটা রুমালে মোড়া প্লাস্টিকের বোতল বের করে ভিতরে ঢুকে কলিংবেলে চাপ দিল। সুনয়না দরজার পর্দার আড়াল থেকে দেখছিল। এই তাহলে গোপীকাকার ছেলে বিলাস। কে বলবে ও দুধওয়ালা। শ্যামলা রঙে সুঠাম লম্বা চেহারা। একবার দেখলে আবার একবার ঘাড় ঘুরিয়ে লোকে তাকাবেই। শরীর দেখে বোঝাই যাচ্ছে এ ছেলে ঘরে কম জিমে বেশি সময় কাটায়। শক্ত শরীরটার ওপর টাইট গেঞ্জি পেশিগুলোকে আরও স্পষ্ট করেছে। দুধের বোতলটা যাতে তার ওই মাচো ইমেজ নষ্ট না করে তাই এত লুকিয়েচুরিয়ে আনা। আবার কলিংবেলে চাপ দেয় বিলাস। সুনয়নার সম্বিত ফেরে। তাড়াতাড়ি বের হয়ে একটা বড় বাটি নিয়ে দুধটা ঢেলে বোতল ফেরত দেয় বিলাসকে। এক অসম্ভব আকর্ষণ ছেলেটার। সুনয়না একভাবে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। বিলাস বলে "আর কিছু বলবেন বৌদি? বাবা বলেছে আর কিছু প্রয়োজন হলে আমাকে বলতে।" সুনয়নার অস্ফুট উত্তর "না"।
বিলাস বেরিয়ে যায় গেট থেকে। এক অসম্ভব আকর্ষণে সুনয়না তাকিয়ে থাকে সেই দিকে। এই প্রথম কাউকে দেখে সুনয়নার এত উতলা লাগছে মনের মধ্যে। প্রথম দেখাতেই শরীরে কী ভীষণ আন্দোলন। ছটফট করছে যেন ওর প্রতিটি শিরা উপশিরা। বহুদিনের শরীরের খিদে যেন ছুটে গিয়ে জাপটে ধরতে চাইছে অচেনা ছেলেটিকে। এসব কী ভাবছে সে? দুধের পাত্রটা গ্যাসের আগুনে সিমে বসিয়ে ছুটে বাথরুমে ঢোকে ও। বেসিনের সামনে দাঁড়িয়ে চোখে-মুখে জলের ঝাপটা দিতে থাকে। তাকিয়ে দেখে আয়নাতে নিজেকে। এত কামনা বাসা বেঁধেছে ওর মধ্যে। পথেঘাটে কত লোকের সাথেই তো পরিচয় হয়, কথা হয়। কিন্তু এমন তো কোনদিনও মনে হয়নি। তবে এই ছেলেটিকে দেখে ওর এমন মনে হল কেন? এত আকর্ষণ ছেলেটির! কীভাবে তা অস্বীকার করবে সুনয়না।
বিলাস বয়সে হয়তো সুনয়নার কাছাকাছি হবে। গ্র্যাজুয়েশনের পর কয়েক বছর চাকরির চেষ্টা করে কিছুই ফল হয়নি। সারাদিন বন্ধুবান্ধবের সাথে বাইক নিয়ে ঘোরা, আড্ডা আর শরীরচর্চার নামে দীর্ঘক্ষণ জিমে কাটানো এই ছিল জীবন। গোপীবাবু জোর করেই ছেলেকে ব্যবসায় নামতে বাধ্য করেছেন। সারাজীবন বসে বসে তো আর চলতে পারে না। কিন্ত লোকের টিটকিরির লজ্জায় এ কাজে তার সায় ছিল না। আশেপাশের বাড়িগুলোয় যাও-বা লুকিয়ে টুক করে কাজ সেরে আসা যায় কিন্তু ও বাড়ি তো অনেকটা দূর, তাই ওই রুমালে মুড়ে বোতল আনার মতো সাবধানী পদক্ষেপ। আর এখন বাবা অসুস্থ হওয়ায় দায়িত্ব বেড়ে গেছে। রোজ আসতে হচ্ছে সুনয়নাদের বাড়ি।
এভাবেই চলতে থাকে পনেরো দিন। মাঝে দ্বিরাগমনে বাপের বাড়ি ঘুরে এসেছে সুনয়না। মা মেয়েকে বুঝিয়েছে কীভাবে সংসার গুছিয়ে নিতে হয়, মানিয়ে নিতে হয় কত। এখন ওটাই ওর আসল বাড়ি, এ বাড়িতে সুনয়না এখন অতিথি। ও মাকে আর বলতে পারেনি ওর কষ্টের কথা। ভালবাসার নামে বিভীষিকাময় রাত কাটতে থাকে ওর। হানিমুন তো দূরের কথা নিদেন পক্ষে ভিক্টোরিয়া পর্যন্ত ঘুরতে যায়নি বিয়ের পরে। রাতে বিছানায় সৌমেনের বলপ্রয়োগ ভালবাসাকে ধীরে ধীরে সহ্য করার চেষ্টা করতে থাকে।
সৌমেনের ব্যবসার কাজে সিঙ্গাপুর যেতে হয় মাসখানেকের জন্য। বুড়ি শাশুড়ি-মায়ের দেখভালের জন্য রেখে যায় সুনয়নাকে। এরপর এদেশ-ওদেশ ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়ে সৌমেন। স্ত্রীকে নিয়ে যাবার কোন কথাই ওঠে না। মাঝে মাঝে ফেরে বাড়িতে আর তখন ওই একইরকম অত্যাচার। শারীরিক, মানসিক বলপ্রয়োগ। ভালবাসার নামে শুধু কামনা চরিতার্থ করা। এর মধ্যে দু-দুবার অ্যাবরশন হয়ে গেছে ওর। ডাক্তার বলেছেন শরীর খুব দুর্বল, অপুষ্টিতে ভুগছে। এই অবস্থায় বাচ্চা হবার ধকল ও নিতে পারবে না। তাছাড়া বাচ্চার জন্য ওদের আরো কিছু বেশি সময় একসাথে থাকা প্রয়োজন। সৌমেন মাকে একলা রেখে বৌ নিয়ে যাবে না। সে মায়ের সঙ্গেই থাকবে। ও তো আসছে যখনই সুযোগ পাচ্ছে ব্যবসার ফাঁকে। এই রাতগুলোর ভয়ে সুনয়নাও আর ওর সাথে যাবার কথা বলে না। শাশুড়ি-মা মানুষটি খারাপ নয়, ওকে কোন কাজেই বাধা দেন না। তাকে নিয়েই ওর জীবন বেশ কেটে যেতে থাকে।
এভাবে কেটে যাচ্ছিল দিন-মাস-বছর একটা একটা করে। এরমধ্যে বাবাও হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলেন। মা আর বুড়ি শাশুড়ি-মা এদের দায়িত্ব এখন ওর ঘাড়ে, দুজনকে নিয়ে নিজের মতো করে ভাল থাকার চেষ্টা করছিল। আজকাল সৌমেনের বাড়ি আসা আরো অনেক কমে গেছে। ব্যবসা বড় হয়েছে। আজ গুজরাট, কাল মহারাষ্ট্র ছুটছে। কোলকাতায় ব্যবসার বাজার একদম ভাল না। তাই কোলকাতায় আসার সময়ও বের করতে চায় না। সুনয়নাও বিশেষ আমল দেয় না। যন্ত্রণা ছাড়া ভালবাসার অনুভূতি তো কোনদিন পেল না। শারীরিক চাহিদার ওই বীভৎস রূপ ওর কাছে দুঃস্বপ্ন ছাড়া আর কিছু নয়। তবুও কেমন একটা মায়া পড়ে গেছে লোকটার ওপরে, তার মায়ের ওপরে। ছেড়ে যেতে পারেনি এই সংসারটাকে। আর যেতই বা কোথায়? এই সমাজে একা মেয়েমানুষ তাতে রোজগার নেই। মেনে নেওয়া আর মানিয়ে নেওয়াই তো তার ভবিতব্য।
সুনয়নার শ্বশুরবাড়িতে বহুদিন ধরে দুধ দিতেন গোপীকাকা। আদতে বিহারের মজঃফরপুরের বাসিন্দা হলেও দীর্ঘকাল কোলকাতায় থেকে এখানকার লোক হয়ে গেছেন। সুন্দর বাংলা বলেন। শুনলে বোঝাই যায় না এটা তার মাতৃভাষা নয়। মানুষটা বড় ভাল মনের। ওদের পরিবারের একেবার কাছের লোকের মতো হয়ে গেছিলেন। বহুদিনের সম্পর্ক। আপদে বিপদে সবসময় পাশে থাকতেন। নিত্যদিনের ছোট ছোট প্রয়োজনে উনি ছিলেন ভরসা। যে কোন অসুবিধায় সুনয়না ওনার দ্বারস্থ হতো।
কয়েকদিন গোপীকাকার কোন খোঁজ নেই। বারবার ফোন করেও, শুধু রিং হয়ে যাচ্ছে। সুনয়না বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ল। এমন তো হবার কথা নয়। কেমন যেন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে সে। দিনপাঁচেক এভাবেই কাটল। তারপর একদিন গোপীকাকার ফোন। তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এখন বাড়িতে সম্পূর্ণ বেডরেষ্ট। কাল থেকে তার ছেলে বিলাস দুধ পৌঁছে দেবে ওদের বাড়ি। তবে দুপুরে না, এবার থেকে সন্ধের সময় ও দুধ দিতে যাবে। আর সুবিধা-অসুবিধা কোন প্রয়োজনে ওকে বলতে যেন দ্বিধা না করে, সে তার বাপের মতো সবটাই সামলে নেবে। একটু ক'দিন চালিয়ে নিতে হবে গোপীকাকা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে না ওঠা পর্যন্ত।
পরের দিন এক সুদর্শন নব্যযুবক বাড়ির সামনে বাইক নিয়ে এসে দাঁড়াল। তারপর ডিকি থেকে একটা রুমালে মোড়া প্লাস্টিকের বোতল বের করে ভিতরে ঢুকে কলিংবেলে চাপ দিল। সুনয়না দরজার পর্দার আড়াল থেকে দেখছিল। এই তাহলে গোপীকাকার ছেলে বিলাস। কে বলবে ও দুধওয়ালা। শ্যামলা রঙে সুঠাম লম্বা চেহারা। একবার দেখলে আবার একবার ঘাড় ঘুরিয়ে লোকে তাকাবেই। শরীর দেখে বোঝাই যাচ্ছে এ ছেলে ঘরে কম জিমে বেশি সময় কাটায়। শক্ত শরীরটার ওপর টাইট গেঞ্জি পেশিগুলোকে আরও স্পষ্ট করেছে। দুধের বোতলটা যাতে তার ওই মাচো ইমেজ নষ্ট না করে তাই এত লুকিয়েচুরিয়ে আনা। আবার কলিংবেলে চাপ দেয় বিলাস। সুনয়নার সম্বিত ফেরে। তাড়াতাড়ি বের হয়ে একটা বড় বাটি নিয়ে দুধটা ঢেলে বোতল ফেরত দেয় বিলাসকে। এক অসম্ভব আকর্ষণ ছেলেটার। সুনয়না একভাবে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। বিলাস বলে "আর কিছু বলবেন বৌদি? বাবা বলেছে আর কিছু প্রয়োজন হলে আমাকে বলতে।" সুনয়নার অস্ফুট উত্তর "না"।
বিলাস বেরিয়ে যায় গেট থেকে। এক অসম্ভব আকর্ষণে সুনয়না তাকিয়ে থাকে সেই দিকে। এই প্রথম কাউকে দেখে সুনয়নার এত উতলা লাগছে মনের মধ্যে। প্রথম দেখাতেই শরীরে কী ভীষণ আন্দোলন। ছটফট করছে যেন ওর প্রতিটি শিরা উপশিরা। বহুদিনের শরীরের খিদে যেন ছুটে গিয়ে জাপটে ধরতে চাইছে অচেনা ছেলেটিকে। এসব কী ভাবছে সে? দুধের পাত্রটা গ্যাসের আগুনে সিমে বসিয়ে ছুটে বাথরুমে ঢোকে ও। বেসিনের সামনে দাঁড়িয়ে চোখে-মুখে জলের ঝাপটা দিতে থাকে। তাকিয়ে দেখে আয়নাতে নিজেকে। এত কামনা বাসা বেঁধেছে ওর মধ্যে। পথেঘাটে কত লোকের সাথেই তো পরিচয় হয়, কথা হয়। কিন্তু এমন তো কোনদিনও মনে হয়নি। তবে এই ছেলেটিকে দেখে ওর এমন মনে হল কেন? এত আকর্ষণ ছেলেটির! কীভাবে তা অস্বীকার করবে সুনয়না।
বিলাস বয়সে হয়তো সুনয়নার কাছাকাছি হবে। গ্র্যাজুয়েশনের পর কয়েক বছর চাকরির চেষ্টা করে কিছুই ফল হয়নি। সারাদিন বন্ধুবান্ধবের সাথে বাইক নিয়ে ঘোরা, আড্ডা আর শরীরচর্চার নামে দীর্ঘক্ষণ জিমে কাটানো এই ছিল জীবন। গোপীবাবু জোর করেই ছেলেকে ব্যবসায় নামতে বাধ্য করেছেন। সারাজীবন বসে বসে তো আর চলতে পারে না। কিন্ত লোকের টিটকিরির লজ্জায় এ কাজে তার সায় ছিল না। আশেপাশের বাড়িগুলোয় যাও-বা লুকিয়ে টুক করে কাজ সেরে আসা যায় কিন্তু ও বাড়ি তো অনেকটা দূর, তাই ওই রুমালে মুড়ে বোতল আনার মতো সাবধানী পদক্ষেপ। আর এখন বাবা অসুস্থ হওয়ায় দায়িত্ব বেড়ে গেছে। রোজ আসতে হচ্ছে সুনয়নাদের বাড়ি।
ক্রমশ…
No comments:
Post a Comment