প্রাপ্তমনস্কদের পত্রিকা~ নাম নয় মানই বিবেচ্য

মুনিয়াকে বিজিত | অজয় দেবনাথ ও সুচরিতা চক্রবর্তী

  বাতায়ন /যুগলবন্দি /৩য় বর্ষ/১ ৪ তম/মণিজিঞ্জির সান্যাল সংখ্যা / ২৩শে শ্রাবণ , ১৪৩২ মণিজিঞ্জির সান্যাল সংখ্যা | যুগলবন্দি |   অজয় দেবনাথ ও  ...

Monday, May 19, 2025

বিশ্ব একটি ক্রান্তিলগ্নে দাঁড়িয়ে আছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন (প্রকৃতি দহন)-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্ভাব্য প্রযুক্তি ও প্রকৃতিভিত্তিক উপায় | শ্যামল প্রসাদ চৌধুরী

বাতায়ন/দহন/প্রবন্ধ/৩য় বর্ষ/৬ষ্ঠ সংখ্যা/১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
দহন | প্রবন্ধ
শ্যামল প্রসাদ চৌধুরী
 
বিশ্ব একটি ক্রান্তিলগ্নে দাঁড়িয়ে আছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন (প্রকৃতি দহন)-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্ভাব্য প্রযুক্তি ও প্রকৃতিভিত্তিক উপায়

"বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর প্রভাব আমাদের জীবনযাত্রার ওপর ক্রমেই মারাত্মক আকার ধারণ করছে। এই সমস্যার সমাধান হিসেবে এক অদ্ভুত পরিকল্পনা সামনে এসেছে। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘জিয়োফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’-এ। পৃথিবীকে ঠান্ডা করতে বায়ুমণ্ডলে ছড়ানো হবে প্রায় ৫০ লাখ টন হিরার গুঁড়ো।"


জলবায়ু পরিবর্তন মানব সভ্যতার উত্থান এবং পতনের জন্য আংশিকভাবে দায়ী।
জলবায়ু পরিবর্তন আজ আমাদের মুখোমুখি হওয়া সবচেয়ে জটিল সমস্যাগুলির মধ্যে একটি। এর সাথে বিজ্ঞান, অর্থনীতি, সমাজ, রাজনীতি এবং নৈতিক ও নীতিগত প্রশ্ন - অনেক দিক জড়িত এবং এটি একটি বিশ্বব্যাপী জ্বলন্ত সমস্যা

 
বায়ুমণ্ডলে এত তাপ আটকে থাকার কারণে, বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা বাড়ছে, এমনকি মেরু অঞ্চলে এন্টার্কটিকা ও আর্কটিকেও। বর্ধিত তাপমাত্রার ফলে বরফ এবং হিমবাহ গলে যায় যা পুনরায় মিথেন নির্গত করে, একটি বৃত্তাকার প্রভাব তৈরি করে যা গ্রহকে আরও উষ্ণ করে এবং আরও হিমবাহ গলতে সহায়তা করে। জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে ক্রমবর্ধমান সচেতনতা সত্ত্বেও, আমাদের গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন অবিরাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৩ সালে, মানব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের দৈনিক মাত্রা প্রতি মিলিয়নে ৪০০ অংশ (400 ppm) ছাড়িয়ে গেছে। আজ এই মূহুর্তে বায়ুমণ্ডলে কার্বন  ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ প্রায় 435পিপিএম । কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন, জলীয় বাষ্প, নাইট্রোজেনের যৌগ তাপ-আটকানো গ্রিনহাউস গ্যাস যা সাম্প্রতিক বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রাথমিক চালিকাশক্তি।
 
তাই এই মুহূর্তে যদি আমরা সমস্ত গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন বন্ধ করে দিই, তবুও বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তন ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রভাবিত করতে থাকবে। ইতিহাস জুড়ে, মানুষ এবং সমাজ জলবায়ু এবং চরম পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে এবং বিভিন্ন মাত্রায় সাফল্যের সাথে মোকাবিলা করেছে। বর্তমান আমাদের জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদেরও খাপ খাইয়ে নিতে হবে এবং অ্যাডাপ্টিভ স্ট্র্যাটেজি তৈরি করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন একটি বিশ্বব্যাপী সমস্যা হলেও, এটি স্থানীয় পর্যায়ে অনুভূত হয়। তাই স্থানীয় সরকারগুলি অভিযোজনের প্রথম সারিতে রয়েছে। বিশ্বজুড়ে প্রতিটি রাষ্ট্র এবং স্থানীয় সম্প্রদায়গুলি তাদের নিজস্ব জলবায়ু সমস্যা সমাধানের দিকে মনোনিবেশ করছে। বন্যার প্রতিরক্ষা তৈরি, তাপপ্রবাহ এবং উচ্চ তাপমাত্রার জন্য পরিকল্পনা, বন্যা, এলনিনো, তাপপ্রবাহ, ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার এবং ঝড়ের জল মোকাবিলা জন্য উন্নত গ্রিন বিল্ডিং ও নিষ্কাশনকারী ফুটপাথ স্থাপন এবং জল সঞ্চয় ব্যবহার উন্নত করা, সবুজ অর্থনীতি ও সবুজ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার জন্য কেন্দ্রীয়, রাজ্য, স্থানীয় ও ব্যক্তিগত স্তরে প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। যেহেতু আমরা ইতিমধ্যেই (কপ চুক্তি স্বাক্ষর ও এসডিজি 13) জলবায়ু পরিবর্তনের কিছু স্তরের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তাই জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা মোকাবিলার জন্য পরিকল্পনা ও এর বাস্তবায়নে কিছু পদ্ধতির উপর দৃষ্টি নিবন্ধন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যেমন সৌর শক্তি, বায়ু শক্তি, গ্রিন হাইড্রোজেন, renewable energy-র ব্যবহার বেড়েছে। বায়ুমণ্ডলে তাপ-আটকে থাকা গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন হ্রাস করা এবং স্থিতিশীল করা *("প্রশমন");* বা জিরো এমিশন-র জন্য সবুজ শক্তি, কার্বন ক্যাপচার, বনানীকরণ ও নেচার বেসড সলিউশন-র উদ্ভাবন করা প্রয়োজন। পাইপলাইনে থাকা জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া ও "অভিযোজন প্রকল্প গ্রহণ করা। লক্ষ্য হল পৃথিবীর জলবায়ুর সাথে উল্লেখযোগ্য মানবিক হস্তক্ষেপ এড়ানো, "একটি সময়সীমার মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাসের স্তর স্থিতিশীল করা যাতে বাস্তুতন্ত্রগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে প্রাকৃতিকভাবে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। খাদ্য উৎপাদন হুমকির সম্মুখীন যেনো না হয় তা নিশ্চিত করা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নকে টেকসইভাবে এগিয়ে যেতে সক্ষম করা"। জলবায়ু পরিবর্তন হ্রাস - এর মধ্যে রয়েছে বায়ুমণ্ডলে তাপ-আটকানো গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রবাহ হ্রাস করা। এই গ্যাসগুলির উৎস হ্রাস করে (উদাহরণস্বরূপ, বিদ্যুৎ, তাপ বা পরিবহনের জন্য জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো) অথবা এই গ্যাসগুলি (যেমন মহাসাগর, বন এবং মাটি) জমা এবং সংরক্ষণকারী "সিঙ্ক"গুলিকে উন্নত করা অর্থাৎ কার্বন সিঙ্ক বাড়ানো।
 
অভিযোজন - পরিবর্তিত জলবায়ুতে জীবনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া - এর মধ্যে রয়েছে প্রকৃত বা প্রত্যাশিত ভবিষ্যতের জলবায়ুর সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া। লক্ষ্য হল জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকারক প্রভাব (যেমন সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, আরও তীব্র চরম আবহাওয়ার ঘটনা, বা খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা) থেকে আমাদের ঝুঁকি হ্রাস করা। এর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত সম্ভাব্য উপকারী সুযোগগুলির সর্বাধিক ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে (উদাহরণস্বরূপ, দীর্ঘতর ক্রমবর্ধমান ঋতু বা কিছু অঞ্চলে বর্ধিত ফলন)।
 
জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃসরকারি প্যানেলের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, অভিযোজন এবং ঝুঁকিপূর্ণতা সংক্রান্ত ২০১৪ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, বিভিন্ন স্তরের সরকারগুলিও অভিযোজনে আরও উন্নত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনকে উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে: আমরা যে ক্রমবর্ধমান চরম দুর্যোগগুলি দেখছি তা কীভাবে পরিচালনা করা যায়, উপকূলরেখাগুলি কীভাবে রক্ষা করা যায় এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি কীভাবে মোকাবেলা করা যায়, ভূমি ও বন কীভাবে সর্বোত্তমভাবে পরিচালনা করা যায়, খরা কীভাবে মোকাবেলা করা যায় এবং পরিকল্পনা কীভাবে করা যায়, নতুন ফসলের জাত কীভাবে বিকাশ করা যায় এবং কীভাবে শক্তি এবং জনসাধারণের অবকাঠামো ও রক্ষা করা যায় এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করা ও সমাধানের পন্থা অবলম্বন করা।
 
পৃথিবীর উপর নজর এবং পৃথিবীর জলবায়ু সম্পর্কে জ্ঞানের ভাণ্ডার নিয়ে নাসা জলবায়ু বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম। জলবায়ু পরিবর্তন বোঝার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তিশালী বৈজ্ঞানিক তথ্য সরবরাহ করে যাচ্ছে নাসার বিজ্ঞানীরা। উদাহরণস্বরূপ, সংস্থার গ্র্যাভিটি রিকভারি অ্যান্ড ক্লাইমেট এক্সপেরিমেন্ট (GRACE),-র ফলো-অন মিশন (GRACE-FO), আইস, ক্লাউড অ্যান্ড ল্যান্ড এলিভেশন স্যাটেলাইট (ICESat) এবং ICESat-2 মিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্য পৃথিবীর বিশাল বরফের চাদরে দ্রুত পরিবর্তন দেখিয়েছে নাসা। সেন্টিনেল-6 মাইকেল ফ্রিলিচ এবং জেসন সিরিজের মিশনগুলি ১৯৯২ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী সমুদ্রপৃষ্ঠের ক্রমবর্ধমান স্তর নথিভুক্ত করা হয়েছে নাসার পক্ষ থেকে। NASA বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে - জনসাধারণ, নীতি-নির্ধারক এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী এবং বিশ্বব্যাপী বৈজ্ঞানিক ও পরিকল্পনা সংস্থাগুলির কাছে জলবায়ু সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য উপলব্ধ করে। জলবায়ু নীতি নির্ধারণ করা বা জলবায়ু পরিবর্তনের সমাধান সুপারিশ করা নাসার ভূমিকা নয়। নাসা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন মূল্যায়ন করতে, ভবিষ্যদ্বাণী করতে এবং প্রতিক্রিয়া জানাতে বিশ্বকে সহায়তা করছে। এই মার্কিন অংশীদার সংস্থাগুলির মধ্যে রয়েছে কৃষি বিভাগ, পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা এবং জ্বালানি বিভাগ, যাদের প্রত্যেকেরই তাদের দক্ষতার ক্ষেত্রের উপর নির্ভর করে আলাদা ভূমিকা রয়েছে। যদিও NASA-র মূল লক্ষ্য শক্তি-প্রযুক্তি গবেষণা এবং উন্নয়ন নয়, তবুও আমাদের চাহিদা পূরণের জন্য শক্তির অন্যান্য উৎস খুঁজে বের করার জন্য ও সংস্থাটির চারপাশে এবং বিভিন্ন অংশীদার এবং সহযোগীদের সাথে কাজকরে যাচ্ছে। নাসার মতে "আমরা মানবজাতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলি সমাধানের জন্য উদ্ভাবনের শক্তিতে বিশ্বাস করি - এবং একটি বাস্তবসম্মত, স্থিতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শক্তি রূপান্তরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।,"
 
Spraying diamond dust to cool Earth:
 
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর প্রভাব আমাদের জীবনযাত্রার ওপর ক্রমেই মারাত্মক আকার ধারণ করছে। এই সমস্যার সমাধান হিসেবে এক অদ্ভুত পরিকল্পনা সামনে এসেছে। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘জিয়োফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’-এ। পৃথিবীকে ঠান্ডা করতে বায়ুমণ্ডলে ছড়ানো হবে প্রায় ৫০ লাখ টন হিরার গুঁড়ো।
 
এটি একদিক থেকে অবাস্তব মনে হলেও, এক গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে যে, এই প্রক্রিয়া আমাদের পৃথিবীর উষ্ণতা কমিয়ে দিতে পারে। প্রতি বছর প্রায় ৫০লাখ টন হিরার গুঁড়ো বায়ুমণ্ডলে ছড়ালে সূর্যের তীব্র তাপমাত্রা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। গবেষণায় বলা হয়েছে, চকচকে হিরার গুঁড়ো সূর্যের রশ্মি প্রতিফলিত করে তা আবার বায়ুমণ্ডলের বাইরে পাঠিয়ে দেবে। এতে পৃথিবীর ওপর পড়া তাপের পরিমাণ কমবে। গবেষকদের মতে, যদি এই প্রক্রিয়া প্রায় ৪৫বছর ধরে চালানো হয়, তবে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা প্রায় ২.৯ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত কমে আসতে পারে। কিন্তু এটি বাস্তবায়িত করা যতটা সহজ মনে হচ্ছে ততটা নয়।
 
এই প্রক্রিয়াটির যেমন খরচসাপেক্ষ তেমনই শ্রমসাপেক্ষ। গবেষকদের অনুমান, ৪৫বছর ধরে হিরার গুঁড়ো ছড়িয়ে পৃথিবীর তাপমাত্রা কমাতে প্রায় ২০০লাখ কোটি ডলার খরচ হতে পারে। অনেকেই মনে করছেন, শুধুমাত্র অনুমানের ওপর ভিত্তি করে এত টাকা খরচ করা অযৌক্তিক। তবে গবেষকদের মতে, পৃথিবীর জলবায়ু সংকট যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা মোকাবিলা করার জন্য এই খরচ কিছুই নয়।
 
এতে পৃথিবীর ওপর পড়া তাপের পরিমাণ কমবে। গবেষকদের মতে, যদি এই প্রক্রিয়া প্রায় ৪৫বছর ধরে চালানো হয়, তবে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা প্রায় ২.৯ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত কমে আসতে পারে। কিন্তু এটি বাস্তবায়িত করা যতটা সহজ মনে হচ্ছে ততটা নয়। এখানে উল্লেখযোগ্য যে, এই পরিকল্পনাটি একটি প্রক্রিয়া ‘স্ট্রাটোস্ফিয়ারিক অ্যারোসল ইনজেকশন’ নামে পরিচিত। এটি মূলত সূর্যালোককে প্রতিফলিত করার মাধ্যমে পৃথিবীর তাপমাত্রা কমানোর একটি উপায়। এই প্রক্রিয়াটি ‘সোলার জিওইঞ্জিনিয়ারিং’-র অন্তর্গত। এতে সূর্যের আলোকে প্রতিফলিত করে এবং তাপ শোষণ কমাতে স্ট্রাটোস্ফিয়ারে ক্ষুদ্র কণা ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
 
চলুন এবার দেখি, কীভাবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে পারে এবং এর ফলাফল কী হতে পারে এ নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন।
 
প্রতি বছর প্রায় ৫০লাখ টন হিরার গুঁড়ো বায়ুমণ্ডলে ছড়ালে সূর্যের তীব্র তাপমাত্রা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে যে, হিরার গুঁড়োর পাশাপাশি সালফার-সহ অন্যান্য অ্যারোসলও বায়ুমণ্ডলে ছড়ালে তার প্রভাব কেমন হতে পারে, তাও যাচাই করা হবে। মূলত কোন উপাদান সবচেয়ে ভালো কাজ করতে পারে তা নির্ধারণ করতে পরীক্ষানিরীক্ষা চালানো হয়। অ্যারোসলগুলি সূর্যের আলোকে কতটা ভালোভাবে প্রতিফলিত করে এবং কতক্ষণ বায়ুতে ভেসে থাকতে পারে তা গবেষণার মাধ্যমে দেখা হচ্ছিল। সেইসঙ্গে কোন ধূলিকণা তাড়াতাড়ি জমাট বাঁধছে, তাও পরীক্ষা করে দেখা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, হিরার গুঁড়ো জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে এবং সবচেয়ে বেশি সময় ধরে বায়ুমণ্ডলে ভেসে থাকতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে, সালফারের মতো অন্যান্য অ্যারোসল অ্যাসিড বৃষ্টিতে পরিণত হলেও হিরার গুঁড়ো এড়াতে পেরেছে। তাই হিরা গুঁড়োকে সালফারের চেয়ে ভালো ব্যবহারিক বিকল্প হিসেবে দেখা যেতে পারে। তবে, এই ধরনের পরীক্ষা করার আগে পৃথিবীর পরিবেশগত এবং সামাজিক প্রভাব পর্যালোচনা করা জরুরি। কারণ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং তার সঙ্গে মোকাবিলার উপায়গুলো নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে নানাবিধ পূর্বাভাস এবং সতর্কতা রয়েছে। এই পরিকল্পনায় যেমন প্রচুর অর্থের প্রয়োজন, তেমনই এর কার্যকারিতা এবং এর সম্ভাব্য বিপজ্জনক দিকগুলোও বিবেচনা করতে হবে। এই ধরনের পরিকল্পনা কার্যকর হলে তা আমাদের পরিবেশকে বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে পারে, কিন্তু সঠিকভাবে এবং সঠিক গবেষণা ছাড়া এগিয়ে গেলে তার ফলাফল কতটা ভয়াবহ হতে পারে, তা বলা মুশকিল। আমাদের উচিত জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্ভাব্য সমস্ত উপায় পরীক্ষা করা ও প্রযুক্তি গত সমাধানের পন্থা অবলম্বন করা।
 
সমাপ্ত

No comments:

Post a Comment

অবকাশ—


Popular Top 10 (Last 7 days)