প্রাপ্তমনস্কদের পত্রিকা

মননশীল কলমকে উৎসাহ দিতে... পড়ুন, পড়ান, আপনার মূল্যবান মতামত দিন।

ডিভোর্স | স্বপ্ন ও বাস্তব

বাতায়ন/ডিভোর্স/ সম্পাদকীয় /৩য় বর্ষ/১০ম সংখ্যা/৯ই শ্রাবণ , ১৪৩২ ডিভোর্স | সম্পাদকীয় "কম্প্রোমাইজ করে কোনক্রমে কাটত সুখের খোলসের আড়ালে অত...

Saturday, July 26, 2025

মুনিয়াকে চিরসখা | অজয় দেবনাথ ও সুচরিতা চক্রবর্তী


 

বাতায়ন/ডিভোর্স/যুগলবন্দি/৩য় বর্ষ/১০ম সংখ্যা/৯ই শ্রাবণ, ১৪৩২
ডিভোর্স | যুগলবন্দি | অজয় দেবনাথ ও সুচরিতা চক্রবর্তী
অজয় দেবনাথ
 
মুনিয়াকে চিরসখা

"সুখে থাকার নমুনা তুমি অনেকদিন আগেই দিয়েছ, যেদিন তোমাকে আবার ছিঁড়েখুঁড়ে রক্তাক্ত করতে বলেছিলে। আদর্শ দম্পতি বটে! এই জন্যে তুমি প্রতীক্ষার সহ্যসীমা লঙ্ঘন করলে, শুধু এই জন্যে! হায় রে, সাগরেও জলের আকাল!"


"হ্যাঁ চলে যেতেই পারি তবে আমি কি সেই বিজিতকে পাবো যাকে ফেলে এসেছিলাম। তা হয়তো পাবো কিন্তু তুমি কী সেই পর্ণাকে পাবেসেই চঞ্চল টকেটিভ তন্বী পর্ণা। না পাবে না। এটা আমি হলফ করে বলতে পারি।"


মুনিয়া,
 

আচ্ছা, মুনিয়া পাখিকে কখনও পোষ মানাতে দেখেছ? বোধহয় কেউ পারেনি। দানা ছড়িয়ে রাখো, উড়ে আসবে, দানা খাবে আবার উড়ে চলে যাবে। এটাই পাখির ধর্ম। তার জন্য আছে মস্ত আকাশ— ক্ষুদ্র, তুচ্ছ দাঁড়ের পরোয়া করতে তার বয়েই গেছে। নইলে তোমার মেয়ের নাম বর্না রেখেই মহান ব্রতপালন করতে না! এ যেন কোমায় বাঁচিয়ে রাখা, অনেকটা জিন্দা লাশ।

 
যাইহোক, তোমার সুখে থাকার নমুনা তুমি অনেকদিন আগেই দিয়েছ, যেদিন তোমাকে আবার ছিঁড়েখুঁড়ে রক্তাক্ত করতে বলেছিলে। আদর্শ দম্পতি বটে! এই জন্যে তুমি প্রতীক্ষার সহ্যসীমা লঙ্ঘন করলে, শুধু এই জন্যে! হায় রে, সাগরেও জলের আকাল!
 
আমার চিঠি পেয়ে হয়তো অনেক কথা ভাববে, হয়তো-বা লিখবেও। কিন্তু… আমাকে সম্মোহনী বাণে বিদ্ধ করে এভাবে ফেলে রাখতে পারতে না। তোমার হালচাল দেখে কী মনে হচ্ছে জানো? হয় তুমি আমার সঙ্গে খেলা করছ নয়তো তোমার জীবনীশক্তি বাড়ন্ত। সবটাই শুধু অবদমিত মনের খিদে, যার সারবত্তা কিসসু নেই।
 
মুনিয়া… আমার মিষ্টি মুনিয়া… সত্যি যদি আমাকে ভালবাস, আমাকে চাও, তবে চলে এসো। অতীতকে ভুলে এবং মনে রেখে তোমাকেই করব গ্রহণ। আসবে না? কী গো… আমি যে তোমারই পথ চেয়ে…
 
তোমার বিজিত
 
যুগলবন্দি | সুচরিতা চক্রবর্তী ও অজয় দেবনাথ
সুচরিতা চক্রবর্তী
 
চির সখা
 
 
তোমার চিঠি পেয়েছি তা বেশ কয়েকদিন হলো। উত্তর লেখা নিয়ে একটু সংশয়ের মধ্যে ছিলাম। আসলে জীবনের প্রায় সব সুখ বোধহয় পাওয়া হয়ে গিয়েছে তাই হয়তো আবার তোমাকে টানাটানি করছি। আমাদের জীবন তো নদীর মতো প্রথম প্রথম কোনো আঘাতই গায়ে লাগে না বরং জেতার নেশায় ছুটতে থাকে আরো আরো পেতে ছুটতে ছুটতে অবশেষে মোহনায়। আর এই মোহনায় মেলার কিছু আগে থেকে নদী শান্ত হয়ে যায় খানিক। এই সময় মনে হয় কী পেলাম কী দিলাম বা এটা হলে ভাল হতো সেটা হলে আরো ভাল হতো। ভাগ্যের দোষ দিয়ে বোঝা হালকা করি, নিজের দোষ দেখি না। ঈশ্বর হাসেন। সত্যিই তো তোমাকে ভুলে যাওয়াই উচিৎ ছিল আমার কেবল এক অবৈধ অদৃশ্য সুতোয় টেনে রেখেছি নিজের দিকে। সুখের শুরু আর সমাপ্তি যে কোথায় তা বোধহয় বুঝিনি। সুখ যে কেবল এক অনুভব জীবনের এক অবস্থান তবে এর লোভ খুব বেশি। যেটা আমার ক্ষেত্রে ঘটেছে। আমি তো অনেক আগেই বলেছি একটা জীবন শুরু করো। এই ভাবে ক্ষয়ে যেও না। বিজিত, তুমি কোনদিন আমার কথার গুরুত্ব দাওনি। শুধু কি আমি তোমাকে অদৃশ্য সুতোয় আটকে রেখেছি? তুমি কি রাখনি? তোমার সুতোর টান এত বেশি যে আমি এ সংসারে পরিপূর্ণ নই। মন কেবল পালাই পালাই করে তোমার কাছে যেতে চায় কিন্তু নির্দোষ দু-জন মানুষ তাদের ভালবাসায় আমাকে আটকে দেয়। ছলনা আমি কারো সাথেই করছি না। না তোমার সাথে না আমার হাজব্যান্ডের সাথে ছলনা যদি করি তবে নিজের সাথে। তুমি হয়তো বিশ্বাস করবে না যে এমন একটা দিন নেই যেদিন তোমাকে মনে পড়ে না। নিজগৃহে আমি পরবাসী।
 
হ্যাঁ চলে যেতেই পারি তবে আমি কি সেই বিজিতকে পাবো যাকে ফেলে এসেছিলাম। তা হয়তো পাব কিন্তু তুমি কী সেই পর্ণাকে পাবে? সেই চঞ্চল টকেটিভ তন্বী পর্ণা। না পাবে না। এটা আমি হলফ করে বলতে পারি। এখন আমি বারবার পেছনের দিকে তাকানো, সাজানো সংসারে উদাসী, স্থূলকায় এক রমণী। যদি এই পর্ণাকে বুকে টেনে নিতে পারো তবে জানিও।
 
পর্ণা
(মুনিয়া)

No comments:

Post a Comment

সে কি তৃপ্ত— ?


Popular Top 10 (Last 7 days)