প্রাপ্তমনস্কদের পত্রিকা

ত্রিকোণ প্রেম | পারমিতা চ্যাটার্জি

বাতায়ন/ মাসিক/ছোটগল্প /৩য় বর্ষ/১৯ তম সংখ্যা/ ১৩ই ভাদ্র , ১৪৩২ ছোটগল্প পারমিতা চ্যাটার্জি   ত্রিকোণ প্রেম "আমি ওর কাছে গিয়ে ওর বুকে মাথ...

Thursday, August 28, 2025

ত্রিকোণ প্রেম | পারমিতা চ্যাটার্জি

বাতায়ন/মাসিক/ছোটগল্প/৩য় বর্ষ/১৯তম সংখ্যা/১৩ই ভাদ্র, ১৪৩২
ছোটগল্প
পারমিতা চ্যাটার্জি
 
ত্রিকোণ প্রেম

"আমি ওর কাছে গিয়ে ওর বুকে মাথা রেখে বললাম মানুষ ভালবাসে মানসিকতা দেখেআমি তোমার মতন মানুষকে ভাল না বেসে থাকতে পারব না শুধু একটু সময় চাই। সময় বেশিদিন লাগেনি একমাসের মধ্যে আমরা মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিলাম এখন আমি মা হতে চলেছি।"

মধুযা- অর্পণ তুই এখানে চোরের মতন দাঁড়িয়ে কী করছিস?

অর্পণ- প্রায় দু
-বছর পর এলি, তোর সাথে একবার দেখা করার লোভ সামলাতে পারলাম না
মধুযা- তা সামলাতে কে বলেছিল এলেই তো পারতিস
অর্পণ- হ্যাঁ পারতাম আসলে এ বাড়িতে আমি রিজেক্টেড হয়েছিলাম তো তাই আসতে ইতস্তত করছিলাম, শেষপর্যন্ত সব ভয় লজ্জা ত্যাগ করে তোর হলুদ গোলাপ নিয়ে চলে এলাম
মধুজা- জানিস আমার বিয়ের তারিখ, জন্মদিন সব অনুষ্ঠানে আমার বরও আমার জন্য হলুদ গোলাপ, একটা বড় চকোলেট আর একটা শাড়ি নিয়ে আসে
অর্পণ- এ কথা তো ছিল না এ তো শুধু  আমার দেওয়ার কথা
মধুজা- তা বললে কি হয় ও যে আমার স্বামী আমায় খুব ভালবাসে যে
অর্পণ- আর তুই?
মধুজা- আমিও ভালবেসেফেলেছি এমন একটা মানুষকে ভাল না বেসে কি থাকা যায়? ও তো তোর ব্যাপারে সব কথা জানে
অর্পণ- সব জেনে কী বলল?
মধুজা- বলল, এ তো হতেই পারে, ভালবাসা তো কোন অন্যায় নয়, আমি তোমার ওপর জোর করে স্বামীত্বের অধিকার খাটাতে চাই না তোমার মধ্যে যেদিন আমার সম্বন্ধে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকবে না সেদিন আমাকে বোলো।
অর্পণ- তুই কী বললি?
মধুজা- সত্যি কথা অর্পণ ও এই একটা কথায় আমার মনে হল এমন একটা মানুষকে ভাল না বেসে আমি থাকতে পারব না, আমি ওর কাছে গিয়ে ওর বুকে মাথা রেখে বললাম মানুষ ভালবাসে মানসিকতা দেখে, আমি তোমার মতন মানুষকে ভাল না বেসে থাকতে পারব না শুধু একটু সময় চাইসময় বেশিদিন লাগেনি একমাসের মধ্যে আমরা মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিলাম এখন আমি মা হতে চলেছি
অর্পণ- এটা নে তোর হলুদ গোলাপ আমার দেওয়া শেষবারের মতন
মধুজা- কেন? ভেতরে আয় চা খেয়ে যা তা না হলে আমি খুব রাগ করব
অর্পণ- আজ না-রে আরেকদিন এসে ঠিক খেয়ে যাব
মধুজা- আমি জানি তুই আর আসবি না তাই কয়েকটা কথা বলে রাখছি
অর্পণ- বল
মধুজা- মাসিমা খুব দুঃখী মানুষ একমাত্র তোকে আঁকড়ে ধরেই এতগুলো দিন পার করেছেন। মেসোশাইয়ের পেনশন আর নিজের স্কুলের চাকরি শুধু এইটুকু রোজগার থেকেই একটু একটু করে দোতলা বাড়ি করেছেন। আমাদের বাড়ি থেকে তোর সাথে বিয়ে দিত না। মাসিমার সংগ্রামকে আমি খুব শ্রদ্ধা করি আর আমার মা তো চিরকাল সুখের গদিতে কাটিয়েছেন তাই খুব সহজেই বলে দিলেন অত সাধারণ বাড়িতে আমি কিছুতেই  বিয়ে দেব নাআমার বাবা বলেছিলেন আমি কিন্তু ভদ্রমহিলার এই সংগ্রাম কে খুব শ্রদ্ধা করি। খুকু আমার দিক থেকে কোন আপত্তি নেই, মা বলেছিলেন ওখানে বিয়ে করলে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া কোন পথ থাকবে না।
অর্পণ- তারপর আমিও চাইনি আমার মাসিমা আমাদের বাড়ির লোকেদের কাছে অপমানিত হন। শেষকালে নিজের ভালবাসাকে বলি দিয়ে মায়ের সব কথা মেনে নিলাম। কিন্তু সত্যি বলছি এখন মানুষটাকে হয়তো তোর চেয়েও বেশি ভালবাসি। এমন আকাশের মতন উদারতা তোর নেই। মাসিমা অনেক কষ্ট করেছেন রে মাসিমা যাকে পছন্দ করেছেন তাকে বিয়ে করিস আর ভালবাসিস, কী রে কথা দে?
অর্পণ- চেষ্টা করব তবে কথা দিতে পারব না।
 
সমাপ্ত
 

No comments:

Post a Comment

অবকাশ—


Popular Top 10 (Last 7 days)