প্রাপ্তমনস্কদের পত্রিকা

মননশীল কলমকে উৎসাহ দিতে... পড়ুন, পড়ান, আপনার মূল্যবান মতামত দিন।

রং | প্রতিজ্ঞা

  বাতায়ন/ রং /সম্পাদকীয়/২য় বর্ষ/ ৩ ২তম সংখ্যা/ ২৯শে ফাল্গুন ,   ১৪৩১ রং | সম্পাদকীয়   প্রতিজ্ঞা "নির্ভীক একটি ফুলের মতো মেয়েকে চরম লাল...

Sunday, April 30, 2023

স্বপ্নপূরণ । সুদেষ্ণা ভট্টাচার্য্য চৌধুরী

প্রথম বর্ষ/দ্বিতীয় সংখ্যা/১লা মে, ২০২৩

গল্পাণু

সুদেষ্ণা ভট্টাচার্য্য চৌধুরী

স্বপ্নপূরণ


রোজ রাতে স্ত্রীর পাশ থেকে চুপিচুপি উঠে নিঃশব্দে পাশের ঘরে গিয়ে দরজা ভেজিয়ে মেয়ের পড়ার টেবিলে বসতেন তপনবাবু। তাঁর নিজের লেখা গল্পটা শেষ করবেন বলে। দেবেন অনিমেষকে। অনিমেষ তপনবাবুর স্কুলের বন্ধু। পেশায় শিক্ষক। লেখালেখিও করেন। এক সঙ্গে দুজনে স্কুলে পড়লেও‌ উচ্চ-মাধ্যমিক পাশ করার পর আর পড়া হয়নি তপনবাবুর। অবস্থার চাপে বাবার সাথে তাদের মুদির দোকানের ব্যবসায় বসতে হয়েছিল।

তারপর অনেকগুলো বছর কেটে গেলেও লেখাপড়ার প্রতি ভালবাসাটা যায়নি তপনবাবুর। মনে মনে ছিল একটা গল্প লেখার স্বপ্ন। একদিন স্ত্রী আর মেয়েকে বলেই ফেললেন। স্ত্রী হেসেই গড়িয়ে পড়লেন। মেয়েও মুচকি হেসে পড়তে চলে গেল। সেদিনই ঠিক করে ফেলেছিলেন‌ তপনবাবু। তাঁর লেখা তিনি ঠিক একদিন ছাপাবেন।

বন্ধু অনিমেষকেই একদিন সব বললেন। সব শুনে, ভেবে অনিমেষ বলেছিলেন— “ঠিক আছে। আমার চেনা একজন নতুন পত্রিকা বের করছে। নতুন লেখা চাইছিল। তুই লেখ, আমি ছাপিয়ে দেব।” বন্ধু লেখাপড়ায় ভালই ছিল তা জানতেন অনিমেষ। তারপর থেকে রোজই সবার চোখের আড়ালে লুকিয়ে একটু একটু করে গল্পটা লিখে শেষে একদিন সেটা ছাপতে দিয়ে দিলেন বন্ধুকে। ভাবলেন স্ত্রী আর মেয়েকে একেবারে অবাক করে দেবেন, তাছাড়া নিজেরও বহু কালের শখ।

লেখা দেবার কয়েকদিন পর অনিমেষ জানালেন লেখা পছন্দ হয়েছে সম্পাদকের। আনন্দে সেদিন কী যে করবেন‌ কিছুই বুঝতে পারলেন না তপনবাবু। প্রায় এক মাস অধীর আগ্রহে অপেক্ষার পর অনিমেষ একদিন নিজেই বাড়িতে এসে দিলেন সেই পত্রিকা। ছাপার অক্ষরে নিজের নাম ও গল্প দেখে কেঁদেই ফেললেন মফস্‌সলের এক সাধারণ দোকানদার তপনবাবু। বউ আর মেয়েকে ডেকে দেখালেন। বার বার বন্ধুকে ধন্যবাদও দিলেন। অবশেষে এতদিনে স্বপ্ন পূরণ হল মানুষটার।

সমাপ্ত

লেখিকার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থঃ


1 comment:

  1. আর একটু অণুগল্পের মতো হোক।

    ReplyDelete

মোহিনীমায়া


Popular Top 10 (Last 7 days)