দর্পণের মাহাত্ম্য
মায়াকাজল ছাড়া দর্পণ যা দেখে তা-ই দেখায়। দর্পণের কাজ কি শুধু সে-টুকুই? হ্যাঁ, আপাতভাবে তা-ই। কিন্তু, একটু খুঁটিয়ে দেখলেই, চোখের কোণে বলিরেখা, মাথায় কোথাও রূপোলি ঝিলিক, আবার চাপা দেওয়ার অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও ক্লান্তির প্রচ্ছন্ন ছাপ, প্রসাধন-বেশভূষার বাইরে আরও অনেক কিছু চোখে পড়ে।
অভিনয়-শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষ মাত্রেই জানেন, চোখ-মুখ-ঠোঁট-ভ্রূ ইত্যাদির বিভিন্ন রেখা কাজে লাগিয়ে ভিন্ন ভিন্ন আবেগ, অনুভূতির সঠিক প্রয়োগ কৌশল। তাছাড়াও পর্যবেক্ষণ থাকলে, স্থিরচিত্রের মধ্যেও অনেক কিছুই খুঁজে পাওয়া যেতেই পারে। পাওয়া যেতেই পারে যত্ন করে সৃষ্টি করা লালিত্যের অন্তরালে বঙ্কিম-ক্রুর-কুটিল কোন চিত্রের আভাস। এমনকি ভণ্ডতপস্বী খুঁজে পাওয়াও বিচিত্র নয়।
মনের আয়নার কথা নাহয় ছেড়েই দিলাম। যদিও বস্তুগত দর্পণের বাইরে প্রকৃত দর্পণ তো মানুষের মনে।
আসলে মানুষ যা-কিছু দেখতে চায়, শুধু তা-ই দেখে। মন বাধ্য মগজের দাসত্ব পালন করতে। আবার মগজ চেতনার অধীন। চেতনা-মগজের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মন স্বাধীন, নির্ভীক, বিবেকবান হতেই পারত। দুর্ভাগ্য মানবসভ্যতার। নইলে প্রেরণা পাল ওই কথা বলে কেন! এ’ দুর্ভাগ্য শুধু আজকের নয়, হয়তো-বা চিরকালীন। নইলে রবীন্দ্রনাথ ‘বিম্ববতী’ লিখবেন কেন?
যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন যুগপুরুষগণ চিত্ত জাগানোর চেষ্টা করলেও সে-সব সোনার পাথরবাটির মতোই মনে হয়। তবু প্রেরণার মতো মেয়েরাই যুবসমাজের প্রতিনিধিস্বরূপ নতুন সূর্যোদয়ের ইঙ্গিত দেয়। সে-ই ইঙ্গিতে মুক্ত দৃষ্টির আশা রাখা অন্যায় তো নয়।
মুক্ত দৃষ্টির আশা রাখি। -জয়িতা
ReplyDeleteধন্যবাদ জয়িতা। ভাল থেক।
Delete