সবার বাড়িতে তখন ল্যান্ড ফোন ছিল না। চিঠির উপর ভরসা করেই জীবনের আবেগ, উচ্ছ্বাস, অভিমান সঙ্গে নিয়ে আমাদের কৈশোর থেকে যৌবনে পদার্পণ।
মনে আছে আমি তখন বিখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব শ্রী বিভাস চক্রবর্তীর সঙ্গে বাংলাদেশ গিয়েছিলাম। তাঁর পরিচালিত ময়মনসিংহ গীতিকা অবলম্বনে "মাধব মালঞ্চী কইন্যা" নাটকে আমরা শ্রী হেমাঙ্গ বিশ্বাসের কয়েকজন ছাত্রছাত্রী লোকগান পরিবেশন করতাম। হঠাৎ বাবার চিঠি— আমার একটি সরকারি অফিসে চাকরির জয়েনিং লেটার এসেছে। এই চিঠি পেয়ে শ্রদ্ধেয় বিভাসদা আনন্দে সবাইকে মিষ্টিমুখ করালেন। এই ঘটনার আনন্দের রেশ আজও মনের মধ্যে বহমান।
চিঠির প্রভাব যে কতখানি তা আমরা যারা নব্বই দশকের আগে একটু একটু করে বড় হয়েছি তারাই উপলব্ধি করতে পারি। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এই অমূল্য মাধ্যমের রসাস্বাদন থেকে বঞ্চিত।
একটা হারিয়ে যাওয়া মেয়েবেলা আজও খুঁজে বেড়াই পথের অলিগলিতে। আজও মনে হয় সাইকেলের ঘন্টা বাজিয়ে খাঁকি পোশাক পরে কাঁধে একটি ঝোলা নিয়ে পিয়োন আসুক আমাদের বাড়ি, ফ্ল্যাটে নয়। ঝোলার ভিতর থেকে সব চিঠি বার করে আমার নাম খোদাই করা চিঠিটা আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিক।
মনের কথা শোন রে
আইজ দুপুরের ডাকে পাইলাম
চিঠি একখান রে।
খুশির সীমা নাই,
সুজন বন্ধুর আসার খবর
চিঠির মধ্যে পাই,
শোন রে সখী শোন রে
মনের কথা শোন রে
আইজ দুপুরের ডাকে পাইলাম
চিঠি একখান রে।
পাবদা মাছের ঝাল,
পিঠা রান্ধুম আর রান্ধুম
সোনা মুগের ডাল,
শোন রে সখী শোন রে
মনের কথা শোন রে
আইজ দুপুরের ডাকে পাইলাম
চিঠি একখান রে।
চিঠি সম্পর্কে লেখাটি আর তার সঙ্গে গানটিও ভালো লাগল। সুর দিয়ে গাওয়া হলে গানটি সবার পছন্দের হবে বলে মনে হয়।
ReplyDelete