বাতায়ন/গল্পাণু/১ম বর্ষ/১৮তম সংখ্যা/২২শে ভাদ্র, ১৪৩০
গল্পাণু
চন্দ্রাবলী বন্দ্যোপাধ্যায়
স্ত্রী
কলকাতার রাস্তা তখন হাজার লাল আলোর ভিড়। সন্ধ্যা অতিক্রম
করেছে অনেক আগেই। গাড়ি যত সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে, গাড়ির পিছনের মানুষগুলো
একটু একটু করে ছোট হয়ে আসছে। মানে দূরত্ব বাড়ছে। ঘনঘন ট্রাফিক। থমকে যাচ্ছে
তিলোত্তমা, থমকে যাচ্ছে গাড়ির ব্যাকলাইট।
সামনে বসা ভদ্রমহিলার লাল টিপের রং অদৃশ্য সেই লাল আলোর বিচ্ছুরণে।
এক লহমায় বুক কেঁপে উঠল। প্রকৃতি কি কোনো-না-কোনো ভাবে আমাদেরকে বুঝিয়ে দেয়
পরিণাম? কাকে যেন ফোন করে বলছে তার স্বামীর অসুস্থতার কথা। তার চোখে চুনির মতো
জ্বলজ্বল করছে জলের ফোঁটা। কী জানি তিনি বাঁচবেন কিনা।
গাড়ি চলতে শুরু করল, আমি ফ্ল্যাশলাইট ফেললাম ভদ্রমহিলার মুখে। একই রকম আছে তার লাল টিপ। এক চিলতে বিষণ্ণ হাসি উপহার দিল আমাকে। কিন্তু আমার চোখ খুঁজে বেড়াচ্ছে এয়োতির চিহ্ন। যেন পাহারা দিয়ে রেখেছি মনের গভীরে দাগ ফেলে যাওয়া সিঁদুরের দাগ, গভীর নিশ্চিন্ত আশ্রয়। মুখোমুখি দু’জন স্ত্রী…
গাড়ির ভিতর একটানা গান বেজে চলেছে- ‘দো ঘুট মুঝে ভি পিলা দে শরাবী…’
সমাপ্ত
লুকানো স্বীকৃতি।
ReplyDelete