বাতায়ন/গদ্য/১ম
বর্ষ/২৪তম সংখ্যা/২৪শে কার্তিক, ১৪৩০
গদ্য
শম্পা সামন্ত
ঘাটের কিনারে
মাইক হাতে কিছু গান
গেয়ে নেবার পর আমি পুরোনো বাড়ির ভিতর শ্বাপদ ও সাপের গণ্ডির ভিতর ঢুকে গেলাম। বহুদিন
ছাতিম গাছটার নীচে মন কেমন করা গন্ধের ভিতর মায়ের যাপিত মমি। আর আমাদের আঙুলে
আঙুল
ঠেকে গেলে যে হৃদয় চমকে উঠেছিল তারও বাড়বাড়ন্ত উথলানো দুধের মতো ফেননিভ শয্যা যেন
এই প্রাগৈতিহাসিক জুরাসিক বিছানায়। ঘরময় চিতার আগুন আর শবের আশ্রয়। বিছানো ফুল ও
ধূপের গন্ধে সেই স্বর্গীয় আবাস সমৃদ্ধ রাগ ও ইপ্সা ছেড়ে ফিরে আসছিলাম বঙ্গোপসাগরের
উদ্দেশ্যে। তখন যেন পিছু ডাকলে তুমি। আর এই নিরাভরণ দেহ আর তৃষ্ণার্ত আত্মা ডুবিয়ে
দিলে আলোময় সোহাগের আতিশয্যে। আমি পাগুলো বিছিয়ে দিলাম মূর্তিনদীর উপর আর স্লেজ
গাড়ির গতিতে নির্ভার বয়ে গেলে পেতে দিলে সমভূমি। তোমার জাজিমের সুখ নিয়ে অগ্রসর
হতেই ঘটে গেল বিপর্যয়। এ যেন জড়িয়ে নেওয়া আত্মপ্রত্যয়। যেন বিশল্যকরণীর ওষধি গুণ।
ঝাপানতলায় নাগিনির বাঁশি বেজে উঠলে বুঝে নিলাম জগতের সমস্ত প্রেমিকা ও সর্পিণী
নারী শঙ্খিনী। এতকাল বুকে বয়ে বেড়ানো সুখ ও লালনগুলি সমাহত হয়ে গেলে নিবেদন করলাম
যাবতীয় সেবা ও আদর পদ্ধতি, বিপদ সীমা অতিক্রম করার আগেই সর্বনাশ ঘটে গেল ঘাটের
কিনারে এসে।
সমাপ্ত
No comments:
Post a Comment