বাতায়ন/ডিভোর্স/গল্পাণু/৩য় বর্ষ/১০ম সংখ্যা/৯ই শ্রাবণ, ১৪৩২
ডিভোর্স
| গল্পাণু
উজ্জ্বল
পায়রা
ভোকাট্টা
ঘুড়ি
"সূর্য তখন ডুবে গেছে, বাড়ি ফিরে এসে ঘরে দরজা দিল, আজ আর মায়ের গোঁঙানি কানে ঠিক পৌঁছোল না তার..."
ছেলেটি মেয়েটিকে কথা দিয়ে বসল,
-তোমার জন্য
আমি সব পারব সোনা, দেখে নিও, জানটুকুও দিয়ে দেব।
মেয়েটি বুকে একপৃথিবী বল পেল।
অসুস্থ মাকে নিয়ে চাকরি সামলে হাঁসফাঁস করে ওঠা মেয়েটি একজন সত্যিকার ভাল মানুষকে
সারাজীবনের সঙ্গী হিসেবে পাওয়ায় স্বপ্নবীজ বুনতে লাগল মনমাঠে। দিন ঘনিয়ে এল।
ছেলেটির আপন বলতে তিনকুলে কেউ ছিল না তাই তার আপন কর্মজগৎ ও দু-একটা নামমাত্র মায়ার বাঁধন কাটিয়ে এক অসহায় মাতা-কন্যার সহায় হতে চলে এল ভালবাসার অচ্ছেদ্য টানে আগামীর স্বপ্ন সার্থক করতে।
গল্পটা এমনই হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু হল না।
আবেগের স্রোতে গা ভাসিয়ে
উচ্চারণ করা কথাগুলো যখন বাস্তব ছুঁল,
তখন
মেয়েটি ছেলেটিকে বলল,
-তোমার তো
অনলাইন বিজনেস, আমাদের ওখানে থেকেই
করতে পারবে।
আষাঢ়ের মেঘ মুখে এঁকে ছেলেটি
উত্তর দিল,
-আমার এই
পরিচিত জগত ফেলে রেখে তোমাদের কাছে যাই কী করে বল? তুমি বরং মাকে নিয়ে আমাদের এখানেই চলে এসো।
মেয়েটি যেখানে চাকরি করে, ছেলেটির বাড়ি থেকে সেখানে যেতে প্রথমে অটো, তারপর ট্রেন, তারপরে বাস চেঞ্জ করে
এক কিলোমিটার হেঁটে প্রায় সাড়েতিনঘণ্টার পথ। এভাবে রোজ দশটা-চারটার ডিউটি
সেরে আবার একই ভাবে জার্নি করে বাসায় ফিরে রান্না, যাবতীয় সংসারের কাজ! আর মা-কেই বা দেখবে কে! মায়ের জন্যই তো
অফিসের কাছাকাছি ফ্ল্যাট নেওয়া।
-কী গো পারবে
না?
কোন উত্তর দিতে পারল না
মেয়েটি।
সূর্য তখন ডুবে গেছে, বাড়ি ফিরে এসে ঘরে দরজা দিল, আজ আর মায়ের গোঁঙানি কানে ঠিক পৌঁছোল না তার...
সমাপ্ত
কঠিন বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি
ReplyDelete