প্রাপ্তমনস্কদের পত্রিকা~ নাম নয় মানই বিবেচ্য

ঝড়ের রাতে | বিদ্যুৎ মিশ্র

বাতায়ন / ছড়া/৩য় বর্ষ/১ ৪ তম/মণিজিঞ্জির সান্যাল সংখ্যা/ ২৩শে শ্রাবণ , ১৪৩২ মণিজিঞ্জির সান্যাল সংখ্যা | ছড়া বিদ্যুৎ মিশ্র   ঝড়ের রাতে   ঝড়ের...

Saturday, August 9, 2025

বাঁচিয়ে রাখ রাধা-সম্ভ্রম | বনশ্রী রায় দাস

বাতায়ন/কবিতা/৩য় বর্ষ/১তম/মণিজিঞ্জির সান্যাল সংখ্যা/২৩শে শ্রাবণ, ১৪৩২
মণিজিঞ্জির সান্যাল সংখ্যা | কবিতা
বনশ্রী রায় দাস
 
বাঁচিয়ে রাখ রাধা-সম্ভ্রম
 
              

কালবৃত্ত চুরচুর করে গাছপালা মুড়িয়ে প্রলয়ঝড়
অচেনা হল নদী সে-কি ঘন ধোঁয়ায় উত্তাল

একটু খড়কুটোর জন্য নরনারীর আর্তচিৎকার
নিমেষেই গিলে খেতে চায় ঘরসংসার, খুনসুটি,
শিশুমুখের সুগন্ধি বাগান
হঠাৎ দূর থেকে শোনা গেল অগ্নিবীণার তারছেঁড়া সুর
ঝড় থেমে শান্ত হল নদী, জীবন ফিরে পাওয়ার
উল্লাসে হালকা সবুজ গুহামুখে ফেটে পড়ে হ্লাদিনী বীজ।
 
আমি দর্শন করলাম কমলেকামিনী
 
               
ঝিনুক খুলে বসলে সরে যায় উত্তপ্ত বালি,
ঢেউয়ের গর্ভগৃহে যমুনা বিলাসী,
পায়ে বাসুকি-নূপুর, কপালে চাঁদের কুমকুম,
আরও দুটি ডানা লাগিয়ে নেয়
কোমল যোনির প্রজাপতিঝাঁক।
পৃথিবী যাক জলতলে তবু হ্যামলিনের বাঁশি
বাজে কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামে—
পুড়ে যায় উড়ে যায় কামের কালবোশেখী,
মরা হৃদিশাখে কোকিলদূত ডোবায় ভাসায়।
নাগরদোলা ঘুরছে বনবন ভুলভুলাইয়া।
 
               
মেঘঠুংরি থেকে টুপ করে খসে পড়ে লাল বটফল
ঠোঁটে কামড় দিয়ে গজল শোনায় বন-টিয়া,
হোলিরংয়ে ভাব জমায় বসন্তমাঠ,
বক্সের ধমক, তোমার-আমার
ছাতি ফেটে বেরিয়ে আসুক একটুকরো হৃদযন্ত্র,
সিদ্বাই, লাল নীল চুলের নরনারী!
অন্ধকারের দিকে ফণা তোলে উদ্ধত মেঢ্ররূপ
প্রকৃতিস্তনে ঠোক্কর দেয় মেছোবক।
 
ঈশ্বর বললেন, নিলাজ মানুষ, গোপন দরজা
কুটিকুটি করেছে ঘুণপোকা।
 
                
তুমিও কি ওদের নাটুকে তিলকে মজে রইলে
হে গিরিধারী!
উদ্দাম উৎসবের শেষে যমুনার পথে রাধাকৃষ্ণ
চলেছেন ম্যাজিকভ্যানে,
সঙ্গে উদ্দাম নৃত্য—
চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়েছে নগ্ন প্রজাপতির
                                            রক্তাক্ত ডানা।
ঘাটে পৌঁছে দেখলে রাধা নেই,
মেলা শেষে রঙিন জলে টইটম্বুর ভক্তগণের খেলা
স্তব্ধ চরাচর, থেমে গেছে বাঁশিসু
কৃষ্ণগঞ্জের বধ্যভূমিতে জমাট কালোরক্ত,
রমণের নাভিগন্ধ, পড়ে আছে গরল, শতশত
রাধা শরীরের খণ্ড, হাহাকার—
 
                
জিশুখৃষ্ট, ক্রুশকাঠে বিদ্ধ হয়ে আছেন সহস্র বছর,
অগ্নিকুণ্ডে ঝাঁপ দেওয়ার সময় সীতার জীবন বিপন্ন,
কাঠের পুতুল তবু, দাঁড়িয়ে রইলেন প্রজা বৎসল রাজা রামচন্দ্র।
পিতার আদেশে মাকে হত্যা করলেন
ভগবান পরশুরাম! আরও কত ঝলসানো প্রত্ন,
শিব, সতীর শব কাঁধে তুলে ধ্বংস ডাকলেন,
হে সুদর্শন আর একবার ছড়িয়ে দাও,
এবার একান্ন নয় একশত একান্নপীঠে ছড়িয়ে দাও আমার রক্তমাংসের শরীর।
রাধা গো, কলশি রেখে হাতে তুলে নাও অসি।
ধূমাবতী, ছিন্নমস্তা হয়ে পায়ের নীচে শুইয়ে রাখ মহাকাল।
 
রাধা হে! এবার নিজেই বাঁচিয়ে রাখ রাধা-সম্ভ্রম।
 

No comments:

Post a Comment

অবকাশ—


Popular Top 10 (Last 7 days)