বাতায়ন/নৃপেন
চক্রবর্তী সংখ্যা/গল্পাণু/৩য় বর্ষ/২৮ সংখ্যা/১৪ই কার্ত্তিক, ১৪৩২
নৃপেন চক্রবর্তী
সংখ্যা |
গল্পাণু
সুশান্ত গঙ্গোপাধ্যায়
টিফিন
"‘যা পারেন দিন। রোজ তো আপনিই ঠিক করে দেন। আজ হঠাৎ জিজ্ঞেস করছেন? এতকাল আপনার ছেলেকে তো আপনিই খাইয়ে আসছেন। দেখছেন ক্লায়েন্টের সঙ্গে দুটো কথা বলছি। তা সহ্য হচ্ছে না।’"
দাদা, মেয়েরা নিজের বাড়িতে যা শিখে আসে তাই শ্বশুরবাড়িতে ফলাও
করে ব্যবহার করে। বাপের বাড়িতে গিয়ে মাকে বলে, তোমার জামাই সকালে উঠে চা করে, ফল কাটে। আমাকে ঘুম থেকে তোলে না। জানে, সকালসকাল ঘুম ভেঙে গেলে সারাদিন আমার মেজাজ চটকে থাকে। তার
মা এসব কথার কোনো উত্তর দেয় না। মনে মনে গর্বিত হয়। কেমন সুন্দর শিক্ষা দিয়েছে। কোথায়
বলবে, কেন তুইও তো সকালে উঠে চায়ের
জলটা চাপিয়ে দিতে পারিস। কী এমন কাজ! বরঞ বলে, জামাই অফিস যাওয়ার
সময় তুই কি টিফিনটা এগিয়ে দিস?
মেয়ে
চোখ উলটে বলবে, পাগল হয়েছ? আমি ঘুম থেকে উঠি সকাল সাড়ে এগারোটার সময়। আর তোমার জামাই
খেয়েদেয়ে টিফিন নিয়ে সকাল নটার মধ্যে বেরিয়ে যায়। মেয়ের মা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করবে, তবে জামাইকে খাবার,
টিফিন এসব
কে করে দেয়? মেয়ে নেল কাটার দিয়ে নখ স্মুদ
করতে করতে বলবে, তোমার জামাইয়ের মা। তার
আর কী কাজ। সারাদিন তো ঘরেই বসে আছে। দেখুন দাদা, এই হচ্ছে আজকের দুনিয়া। কিছু বললে ৪৯৮এ কেস ঠুকে দেবে। আমি পুরুষদের হয়ে মামলা লড়ি। আর কত দেখব!
ভদ্রমহিলা নামী উকিল। এক অল্প
বয়সের ছেলের সঙ্গে তার অফিসে বসে কথা বলছিলেন। সকাল নটা। এক বিধবা ভদ্রমহিলা
ইতস্তত করে পর্দা সরিয়ে ঘরে ঢোকেন। ‘বৌমা, সঞ্জু জামাকাপড় পরে বসে আছে। ওকে খাবার দিয়ে দিয়েছি। টিফিনটা কি তুমি ঠিক করে
দেবে?’ ভদ্রমহিলা মুখ না তুলেই বলেন, ‘যা পারেন দিন।
রোজ তো আপনিই ঠিক করে দেন। আজ হঠাৎ জিজ্ঞেস করছেন? এতকাল আপনার ছেলেকে
তো আপনিই খাইয়ে আসছেন। দেখছেন ক্লায়েন্টের সঙ্গে দুটো কথা বলছি। তা সহ্য হচ্ছে না।’
সমাপ্ত

এই টা খুব চেনা গল্প । আগেও পড়েছি । সম্ভবত আপনার লেখাতেই । নিউরোন সেল এর অবক্ষয় হেতু স্মরণ শক্তি র ক্ষরণ হচ্ছে মনে হয় । ক্ষমা প্রার্থী ।
ReplyDelete