বাতায়ন/তৈমুর
খান সংখ্যা/কবিতা/৩য় বর্ষ/৩২তম
সংখ্যা/১১ই অগ্রহায়ণ,
১৪৩২
তৈমুর খান সংখ্যা | কবিতা
মোহন রায়হান
ছাইভস্মের
পাশে
কী এমন অপরাধে, তুমি এভাবে চলে গেলে—
আমাকে প্রমিথিউসের মতো একা করে,
বেঁধে দিলে অগ্নিশৃঙ্খলে, রক্তাক্ত পাহাড়ের চূড়ায়...
কেড়ে নিলে রোদের উষ্ণতা,
চাঁদের জোছনা মুছে দিলে,
ভালবাসার সব ঋতু, সব বর্ণ,
ফুলের গন্ধ, হাসির উপকরণ—
সবটুকুই কেড়ে নিলে তুমি!
তুমি যেন ঝড়ো কালো মেঘ,
ঢেকে দিলে আমার সাদা জীবনের
নীলাভ আকাশ—
এখন কেবলই অন্ধকার…
এক নিরাশ্রয় শূন্যতা…
যেখানে চারদিকে বাজে
বিথোভেনের করুণ সিম্ফনি—
বেদনার সুরে, মৃত্যু প্রায় নিঃশব্দে।
নেই... নেই...
কোথাও কেউ নেই...
কিচ্ছু নেই...
শুধু অদৃশ্য নিঃসঙ্গতার রোমশ থাবা
চেপে ধরে আমার স্বপ্নের কন্ঠ—
আমি শ্বাস নিতে পারি না,
তবু তোমাকেই খুঁজি অন্ধকারের
ভেতরে।
আমার ছায়া হাঁটে, কথা বলে, হাসে—
কিন্তু সে আমি নই।
সে কেবল আমার ভূত,
এক মৃত জীবনের প্রতিধ্বনি।
আমি তো বহু আগেই মরে গেছি—
নীরবে, নিভৃতে,
তোমার চলে যাওয়ার পরদিনের
ভোরে
তোমার দমকা চলে যাওয়া
উড়িয়ে নিয়ে গেছে আমার সমস্ত অস্তিত্ব!
কেউ জানে না—
এই বিশাল ব্রহ্মাণ্ডে
একজন মানুষ কীভাবে
ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যায়!
তুমি ছিলে আমার শেষ শ্বাস,
আমার প্রাণবায়ু, আমার জীবনের ছন্দ।
প্রাণবায়ু ছাড়া কেউ বাঁচে না—
তাই আমি এখন কেবলই এক চলমান শবদেহ
যার ভিতরে নিঃসঙ্গতা পচে মরছে।
যেদিকে তাকাই—তুমি!
গাছের পাতার ফাঁকে তোমার মুখ,
তারাভরা আকাশে তোমার মায়া।
নদীর বুকে তোমার কণ্ঠস্বর—
কলকল, অথচ কাঁদে!
আমার নিঃশব্দ ঘরে তোমার
পদশব্দ বাজে,
আলো, বাতাস, দরজা, জানালা—
সব জায়গায় তুমি!
সহস্র মুখের ভিড়ে, কবিতা ও সংগীতের মেলায়,
সবাই তোমার রূপে মিলিয়ে যায়—
কিন্তু তুমি?
তুমি এক মুহূর্তও না ভেবে চলে
গেলে,
আমাকে ফেলে গেলে সর্বহারা
করে—
চিরদুঃখী, চিরনিঃস্ব, চিরনিঃসঙ্গ এক মানুষে।
তোমার চলে যাওয়া যেন নিভে
যাওয়া প্রাণপ্রদীপ—
এক পাষণ্ড জল্লাদ হাতে
আমার হৃদপিণ্ড ছিঁড়ে নেওয়ার মতো!
আর আমি—
বসে আছি
তৈমুর খান সংখ্যা | কবিতা
মোহন রায়হান
আমাকে প্রমিথিউসের মতো একা করে,
সবটুকুই কেড়ে নিলে তুমি!
এক নিরাশ্রয় শূন্যতা…
যেখানে চারদিকে বাজে
বিথোভেনের করুণ সিম্ফনি—
বেদনার সুরে, মৃত্যু প্রায় নিঃশব্দে।
কোথাও কেউ নেই...
কিচ্ছু নেই...
শুধু অদৃশ্য নিঃসঙ্গতার রোমশ থাবা
চেপে ধরে আমার স্বপ্নের কন্ঠ—
আমি শ্বাস নিতে পারি না,
কিন্তু সে আমি নই।
সে কেবল আমার ভূত,
আমি তো বহু আগেই মরে গেছি—
নীরবে, নিভৃতে,
তোমার দমকা চলে যাওয়া
উড়িয়ে নিয়ে গেছে আমার সমস্ত অস্তিত্ব!
এই বিশাল ব্রহ্মাণ্ডে
একজন মানুষ কীভাবে
ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যায়!
প্রাণবায়ু ছাড়া কেউ বাঁচে না—
তাই আমি এখন কেবলই এক চলমান শবদেহ
যার ভিতরে নিঃসঙ্গতা পচে মরছে।
গাছের পাতার ফাঁকে তোমার মুখ,
নদীর বুকে তোমার কণ্ঠস্বর—
কলকল, অথচ কাঁদে!
সব জায়গায় তুমি!
সহস্র মুখের ভিড়ে, কবিতা ও সংগীতের মেলায়,
কিন্তু তুমি?
চিরদুঃখী, চিরনিঃস্ব, চিরনিঃসঙ্গ এক মানুষে।
এক পাষণ্ড জল্লাদ হাতে
আমার হৃদপিণ্ড ছিঁড়ে নেওয়ার মতো!
আর আমি—
বসে আছি

No comments:
Post a Comment