স্মৃতির চুনিপান্না
এই পরিস্থিতিতে
অনায়াসে ঢুকে পড়ে ইমন। নতুন তবলাবাদক। লোভের আগুনে জ্বলতে জ্বলতে সুচ হয়ে ঢুকে
ফাল হয়ে বেরোয়। অতসীর চোখ পড়ে। ছেলেটা তো বেশ। ভাল সংগীত-বিচারী। শিক্ষিত
স্মার্ট। তবে তো… ঝোপ বুঝে কোপ মারে।
সঙ্গে সঙ্গে ইমন রাজি। দ্রুত সব ঠিকঠাক।
অরূপ দেখে আর ভাবে ঠিকই করেছে অতসী। ভঙ্গুর স্বামীকে কে কতদিন… এই তো গতকাল রাত দু’টোয় বাড়ি ফেরে অতসী। সঙ্গে ইমন। খুব জলি মুড। আমতা আমতা করে অরূপ জিজ্ঞেস করে— এত রাত।
শান্ত স্বরে অতসীর জবাব—
জলসায় এটা আবার রাত। সবে দু’টো। সারারাত থাকতে হতে পারত। ইমন তো বাড়ি ফিরতে
পারবে না। ওর গাড়িটা… তারপর নিচু স্বরে বলে— থাক যেতে হবে না, আজ রাত এখানেই… যা
তো হরি গেস্টরুমটা খুলে দে। রাতে ওখানে আমরা খেয়ে এসেছি।
ঝলমলে সাজগোজ, কলকলে কথাবার্তা এই লাস্যময়ী অতসীকে বড্ড অচেনা লাগে। আর ক্রমশ রাগের পারদ বৃদ্ধি পায়। এমনি করেই একদিন সহ্যের পারদ সীমা ছাড়ায়। আর আচমকা অতসী বিয়ের কার্ড এগিয়ে ধরে। অরূপ নির্লিপ্ত ভাবে কার্ডটা তুলে নেয়। বিয়েটা তো জানা। তবু প্রশ্ন জাগে। ডিভোর্সের আগে বিয়ে! ঘোর না কাটতেই এক ঝটকায় খুলে হতবাক— এ কী! এ যে সত্যি সত্যি বিয়ে। অতসীকে মুখে যা আসে তাই বলে গালমন্দ করে। ফলস্বরূপ অতসী পরেরদিনই ডিভোর্সের সই করিয়ে নেয়। প্রতিশোধ নিয়ে শান্ত হয়ে চোখ রাখে।
অরূপ কার্ডটা খুলে— পাত্র-পাত্রী আশা আর ইমন। অতসীর একমাত্র ছোট বোন।
আজ অনেক বছর পর এক মঞ্চে অতসীর সঙ্গে দেখা। এতদিন অতসীকে অনেক অনেক খুঁজেছে। কিন্তু পায়নি। একরোখা জেদি মেয়ে অতসী। আজ যখন আরেকটা গানের জন্য অনুরোধের ঝড় উঠল। তখন অরূপের এই কথাগুলো মনে হল।
সমাপ্ত
No comments:
Post a Comment