একান্ন হেঁশেল
বড়বৌ চম্পা, মৌমাকে দেখেই বোঝে আগেরবারগুলোর মতো সে যেন হাসিখুশি নয়, একটা সাজানো আলগা হাসি মুখে সাজিয়ে রেখেছে। আড়ালে ডেকে সবটা জেনে বলে, "তুই ওকে সবার সঙ্গে বসে খেতে দে। তারপর দেখ ম্যাজিক।"
সত্যিই যেন ম্যাজিক। যে ছেলে শাক-তরকারি পাতেও নেয় না। সে দিব্যি হাসিমুখে তার দাদা-দিদিদের সাথে বসে গল্পগুজব করতে করতে এটা কী, ওটা কী জিজ্ঞেস করে সব খেয়ে নিচ্ছে। এমনকি মাছের কাঁটাও নিজেই বেছে খাচ্ছে। এতটুকু বায়না করছে না। মৌমাকে অবাক হতে দেখে চম্পা বলল, "ছোট, ও আসলে জেদি নয় রে। ও যে ওর মতো কাউকে পায় না। তোরাও কাজেকর্মে ব্যস্ত থাকিস, তোদেরও সবসময় পায় না ঠিক মতো। একা থাকতে, একা খেতে ওর ইচ্ছে করে না। আজকালকার বাচ্চারা আসলে এভাবেই জেদি হয়ে যায়, একাকিত্বে ভুগে। এটা আসলে তাদের রাগের, দুঃখের বহিঃপ্রকাশ। যেটা আমরা বুঝি না। ওর যখনই ছুটি থাকবে, এবার থেকে তোদের সুবিধা মতো সবার বাড়ি নিয়ে যাবি, দেখবি ও কত ভাল থাকবে।"
পুজোর এই অভিজ্ঞতা থেকে, মৌমা রাতুলের সঙ্গে কথা বলে এটাই সিদ্ধান্ত নিল, মিতুলের ছুটির সময় অ্যাডজাস্ট করে তারাও কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে, তাকে আত্মীয়স্বজনদের বাড়ি বেড়াতে নিয়ে যাবে, যাতে করে ছোট্ট মিতুলের সার্বিক বিকাশ হয়, সে প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠে সম্পর্কের মূল্যায়নে।
সমাপ্ত
No comments:
Post a Comment