মার
আমি ভয়ের চোটে ওই গোরুগুলোর মতন পালাতে চেয়ে ব্যারিস্টার হয়েছি এবং গ্রামের বাড়ি ছেড়ে শহরে বিশাল একখানা বাড়ি হাঁকিয়ে ঝি-চাকর ছেলে-বউ নিয়ে বসবাস করি। আজ হঠাৎ আমার নাতি যখন কিছুতেই লেখাপড়া করতে রাজি নয় ওর মা মানে বউমা চিৎকারে বাড়ি মাথায় তুলছে তখন হালটা ধরতে আমি অগ্রসর হলাম। অপর পক্ষে মারার পর সেই মার সহ্য করার ক্ষমতা তার আছে কিনা, সে অন্য পথ অবলম্বন করবে কিনা, তা নিয়ে আমার স্ত্রী বেশ চিন্তিত কিন্তু আমি নাছোড়। আদরের নাতি গোপালকে সকালে নিজেই পড়াতে বসলাম আর শাস্তি দিয়ে একই কথা বলতে বললাম, কেঁদে কেঁদে বলে যেতেই লাগল তারপর ঘুম আসছে দেখে, এক ঘা কষিয়ে দিলাম! তারপর খাতা-পেন্সিল দিয়ে বললাম লিখে যাও, থামবে না থামলেই আবার— প্রথমবারেই গোপাল না দেখে লিখে ফেলল। যা দেখে বউমা অবাক হয়ে গেল!
হায়-রে পোড়া কপাল! এসব মিথ্যে স্বপ্ন! বাস্তবে এমনটা কিছুই হোলো না, যৎপরোনাস্তি সকালে উঠেই টিফিন খেয়ে কাঁধে ব্যাগ তুলে স্কুলের দিকে হাঁটা দেবে গোপাল, এমন সময় বললাম ব্যাগটাই ভারী। লেখাপড়াটা বড় হালকা হয়ে গেছে। গোপাল উত্তরে বলল, “তুমি আমার বয়সে কত কী পারতে? হাউ টু ডেল ইউ! স্পিক অ্যাবাউট মি!” বউমা নিরুত্তর, ছেলেও নিরুত্তর, গিন্নি বললে, “আজকালকার ছেলে, কেন ওদের সঙ্গে মুখ লাগাতে যাও--” আমি গুটিয়ে কাঁচুমাচু হয়ে লজ্জিত অপমানিত হয়ে নীরব হলাম। তারপর ঘরে চলে গেলাম! এইটাই কী শিক্ষা! এটাই কী সংস্কৃতি!
সমাপ্ত
No comments:
Post a Comment