প্রাপ্তমনস্কদের পত্রিকা~ নাম নয় মানই বিবেচ্য

বার ঘরে যাই | পারমিতা চ্যাটার্জি

বাতায়ন /ছোটগল্প /৩য় বর্ষ/১ ৪ তম/মণিজিঞ্জির সান্যাল সংখ্যা / ২৩শে শ্রাবণ , ১৪৩২ মণিজিঞ্জির সান্যাল সংখ্যা | ছোটগল্প পারমিতা চ্যাটার্জি বার ঘ...

Wednesday, July 23, 2025

শেষ থেকে শুরু [পর্ব— ৩১] | পারমিতা চ্যাটার্জি

বাতায়ন/ডিভোর্স/ধারাবাহিক উপন্যাস/৩য় বর্ষ/১০ম সংখ্যা/৯ই শ্রাবণ, ১৪৩২
ডিভোর্স | ধারাবাহিক উপন্যাস
পারমিতা চ্যাটার্জি
 
শেষ থেকে শুরু
[পর্ব— ৩১]

"আমরা তো আর রবীন্দ্রনাথ নইজীবনে যত কষ্ট পেয়েছেন তত বেশি সৃষ্টি করে গেছেন, "দুঃখ যদি না পাবে তোদুঃখ তোমার ঘুচবে কবে?”"


পূর্বানুবৃত্তি যে মাথা ভর্তি চুলের জন্য মনকলির এত গর্ব ছিল সেই  চুলও উঠে গেল, রাহুলের মনে হল লেখে থাক-না বাঁচার হলে এমনি বাঁচবে, বেচারা চাইছে ওর চুলগুল থাকুক কেন আর ধরে বেঁধে কেমো দেওয়া! এদিকে রাহুলের দাদা সুচরিতার প্রেগন্যান্সির খবরে বললেন, তারা খুব শিগগির আসছেন, ওনারা ওকে নিয়ে কলকাতায় আসবেন, একেবারে বাচ্চার অন্নপ্রাশন হয়ে গেলে তবে যাবি। তারপর…
 
সুচরিতা জিজ্ঞেস করল, এখানে ভাল আয়া মাসি পাওয়া যায় তো? আমার এক কলিগ বলল,

-ওর পুরুলিয়ার হসপিটালে ডেলিভারি হয়েছে, বাচ্চা হওয়ার পর বাচ্চার মাকে দেখার জন্য খুব ভাল আয়া পাওয়া যায় আর এরা খুব বিশ্বাসী হয়। ওর বাচ্চা তো এখনও ওই আয়া মাসির কাছে থাকে স্কুলে পৌঁছে দেওয়া নিয়ে আসা চান করানো খাওয়ানো সব করে, কোন অসুবিধা নাকি হয় না?


-হ্যাঁ আমিও তাই শুনছিলাম, এখানে এখন কোন অসুবিধা হবে না, তাছাড়া আমি তোমাকে এখন এসময় ছাড়তেও
চাই না, দাদাকে মেল করছি আজকেই, আসলে বাবা  মারা যাবার পর দাদা বাবার রোলটা নিয়েছে সাথে বউদিও। সব ভাইবোনের খবর করা, সবার সুবিধা-অসুবিধাতে গিয়ে দাঁড়ানো, আজকের দিনে এরকম  দাদা-বউদি পাওয়া খুব ভাগ্যের তাই না?
-একশো বার, দাদা-দিদিভাই এখনও সংসারটা ধরে রেখেছেন ।
রাহুল সজলকে মেল করল, প্রথমে জানতে চাইল মনকলির  শরীরের খবর কী? প্রবীর কি খুব কাতর হয়ে পড়েছে?
-হ্যাঁ, সে তো হয়েছে, বলছে আমার শেষ অবধি আমি লড়ব তারপর তো ভগবানের হাত, তবে আমি ডাক্তারের সাথে কথা বলেছিলাম আলাদা করে, ডাক্তার বললেন, days are numbered. কাজেই বুঝতে পারছিস, আমাদের ছোটবেলার বন্ধুদের যে বটগাছটা ছিল, কিছু ভাইবোন কিছু প্রেমিক-প্রেমিকার আড়ালে এ গাঢ় বন্ধুত্ব নিয়ে ডালপালা মেলে দাঁড়িয়ে থাকত, তার থেকে একটা ডাল খসে পড়বে এবার, আমার মনে হয় যত তাড়াতাড়ি হয় ভালই হয়, বড্ড কষ্ট পাচ্ছে মেয়েটা, সহ্য করতে পারছি না রে।
-বুঝতে পারছি, তুই সামনে থেকে  দেখছিস তো তাই এত ভেঙে পড়ছিস। কষ্ট পাস না রে, "মন রে আজ কহ রে, ভালো মন্দ যাহাই ঘটুক  সত্য রে লও সহজে"।
-হ্যাঁ সেটাই, জীবনের সব পথের দিশাই কবিগুরুর গান ও কবিতার মধ্যে এসে মিলেছে, তাই না রে?
-হ্যাঁ রে একদম তাই? তবে এটাও ঠিক মুখে বলা যতটা সহজ বাস্তবে তা নয়, আমরা তো আর রবীন্দ্রনাথ নই, জীবনে যত কষ্ট পেয়েছেন তত বেশি সৃষ্টি করে গেছেন, "দুঃখ যদি না পাবে তো, দুঃখ তোমার ঘুচবে কবে?” এ কথা ওই একটি মানুষই বলতে পারে
-হ্যাঁ এত বড় দর্শন আর কে দেবে? এই দর্শনের ওপর ভিত করে জীবন দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু জীবন তা বোঝে না
-হ্যাঁ সত্যি জীবন তা বোঝে না, বড় সুন্দর বললি কথাটা।
-তোর মনে কি কাউকে ধরল?
 
ক্রমশ…

No comments:

Post a Comment

অবকাশ—


Popular Top 10 (Last 7 days)