ধারাবাহিক উপন্যাস
পারমিতা
চ্যাটার্জি
শেষ
থেকে শুরু
[পর্ব—
৩২]
"লিসা আমার মন একেবারে ভেঙে দিয়েছে, তখন ভেবেছিলাম বিয়েই করব না, দাদা পেছনে লেগে লেগে ঠিক করল, ওরা তো সামনের মাসেই ঠিক করেছে, মানে এখন থেকে আর এক মাস বাদে কিন্তু আমি বিয়েটা আর একমাস পেছতে চাইছি।"
পূর্বানুবৃত্তি
শেষ অবধি আমি লড়ব তারপর তো ভগবানের হাত, তবে আমি
ডাক্তারের সাথে কথা বলেছিলাম আলাদা করে, ডাক্তার বললেন, days are numbered. তারপর…
-হ্যাঁ ধরেছে, কথাও হয় ফোনে, ভিডিও-কলে। সত্যি কথা বলতে কী জানিস বাঙালি ছেলের জন্য বাঙালি মেয়েই ভাল, সারাদিন পরিশ্রমের পর ওর সাথে কথা বলে একটা মানষিক তৃপ্তি পাই।
-উফফ আর পারি না, সুচরিতাও একদম এ ধরনের মেয়ে, ও তো সারাদিন কলেজ করে, তার ওপর
শরীরের এই অবস্থা কিন্তু কিছুতেই ওকে বসানো যায়না রে, আমি বললে
বলে, তুমি
বুঝবে না, মেয়েরা
ভালবাসলে সবকিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে ভালবাসার মানুষটির সেবা করতে
পারে, সেটাই
তাদের আনন্দ, প্রত্যেকটি
ভালবাসার মধ্যে পাওয়ার প্রবল আকাঙ্ক্ষা থাকে, আবার
ব্যাতিক্রম তো আছেই। কেউ অল্পেতেই খুশি কেউ অনেক পেয়েও ভাবে কিছুই পেলাম না।
-মানুষে মানুষে তফাৎ তো থাকেই, হ্যাঁ তুই কী যেন বলছিলিস, বিয়ে করছি কবে তাই না? সত্যি কথা বলছি তোরা সবাই সংসারী আমি
বাদে, লিসা
আমার মন একেবারে ভেঙে দিয়েছে, তখন ভেবেছিলাম বিয়েই করব না, দাদা পেছনে লেগে লেগে ঠিক করল, ওরা তো সামনের মাসেই ঠিক করেছে, মানে এখন
থেকে আর এক মাস বাদে কিন্তু আমি বিয়েটা আর একমাস পেছতে চাইছি।
-কেন রে?
-সত্যি কথা প্রবীর আমাকে এমন ভাবে আঁকড়ে রেখেছে আর মনকলিরও আয়ু একমাস আছে
কিনা জানি না,
অন্তত ডাক্তারের সাথে কথা বলে যা মনে হল, আর আমাকে প্রবীর এমন ভাবে আঁকড়ে ধরছে
যে ওদের ছেড়ে যেতে পারছি না।
-সজল তুই তো পাশে থেকে অনেক করলি, মাসিমার কথাটাও তো ভাবতে হবে ওঁর তো
বয়স হয়েছে, ছোট
ছেলেকে এতদিন পর দেখলেন,
এরপর বিয়েটা দেখে যাওয়ার সুযোগ দে।
-হ্যাঁ রে দীর্ঘদিন মানসিক অবসাদে মায়ের শরীরটাও ভেঙে পড়েছে, এখন কী আনন্দে আছেন মা ভাবতে পারবি না, বউদিও তো মাকে ভীষণ যত্ন করে, একেবারে স্বাধীন, ডানা মেলা পাখির মতন, মাকে দাদা-বউদি সবাই বলে দিয়েছে তোমার এখানে কোন নিয়ম নেই, তোমার এখানে
যেমনভাবে ইচ্ছে তেমন ভাবে জীবনটা কাটাও, মাও খুব খুশি।
-তাহলে এবার বিয়ে করে শেষ খুশিটা দিয়ে দাও।
-তুই আসবি তো?
-হ্যাঁ নিশ্চয়ই যাব, সুচরিতার অবশ্য তখন কোলে একজন থাকবে।
-উফফ ভেরি গুড, তুই বাবা হতে যাচ্ছিস ভাবতেও পারছি না আর আমি এখনও বিয়ে
করতেও পারলাম না। নাঃ এবার বিয়েটা করে ফেলতেই হবে, প্রবীরকে বলছি তোমার দাদা বা ভাই কেউ
যদি থাকে ডেকে নাও ভাই,
আমাকে এবার দেশে যেতে হবে, মা বিয়ে ঠিক করেছেন, বুঝতেই তো পারছ বয়স হয়েছে, একেবারে দিন
ঠিক করে ফেলেছেন।
ক্রমশ…
No comments:
Post a Comment