প্রাপ্তমনস্কদের পত্রিকা~ নাম নয় মানই বিবেচ্য

বার ঘরে যাই | পারমিতা চ্যাটার্জি

বাতায়ন /ছোটগল্প /৩য় বর্ষ/১ ৪ তম/মণিজিঞ্জির সান্যাল সংখ্যা / ২৩শে শ্রাবণ , ১৪৩২ মণিজিঞ্জির সান্যাল সংখ্যা | ছোটগল্প পারমিতা চ্যাটার্জি বার ঘ...

Wednesday, July 23, 2025

বাবা, মা আর খুকি [২য় পর্ব] | অঞ্জনা মজুমদার

বাতায়ন/সাপ্তাহিক/ধারাবাহিক গল্প/৩য় বর্ষ/১১তম সংখ্যা/১৬ই শ্রাবণ, ১৪৩২
ধারাবাহিক গল্প
অঞ্জনা মজুমদার
 
বাবা, মা আর খুকি
[২য় পর্ব]

"বাবা-মা-মেয়ে কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারবেন না। তবে ডিভোর্স কী কাজে লাগবেস্বামী-স্ত্রী দুজনের মাঝে তৃতীয় কাউকে ঢুকতে দেবেন না।"


পূর্বানুবৃত্তি বাবা তপনজ্যোতি, মা সুমনা আর খুকি দীপান্বিতার সংসারে গ্রাম সূত্রে পরিচিতি স্বামীহারা সন্ধ্যাআন্টি বাড়িতে কাজ করে আশ্রয়ের সুবাদে এলেন। সেই থেকে অশান্তির সূত্রপাত। তারপর…
 
পরদিন সকালে খুকি দেখল বাবা-মা কেউ কারো সাথে কথা বলছেন না। দুজনেই না খেয়ে বেরিয়ে গেলেন। মা বিকেলে মীরামাসি যিনি ডিভোর্স ল-ইয়ার আর বাবা তার একজন বন্ধু বিভাসকাকুকে নিয়ে এলেন। চারজনে বসার ঘরে দরজা বন্ধ করে কী সব কথাবার্তা বললেন। বেরোনোর সময় বিভাসকাকু খুকির মাথার চুল ঘেঁটে দিয়ে বললেন,
-তোর বাবা-মার মাথা খারাপ হয়ে গেছে।
মীরামাসি একটু হেসে টা টা করে চলে গেলেন। পরদিন বাবা রাতে ফিফি করে আলোচনা করলেন,
-তাহলে ডিভোর্সের ব্যাপারটা ফাইনাল তো?
মা বললেন,
-আর তো কোনও উপায় দেখছি না।
বাবা বললেন,
-আমি কিন্তু খুকিকে ছাড়া থাকতে পারব না।
মা রেগে গেলেন,
-না কখনও না। খুকি আমার কাছেই থাকবে।
বাবা বললেন,
-সেটা কাল জজসাহেব ঠিক করবেন।
পরদিন বিকেলে মা-বাবা খুকিকে নিয়ে একটা জায়গায় গেলেন। সেখানে বিভাসকাকু আর মীরামাসি আগে থেকেই ছিলেন। টেবিলের ওপাশে একজন পাকাচুল ভদ্রলোক বসেছিলেন। বাবা-মা তাকে নমস্কার করলেন। তিনি বললেন,
-বসুন মিঃ অ্যান্ড মিসেস বসু।
বাবা-মা বসলে তিনি বললেন,
-ভাল করে ভেবে দেখেছেন তো আপনারা?
দুজনেই মাথা নাড়লেন।
-আপনারা কি দুজনেই আলাদা সেটল করবেন?
মা-বাবা দুজনে একসাথে বলে উঠলেন,
-না না তেমন কিছু নয়।
-তবে কী কারণ? আর আপনাদের মেয়ের কী হবে?
বাবা-মা দুজনেই বললেন,
-ও আমার কাছে থাকবে।
-ঠিক আছে আমি ওর সাথে একটু আলাদা কথা বলতে চাই। আপনারা সবাই একটু বাইরে যান।
সবাই বাইরে গেলে তিনি বললেন,
-তোমার নাম কী দিদিভাই? তোমার কি দাদু আছেন?
খুকি মাথা নেড়ে না বলতেই তিনি বললেন,
-আমাকে তোমার দাদুভাই ভাবতে পারো। আচ্ছা বলতো কেন তোমার মা-বাবা আলাদা থাকতে চাইছেন? আর  ডিভোর্স হলে তুমি কার কাছে থাকবে?
দুচোখ ভর্তি জল নিয়ে খুকি বললে,
-দাদুভাই, আমার মা-বাবা দুজনেই খুব ভাল। আমার দুজনকেই চাই। তুমি ওদের আলাদা হতে দিও না। একসাথে রেখে দাও প্লিজ।
দাদুভাই বললেন,
-তাই হবে। তুমি চোখ মুছে নাও। আর চিন্তা কোরো না। এই দাদুভাই তোমার বাবা-মাকে আলাদা হতে দেবে না।
তুমি একটু বাইরে বসো।
তারপর একে একে মা-বাবা দুজনের সাথেই কথা বললেন। তারপর দুজনের সাথে একসঙ্গে। তারপর খুকি আর দুই উকিলকে ভিতরে ডেকে বললেন,
-আপনারা বাবা-মা-মেয়ে কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারবেন না। তবে ডিভোর্স কী কাজে লাগবে? স্বামী-স্ত্রী দুজনের মাঝে তৃতীয় কাউকে ঢুকতে দেবেন না। আপনাদের বিবাদের কারণ যে তার একটা ব্যবস্থা মীরাদেবী করে দেবেন। আমি কথা বলে নিয়েছি। আপনারা মেয়েকে নিয়ে শান্তিতে থাকুন। একটা সম্পর্ক যা বহুদিন যত্নে গড়ে উঠেছে তা ভাঙা উচিত নয়। ভাল থাকুন। মেয়ের ভবিষ্যৎ সুস্থ ভাবে গড়ে তুলুন।
খুকি বলল,
-থ্যাঙ্ক ইউ দাদুভাই।
সন্ধ্যাআন্টি একটা বাচ্চাদের হোমে কাজ নিয়ে চলে গেছে। আবার বাবা-মা-দীপান্বিতার হ্যাপি ফ্যামিলি।
 
সমাপ্ত

No comments:

Post a Comment

অবকাশ—


Popular Top 10 (Last 7 days)