প্রাপ্তমনস্কদের পত্রিকা~ নাম নয় মানই বিবেচ্য

বার ঘরে যাই | পারমিতা চ্যাটার্জি

বাতায়ন /ছোটগল্প /৩য় বর্ষ/১ ৪ তম/মণিজিঞ্জির সান্যাল সংখ্যা / ২৩শে শ্রাবণ , ১৪৩২ মণিজিঞ্জির সান্যাল সংখ্যা | ছোটগল্প পারমিতা চ্যাটার্জি বার ঘ...

Saturday, July 26, 2025

লেখক অভিক দত্ত [১ম পর্ব] | পারমিতা চ্যাটার্জি

বাতায়ন/ডিভোর্স/ধারাবাহিক গল্প/৩য় বর্ষ/১০ম সংখ্যা/৯ই শ্রাবণ১৪৩২

ডিভোর্স ধারাবাহিক গল্প
পারমিতা চ্যাটার্জি
 
লেখক অভিক দত্ত
[১ম পর্ব]

"কবি হবলেখক হবউফ্ কত শখআর আমিও বোকার মতন তোমার তালে তাল দিয়ে রাস্তায় এসে দাঁড়ালাম। মা আমাকে ডেকে পাঠিয়েছেন আমি চলে যাবই আর কোনদিন ফিরে আসব না।"


সারাদিন কাজ করতে করতে হাঁপিয়ে ওঠে হেমন্তিকা। শান্তিনিকেতনের মেয়ে ভালবেসে বিয়ে করেছিল কবি অভিক দত্তকে দুজনেরই বাড়ির অমতে। ভেবেছিল দুজনের প্রবল ভালবাসার প্লাবন মিটিয়ে দেবে অর্থের দৈনতা। দুজনেই দু-তিনটে করে টিউশনির ওপর নির্ভর করে এক কামরার একটা ঘরের ভাড়া করে ভেসে চলবে সংসার সমুদ্রে।


তাই কী কখনও হয়! পেটে ভাত না থাকলে ভালবাসা জানলা দিয়ে পালিয়ে যায়। অভিক সারাদিন লেখার খাতা নিয়ে বসে থাকে আর কল্পনা করে এই প্রকাশক আর ফেরাবে না এই উপন্যাসটা তার দারুণ হয়েছে একেবারে জীবন্ত। নিজেদের বড় হওয়ার সমস্ত জীবনটা এমনকি হেমন্তিকার সাথে বিয়ে অবধি তুলে ধরেছে।
কিন্তু বাস্তবের মাটি অনেক শক্ত হেমন্তিকা রেগে যায়,
-টিউশনিটা পর্যন্ত ছেড়ে দিলেআমি একা এত কী করে সামলাব?
অভিক হেমন্তিকার মাথায় হাত দিয়ে বলে,
-আর একটু আমাকে সময় দাও আমি দ্বিতীয় উপন্যাসটায় হাত দিয়েছি। আর আমার কবিতার বইটা তো বেরিয়েছে তার থেকে তো কিছু কিছু তোমাকে দিই।
-হায় ভগবান! এখন পর্যন্ত পঞ্চাশ টাকা দিয়েছে কিনা সন্দেহ বলে কিছু দি। না এভাবে চলে নাএত কষ্ট করা, না খেয়ে থাকা আমার অভ্যাস নেই
-কিন্তু এই স্বপ্ন নিয়েই তো আমরা বেরিয়ে এসেছিলাম?
-স্বপ্ন আর বাস্তব যে এক নয় তা এখন বুঝতে পারছিতখন তবু দুটো টিউশন ছিল তোমার আর এখন তো শূন্য।
-কিন্তু তুমিই তো আমাকে এই স্বপ্ন দেখিয়েছিলে যেআমাকে কিছু করতে হবে না সব দায়িত্ব তোমারআর আমি শুধু লিখব
-আমি বললাম তুমি রাজি হয়ে গেলেআজ আমি তোমাকে ছেড়ে চলে গেলে থাকবেই বা কোথায়আর খাবেই বা কী?
-হেম লক্ষ্মীটি এভাবে আমাকে একলা ফেলে চলে যেও-না আমি বুঝতে পারিনি বা তুমি বুঝতে দাওনি তোমার এত কষ্ট হচ্ছে
-রাতের পর রাত মুড়ি খেয়ে কাটিয়েছ তাও তোমার মনে হয়নিঅবশ্য তোমার বাড়িতে তো তুমি মুড়ি খেয়েই কাটাতে আর বাপ ভাইদের গালাগালি
-তখন তো তুমি কত সহানুভূতি দেখাতে এখন কেন এমন করছতুমি বিশ্বাস কর কাল থেকেই আমি টিউশন আর চাকরির চেষ্টা করব
-করবেও তোমার মুখের কথাতা না হলে চারটে টিউশন একসাথে ছেড়ে দিতে না। ভাল স্টুডেন্ট ছিলে ভাল শিক্ষক ছিলে সব ছেড়ে কবি হবলেখক হবউফ্ কত শখআর আমিও বোকার মতন তোমার তালে তাল দিয়ে রাস্তায় এসে দাঁড়ালাম। মা আমাকে ডেকে পাঠিয়েছেন আমি চলে যাবই আর কোনদিন ফিরে আসব না।
চোখের জল ফেলতে ফেলতে হেমন্তিকা বেরিয়ে গেল।
 
ক্রমশ…

No comments:

Post a Comment

অবকাশ—


Popular Top 10 (Last 7 days)