বাতায়ন/নৃপেন
চক্রবর্তী সংখ্যা/সম্পাদকীয়/৩য় বর্ষ/২৮ সংখ্যা/১৪ই কার্ত্তিক, ১৪৩২
নৃপেন চক্রবর্তী সংখ্যা | সম্পাদকীয়
আবেগ ও বিবেক
"যা-কিছু তার তা তো ষোলোআনাই চাই। যা তার নয়, আদৌ কোনদিন ছিল না এমনকি হাজার চেষ্টা করলেও যা সে কোনদিন আয়ত্ত করতে পারবেন না, সেসবও তার চাই-ই চাই।"
সম্প্রতি দীপাবলি উৎসব পালিত হল। জনসাধারণ আলোর উৎসব
পালন করলেন। মহাসমারোহে, মানসিক উন্মাদনায় আতশবাজি পোড়ালেন। এসব দেখে মনে হতেই পারে,
তাদের মনের সকল অন্ধকার দূরীভূত হয়েছে। [না কি টেক্কার দুনিয়াতে এটা দেখানো গেল ‘হাম
কিসিসে কম নেহি’! কিছু পাগল পরিবেশ বিদ্যার নামে শব্দবাজি, ডেসিবেলের বেকার কথা বলতেই
পারেন।] সত্যি ধন্য বটে মানবজাতি!
প্রাথমিকভাবে আবেগের দ্বারা চালিত হয় মানুষ। সম্পূর্ণ
আবেগহীন মানুষ মেলে না। কিন্তু তারপরই বিবেক তাকে নিয়ন্ত্রণ করে। এখানেই মানুষের বৈশিষ্ট্য।
এখানেই মানুষের মানুষ হয়ে ওঠার সার্থকতা।
সব থেকে বড় সমস্যা মানুষের সীমাহীন লোভ, শেষপর্যন্ত
যা মানুষের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। যা-কিছু তার তা তো ষোলোআনাই চাই। যা তার নয়, আদৌ কোনদিন
ছিল না এমনকি হাজার চেষ্টা করলেও যা সে কোনদিন আয়ত্ত করতে পারবেন না, সেসবও তার চাই-ই
চাই।
রবীন্দ্রনাথের অনেককিছু ছিল কিন্তু সবকিছু ছিল না এবং
তা তিনি জানতেন এবং মানতেন। উইলিইয়াম শেকসপিয়রের অনেককিছু ছিল কিন্তু সবকিছু ছিল না
সেটা তিনিও মানতেন। মানুষ কেন যে এই সহজ সত্যটা মানতে পারেন না। মিথ্যাচার এবং অসৎ
উপায়ে সমস্ত ভোগ্যবস্তু করায়ত্ত করতে করতে অনায়াসে বিবেক জলাঞ্জলি দেন। অথচ বিবেকের
বশবর্তী হয়ে চলতে পারলেই সমাজ অনেক সুন্দর হতে পারত। এ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের
‘সামান্য ক্ষতি’ বারবার মনে পড়ে।
একঘেয়ে জীবনে চলার মাঝে মানুষ অবশ্যই উৎসব পালন করুন
কিন্তু বিবেক বিসর্জন দিয়ে নিশ্চয়ই নয়।
খুবই ভাল বিষয় এখানে উপস্থাপিত হয়েছে। মানুষ কে মানুষের মত মানুষ হতে হবে তাহলেই সুন্দর পৃথিবী গড়ে উঠবে।
ReplyDeleteযথার্থ বলেছেন। সুন্দর বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলতেই হবে নিজেদের স্বার্থে।
Delete