প্রাপ্তমনস্কদের পত্রিকা

মননশীল কলমকে উৎসাহ দিতে... পড়ুন, পড়ান, আপনার মূল্যবান মতামত দিন।

রং | প্রতিজ্ঞা

  বাতায়ন/ রং /সম্পাদকীয়/২য় বর্ষ/ ৩ ২তম সংখ্যা/ ২৯শে ফাল্গুন ,   ১৪৩১ রং | সম্পাদকীয়   প্রতিজ্ঞা "নির্ভীক একটি ফুলের মতো মেয়েকে চরম লাল...

Saturday, July 22, 2023

ওগো তুমি পঞ্চদশী | সীমা ব্যানার্জী-রায়

বাতায়ন/ধারাবাহিক গল্প/১ম বর্ষ/১৩তম সংখ্যা/৫ই শ্রাবণ, ১৪৩০

ধারাবাহিক গল্প
সীমা ব্যানার্জী-রায়

[১ম পর্ব]

ওগো তুমি পঞ্চদশী

তেরো-চোদ্দো বছরের মেয়ে যেন সব সময় একটা চিন্তার মধ্যে ডুবে থাকে। দেশে থাকতে এই মেয়েই কত প্রাণোচ্ছ্বল ছিল। যেন একটা সদ্য ফোটা কুঁড়ি। ফুল হয়ে ফুটবে বলে অপেক্ষা করছে। কিন্তু কই সেই বেড়ে ওঠা কুঁড়ি?

মা-বাবার সঙ্গে সদ্য কৈশোরে পা দেওয়া পলি এসেছে, আমেরিকার নেইবারহুড ওয়াশিংটন কাউণ্টির রিচার্ডসন শহরে। প্রথম এই প্রবাসের মাটিতে পা দিয়ে সেই মেয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল। মা-বাবা নিজেদের পায়ের মাটি দৃঢ় মজবুত করবে বলে ঝাঁপিয়ে পড়ল দৈনন্দিন কাজের সন্ধানে। মেয়ে ভর্তি হল মিডল স্কুলে।

দেশের অত্যধিক প্রতিযোগিতার ফসল না হতে পেরে বেশ ভালই লাগছিল সেই মেয়ের। কিন্তু...?

স্কুলের ছেলেমেয়েদের ফ্রি মিক্সিংটাতে নিজেকে কিছুতেই মানিয়ে নিতে পারছে না। পড়াশুনার গল্প ছেড়ে সব মেয়েরা খালি ছেলেদের গল্প করতে ভালবাসে, শুধু ভালবাসেই নয়, সঙ্গে থাকে দুর্দান্ত সব সেক্সের গল্প, যা দেশ থেকে সদ্য আসা একটা কিশোরী মেয়ের কাছে একেবারে বোমা ফাটার মতন। দু-একজন ছাড়া প্রায় সব মেয়েই ছেলেদের নিয়ে আলোচনাটাই বেশি গুরুত্ব দেয়। যেটা পলির মোটেই পছন্দ নয়। দেশ থেকে সদ্য আসার জন্য না অন্য কিছু তাকে বাধা দেয়? মা-বাবার সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করতেও যেন তার স্বভাবে বাধে। তাই বাড়িতে এসে পড়ার টেবিলে স্কুলের বান্ধবীদের কথোপকথন মনটাকে বড্ড বেশি নাড়া দেয়। সে তো কিছুই বোঝে না ওদের কথাবার্তা।

আজকে স্কুলের ক্লাসটাকে সে কিছুতেই ভুলতে পারছে না। শেষ ক্লাসে বিকেল ৩-টের সময় সুইমিং কস্টিউম পরে তার উপরে লম্বা লম্বা বিভিন্ন রঙের তোয়ালে জড়িয়ে বেরিয়ে এল একদল মেয়ে। করিডোরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল সুইমিং ক্লাস নেওয়া কিছু ছেলেও।

স্কুলের পিছনে ইনডোর সুইমিং পুলটা। মাঝারি পুল ৪০ ফুট চওড়া। ১৪০ ফুট লম্বা। ড্রাইভ দেওয়ার জন্য বোর্ড রয়েছে তিন থাক। চারপাশে এখানে-ওখানে ছিটানো আছে লাউঞ্জিং চেয়ার। পুলটা এমনভাবে তৈরি যে বিকেলের পড়ন্ত রোদ এসে স্কাইলাইট থেকে বিছিয়ে থাকে স্বচ্ছ নীল জলে।

পলির সুইমিং জানা থাকায় একটু সুবিধা ছিল। তাও একবার তাকে লেশন নিতে হয়েছে, এটাই স্কুলের নিয়ম। গায়ের ওপরের তোয়ালে খুলে মেয়েরা তাদের যোগ্যতা মতো ভাগে ভাগে পরপর তিনটে তাক থেকে সমারলস্ট ড্রাইভ দিয়ে নামল সুইমিং পুলে, তাদের মধ্যে পলিও মিশে গেল। ভুউউউশ করে ভেসে উঠল ৩০ ফুট দূরে। কেউ আবার লম্বালম্বি ওপারে চলে গেল ফ্রি স্টাইল সাঁতার কেটে। ফিরে এল ব্রেস্ট স্ট্রোক দিয়ে। তারপর আয়েস করে ব্যাক স্ট্রোক দিয়ে রওনা হল আবার ওপারের দিকে। সাঁই সাঁই সাঁতার কেটে কেউ বা পলির পাশ দিয়ে বেরিয়ে চলে গেল। আবার পাথরের দেওয়ালে হাত স্পর্শ করা মাত্র পাঁই করে ঘুরে দেওয়ালে পা বাধিয়ে পাকা সাঁতারুদের মতো ঝাঁপ দিল সামনের দিকে। আবার কেউ কেউ পলির গা ঘেঁষে দু’পাশে ঢেউ তুলে চলে এল আবার ওপারে। পলিও ওদের পিছন পিছন এপারে পৌঁছেই দু’ হাতে ভর দিয়ে উঠে পড়ল। এবার সব মেয়েদের সঙ্গে চলে গেল স্কুলের মেয়েদের বাথরুমের ঘরে।

না আর চিন্তা করতে পারছে না পলি... ওর তো ওদের এই নির্লজ্জভাবে সব জামাকাপড় খুলে ফেলাটাকে... নাঃ না না... সবার সামনে... হলেও বা সবাই মেয়ে... ও দেরি করছে দেখে সবাই ওকে নিয়ে কেমন ভাবে হাসাহাসি করছিল।

[ক্রমশ]

No comments:

Post a Comment

মোহিনীমায়া


Popular Top 10 (Last 7 days)