বাতায়ন/সম্পাদকীয়/সাপ্তাহিকী/১ম
বর্ষ/১৬তম সংখ্যা/১লা ভাদ্র, ১৪৩০
সম্পাদকীয়
মেঘনাদ
মেঘনাদ মেঘের আড়াল থেকে
যুদ্ধ করতেন, ফলে তিনি অপ্রতিরোধ্য ছিলেন। এবং যুদ্ধ ও প্রেম— কোনও নিয়মই মানে না এ
কথাও স্বতঃসিদ্ধ। সে প্রেম নারী বা পুরুষ যার দিক থেকে বা যার প্রতিই প্রবাহিত হোক
না কেন। মদনের বাণে বিদ্ধ হলে তার রেহাই মেলা ভার। তবে সৎসাহস থাকা জরুরি।
সমাজে প্রায় সব ক্ষেত্রেই
দেখা যায় সমগ্র মানবজাতি কোন-না-কোন মেঘের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখাতেই স্বচ্ছন্দ।
কেন এই মেঘের আড়াল! তবে কি এই আড়াল ছাড়া মানবের অস্তিত্ব বিপন্ন? হবেও-বা। সবে মাত্র
ভারতের স্বাধীনতা দিবস অতিক্রান্ত। এখনও পাড়ায় পাড়ায় ‘স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন কমিটি’
ও যন্ত্র-নিনাদে তার প্রচার বিদ্যমান। অথচ ভারতীয় নাগরিক মাত্রেই নিজের নিজের অন্তরে
জানেন সত্যিই তিনি কতটা স্বাধীন। সে তিনি যত বড় মাপের হোমরাচোমরা হন-না-কেন। পরাধীন
ভারতের বিপ্লবী আন্দোলনের সৈনিকদের কথা অবশ্য স্বতন্ত্র, তাঁরা নিজস্ব লক্ষ্য এবং আদর্শের
পথে অবিচল থেকে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন (বিশেষ বিশেষ দলপতি বাদে)।
কিন্তু সাহিত্যের অঙ্গন
যদি মুখোশধারীদের ঔজ্জ্বল্যে ভরে ওঠে তবে শঙ্কা জাগে বইকি। সকলেই জানেন শিল্প বা সাহিত্য
সমাজেরই দর্পণ। কিন্তু সেই দর্পণ যদি
কালিমালিপ্ত হয়, বিকৃত প্রতিফলন ভিন্ন গতি থাকে না। এখানে প্রশ্ন হল, সাহিত্যের অঙ্গনে
মেঘের প্রয়োজন কেন? পাশ কাটিয়ে যাওয়া নিরপেক্ষতা কি নিরাপদ দূরত্ব আদৌ বজায় রাখতে পারে? না কি তারা তাদের সততার অভাব
আছে জেনেই এমন করেন? আর সব ছেড়ে দিলেও নিদেন পক্ষে কবি-সাহিত্যিকরা নিজেদের অন্তরের দর্পণে দেখবেন না হৃদয়!
আপামর জনগণ কীসের উপরে ভরসা করবেন তবে!
তবুও মানুষ যে-কোন আড়ালই
বজায় রাখবে!
No comments:
Post a Comment