পরকীয়া
মানুষ মূলত পশু। পশুই
একদিন বিবর্তনের পথ ধরে প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তিত হয়ে হয়েছে মানুষ।
তাই মানুষের মধ্যে খুব স্বাভাবিক ভাবেই রয়ে গেছে পশুপ্রবৃত্তিগুলো। মানুষের যৌন
আচরণে তাই পাশবিকতা লক্ষ্য করা যায়। আদিম উলঙ্গ মানবগোষ্ঠী যখন গোষ্ঠীবদ্ধ ভাবে
বাস করত, তখনও তাদের যৌন সম্পর্কের কোনো বাছবিচার ছিল না। প্রাকৃতিক প্রয়োজনে এবং
জৈব তাড়নায় পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী নরনারীর মিলন ঘটত। এতে কোনো অন্যায় বা পাপ
বোধ ছিল না। এ নিয়ে নাক উঁচু করারও কিছু ছিল না।
শুভবোধ তাকে শেখাল
কীভাবে নিজেকে ও মানব সমাজকে সুরক্ষিত রাখা যায়। তাতেই সে বুঝল, নিজের অন্তর থেকে
পশুপ্রবৃত্তিগুলি মুছে ফেলতে পারলে, তবেই মানব সভ্যতা বিকশিত ও সুন্দরতর হয়ে সুখ,
শান্তি ও প্রগতির জীবন এনে দিতে পারে, স্নেহ, মায়ামমতা, প্রেম-ভালবাসা প্রভৃতি
মানবিক গুণাবলিতে ভরে ওঠে মন। জগৎ হয়ে উঠে মধুময়।
মানুষের সভ্যতা বিকশিত
হতে হতে আজ চরমে পৌঁছতে চলেছে। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণেই এবং পরিবেশ পরিস্থিতির
চাপে মানুষের মধ্যে পরকীয়া বা অবৈধ যৌন সম্পর্কের মনোবৃত্তি কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী।
সব থেকে শক্তিশালী রিপু কামকে, আজও পূর্ণ রূপে পরাহত করতে পারেনি মানুষ। কিন্তু
তার শিক্ষা, সংযম সাধনা, লোকভয়, সামাজিক মর্যাদা বোধ প্রভৃতির প্রভাবে মানুষ
নিজেকে অনেকটাই সংযত করতে পেরেছে।
বর্তমানের নারী
স্বাধীনতা, অবাধ মেলামেশা ও কর্মসূত্রে কাছাকাছি থাকার কারণে পরকীয়া প্রেম বা
অবৈধ যৌন সম্পর্কের সম্ভাবনা বাড়ছে। কর্মক্ষেত্রে কখনো-সখনো এক সাথে নারী পুরুষের
একত্রে রত্রিবাসের প্রয়োজনও হচ্ছে। ফলে অবৈধ যৌন সম্পর্কের সম্ভাবনা ভয়ংকর ভাবে
যাচ্ছে বেড়ে।
কিন্তু, যে ভাবে বা যে
কারণেই এ ঘটনা ঘটুক, এটি সমাজের পক্ষে বা ব্যক্তি জীবনেও বিশেষ ক্ষতিকর। তাই যে
কোনো ভাবেই হোক, এই ধরনের কাম প্রবৃত্তিকে সংযত করতে পারলে তবেই একটা সুস্থ সুন্দর
দেবোপম মানবিক সমাজ ও সভ্যতা গড়ে তোলা সম্ভব।
সমাপ্ত
No comments:
Post a Comment