বাতায়ন/গল্পাণু/১ম
বর্ষ/১২তম সংখ্যা/১৫ই আষাঢ়, ১৪৩০
গল্পাণু
সন্তোষ ভট্টাচার্য
শেষ মার
আজ আমার দিদির গল্প
শোনাব। গল্পের প্রয়োজনে আজ টাইমলাইন কাট করে দিয়ে লিখতে বসেছি। আমি আর দিদি
আমাদের বাবার বাড়িতেই থাকি। বর্তমানে বাবা-মা কেউ নেই। দিদি আইবিএমে সফটওয়্যার
ডিরেক্টর। খুব বড় পোস্ট। খুব নাম। আমার বর্তমানের প্রবলেম হল শনি-রবিবার হলেই
দিদির মুখে অপুদার কথা। তোর অপুদা এই করত সেই করত, এই খেতে ভালবাসত সেই খেতে
ভালবাসত চলতেই থাকবে। তা তাকে যদি তুই সব সময়ই মনে করবি তবে ছেড়ে এলি কেন?
দিদি আর অপুদার প্রেম
করেই বিয়ে হয়েছিল। অপুদাটা পাগলাটে। কবিতা লিখত, গানের গলা ছিল অসাধারণ। কাজকর্ম
কিস্যু করত না। দিদি সেই পাগলামিরই প্রেমে পড়েছিল। ক্ষেপাটে প্রেমিক আর কর্মে
অক্ষম বর যে এক জিনিস নয় দিদির বোধোদয় হল বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই। দিদি অফিস
যেত, অপুদা ঘরে থাকত, রান্নাবান্না, ঘরের কাজ করত। অপুদার রান্নার হাত ভাল ছিল না।
কবিতার নেশায় অর্ধেক দিন রান্না পুড়িয়ে ফেলত অপুদা। আর দিদির কাছে গঞ্জনার শেষ
থাকত না। মাথা নিচু করে শুনত অপুদা।
এভাবেই চলছিল, কিন্তু আর চলল না দিদির মিসক্যারেজ হবার পর। দিদি বিছানায় অসুস্থ আর অপুদা ভয়ে ভয়ে তার কবি সম্মেলনে আমন্ত্রণে যেতে পারবে কিনা জানতে এসেছে। বোমা বার্স্ট করল। চড় খেয়েছিল অপুদা। পরের দিন দিদি আমায় ডাকল নিজের যা কিছু আছে গুছিয়ে নিয়ে বাড়ি চলে এল। অপুদার মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছিল না। ছ’ মাসে ডিভোর্সটাও পাকা হয়ে গেল।
অপুদার খুব নাম হয়েছে এখন। অনেক পত্রপত্রিকায় ওর কবিতা পড়ি। টিভিতেও আসে মাঝে মাঝে। ফ্রেঞ্চকাট দাড়ি আর চশমাতে একেবারে মডার্ন কবিমানুষ। দিদির মন খারাপ। শেষ হাসিটা কিন্তু অপুদাই হেসেছে। অপুদার বিয়ের নেমন্তন্নের চিঠি এসেছে আজ। তাই দিদির মন খুব খারাপ।
সমাপ্ত
ভালো লাগলো ধন্যবাদ।
ReplyDelete